সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫ ।। ১ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ১৬ শাওয়াল ১৪৪৬


‘ইহুদি’ নাম যেভাবে হলো

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আল্লাহতায়ালা ইহুদিদের মাঝে বহু নবী-রাসুল পাঠিয়েছেন। তাদেরকে আসমানি কিতাবও দিয়েছেন। তাই তাদের বলা হয় আহলে কিতাব। যারা হজরত মুসা (আ.)-এর পর প্রেরিত আল্লাহর দুজন নবী হজরত ঈসা (আ.) ও মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নবী হিসেবে স্বীকার করে না, তারা ‘ইহুদি’ নামে পরিচিত।

ইহুদি শব্দটি পবিত্র কোরআনে ৯ বার উল্লেখ করা হয়েছে। ইহুদিরা হজরত ইয়াকুব আলাইহিস সালামের বংশধর। ইহুদি শব্দটি এসেছে ইয়াহুদা থেকে, আর ইয়াহুদা ছিলেন হজরত ইয়াকুব (আ.)-এর জ্যেষ্ঠপুত্র ও হজরত ইউসুফ (আ.)-এর ভাই। মূলত শব্দটি ছিল ইয়াহুজা। জালকে দাল দিয়ে পরিবর্তন করে আরবি করা হয়েছে।

 

ইয়াহুদা শব্দের অর্থ তওবাকারী। গো বৎসপূজা থেকে তওবা করার কারণে তার নাম হয়েছে ইয়াহুজা। অর্থাৎ তওবাকারী।

কোরআনে কারিমের বিভিন্ন আয়াতে আল্লাহর নবী হজরত মুসা (সা.)-এর অনুসারীদের ইহুদি বলা হয়েছে। যেমন সুরা বাকারায় ইহুদি ও খ্রিস্টানদের পারস্পরিক দ্বন্দ্বের কথা উল্লেখ করে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর ইহুদিরা বলে, নাসারাদের কোনো ভিত্তি নেই আর নাসারারা বলে ইহুদিদের কোনো ভিত্তি নেই। অথচ তারা কিতাব পাঠ করে। এভাবেই, যারা কিছু জানে না, তারা তাদের কথার মতো কথা বলে। যে বিষয়ে তারা মতবিরোধ করছে, আল্লাহ কেয়ামতের দিন সে বিষয়ে তাদের মধ্যে ফয়সালা করবেন।’ -সুরা বাকারা: ১১৩

ইহুদিদের নাম ইহুদি কেন হলো এ ব্যাপারে হজরত আলী (রা.) ও হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)-এর বক্তব্য পাওয়া যায়। তাবরানি ও ইবনে আবি হাতেম এ দুজন সাহাবি থেকে বর্ণনা করেছেন, ইহুদিদের নাম ইহুদি হওয়ার কারণ হলো- তুর পাহাড়ে হজরত মুসা (আ.) আল্লাহর কাছে দোয়ায় বলেছিলেন, ‘ইন্না হুদনা ইলাইক’ অর্থাৎ আমরা তোমার কাছে প্রত্যাবর্তন করলাম বা তওবা করলাম।

পবিত্র কোরআনে একটি ঘটনার বিবরণে হজরত মুসা (আ.)-এর এ বক্তব্য উল্লিখিত হয়েছে। ঘটনাটি হলো, একবার হজরত মুসা (আ.) বনি ইসরাইলের সত্তর জনের একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে তুর পাহাড়ে যান। সেখানে ওই দলটি আল্লাহকে সরাসরি দেখার দাবি করলে আল্লাহর পক্ষ থেকে শাস্তি নেমে আসে এবং তারা সবাই মারা যায়।

কোরআন মাজিদে ঘটনাটির বর্ণনা এসেছে এভাবে, ‘আর মুসা নিজের জাতি থেকে সত্তর জন লোককে আমার নির্ধারিত স্থানের জন্য নির্বাচন করল। তারপর যখন ভূমিকম্প তাদেরকে পাকড়াও করলো তখন সে বললো, হে আমার রব! আপনি চাইলে আগেও এদের ধ্বংস করতে পারতেন এবং আমাকেও। আমাদের মধ্যে নির্বোধরা যা করেছে তার কারণে কি আমাদেরকে ধ্বংস করবেন? এটাতো আপনার পরীক্ষা ছাড়া কিছু না। এর মাধ্যমে যাকে চান আপনি পথভ্রষ্ট করেন এবং যাকে চান হেদায়েত দান করেন। আপনি আমাদের অভিভাবক। সুতরাং আমাদের ক্ষমা করে দিন এবং আপনি উত্তম ক্ষমাশীল। আর আমাদের জন্য এ দুনিয়াতে ও আখেরাতে কল্যাণ লিখে দিন। নিশ্চয়ই আমরা আপনার দিকে প্রত্যাবর্তন করেছি। তিনি বললেন, আমি যাকে চাই তাকে আমার আজাব দেই। আর আমার রহমত সব বস্তুকে পরিব্যাপ্ত করেছে। সুতরাং আমি তা লিখে দেব তাদের জন্য যারা তাকওয়া অবলম্বন করে এবং জাকাত প্রদান করে আর যারা আমার আয়াতসমূহের ওপর ইমান আনে।’ -সুরা আরাফ: ১৫৫-১৫৬

এনএইচ/


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ