রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫ ।। ৩০ চৈত্র ১৪৩১ ।। ১৫ শাওয়াল ১৪৪৬


তালিবুল ইলমের আবশ্যকীয় পাঁচটি কাজ


নিউজ ডেস্ক

নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
সংগৃহীত

মাওলানা মকবুল হোসাইন

প্রত্যেক তালিবুল ইলমের সামষ্টিকভাবে নিচের পাঁচটি কাজ করা অত্যাবশ্যক:
১. تصحيح نيت তথা বিশুদ্ধ নিয়ত। একমাত্র আল্লাহকে রাজি-খুশি করার জন্য ইলম হাসিল করা। ইলম হাসিল করে সে অনুযায়ী আমল করে আল্লাহকে রাজি-খুশি করার একমাত্র নিয়তে ইলম অর্জন করা অত্যাবশ্যক।

২. يقين محكم তথা দৃঢ় আস্থা ও বিশ্বাস রাখা। ইলম আল্লাহর সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ ও বড় নেয়ামত এই বিশ্বাস মনের ভেতরে লালন করা। মহান আল্লাহ নবী-রাসুল ও তাঁর নির্বাচিত লোকদেরকে এই দৌলতই দিয়েছিলেন। এই ইলমের চেয়ে মহা মূল্যবান কিছু নেই। যদি থাকতো, তাহলে নবী-রাসুলদেরকে এই ইলমে অহি না দিয়ে তাই দিতেন। অথচ মহান আল্লাহ তাঁর সকল নবী-রাসুল ও নির্বাচিতজনকে কেবল এই ইলমে অহিই দিয়েছেন, তাই তো হাদীস শরীফে এসেছে -
فمن اخذه اخذ حظا وافرا
অর্থ, যে ইলম অর্জন করলো, সে পরিপূর্ণ অংশ পেলো। সে পরিপূর্ণ। তার কোনো অপূর্ণতা নেই, দিলে এই বোধ বিশ্বাস থিতু করা প্রত্যেক তালিবুল ইলমের জন্য অতি জরুরী।

৩. عزم قوى তথা প্রবল ইচ্ছা। দৃঢ় সংকল্প। ইলম হাসিলের জন্য নিছক নিয়ত ও ইচ্ছা যথেষ্ট নয়। তা হাসিলের জন্য প্রয়োজন একান্ত ইচ্ছা। পোক্ত সংকল্প। 
কাউকে মারার জন্য হন্যে হয়ে আমরা যেভাবে লাঠি নিয়ে ছুটি, এটাকে বলে দৃঢ় সংকল্প। ইলম হাসিলের জন্য আমাদের এমন দৃঢ় প্রত্যয় রাখতে হবে।

৪. مجاهدة قاهرة তথা অবর্ণনীয় চেষ্টা মুজাহা করা। ত্যাগ তিতিক্ষা স্বীকার করা। বাবা-মা, ভাই-বোন, নিজ এলাকা ও আরাম-আয়েশ ইত্যাদি ছেড়ে মাদরাসায় আসার দ্বারা মুজাহাদা তো হয়েছেই, এই মুজাহাদাকে ইলম হাসিলের জন্য আরও দীর্ঘ ও ব্যাপক করা। 
ইলম হাসিলের পথে খানাপিনা-থাকা ইত্যাদির সকল সখ ও আয়েশ ছেড়ে জ্ঞান সাধনায় সর্বোচ্চ কুরবানি স্বীকার করা। এ ক্ষেত্রে সাহাবায়ে কেরাম আমাদের নমুনা। হজরত আবু হুরায়রা রা ও ইবনে আব্বাস রা.সহ অসংখ্য সাহাবি তাবিয়েদের কুরবানি আমাদের একান্ত প্রেরণা। 
আমাদের আকাবির ও আসলাফের কুরবানি-গাঁথা সামনে রেখে ইলমের জন্য ত্যাগ তিতিক্ষা ও কুরবানী স্বীকার করা।

৫. اتباع سنت و اجتناب عن المعصية তথা সুন্নতের অনুসরণ করা ও গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা। দাড়ি টুপি কুর্তা গেঞ্জি লুঙ্গি পায়জামা পোশাক-আশাকে সুন্নতের অনুসরণ করা। লেবাসুস সালিহীন পরিধান করা। তাদের বেশভূষা অবলম্বন করা
একেকটা সুন্নত জানা ও সাথে সাথে তার ওপর আমল করা। সেইসাথে সব ধরনের গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা। 
ছোটদের জন্য পড়াশোনা না করা, উস্তাদ ও পিতা-মাতার কথা না শোনা গুনাহ, এই গুনাহ করা যাবে না।

আর বড়দের গুনাহ তো সবাই জানে, কোনো গুনাহ না করা। ইলম হলো নুর  আর গুনাহ হলো অন্ধকার। গুনাহগারকে আল্লাহ ইলমের নুর দেন না। তাই সব ধরনের গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা জরুরি। 
আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুন!

[জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম রামপুরা বনশ্রী মাদরাসার ১৪৪৬-৪৭ হিজরি শিক্ষাবর্ষের ইফতিতাহি দরসে দেওয়া বয়ানের সারকথা। অনুলিখন করেছেন মাওলানা মাসুম আব্দুল্লাহ]

এসএকে/


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ