রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ২৪ ভাদ্র ১৪৩১ ।। ৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :

কোটাবিরোধী আন্দোলন; কী ভাবছে ইসলামি ছাত্র সংগঠনগুলো

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
ইসলামি ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দ। ছবি: আওয়ার ইসলাম

সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা বাতিলের দাবিতে রাজপথে আন্দোলন করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীরা। দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সারাদেশে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি দিয়েছেন তারা। পাশাপাশি অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে ছাত্র ধর্মঘট করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

চলমান আন্দোলনে দেশের ইসলামি ছাত্র সংগঠনগুলোর অবস্থান কী? সে প্রসঙ্গে নেতৃবৃন্দের মতামত জানতে চেয়েছিলেন আওয়ার ইসলামের চিফ রিপোর্টার হাসান আল মাহমুদ ও সাব-এডিটর মুহাম্মদ নুর আলম।  

চলমান আন্দোলনে ইসলামি ছাত্র আন্দোলনের অবস্থান প্রসঙ্গে সংগঠনটির সভাপতি নুরুল বশর আজীজি বলেন, ‘কোটা বিরোধী আন্দোলনে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন সারা দেশে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে মাঠে আছে। নেতৃত্বে আছে। কৌশলগত কারণে আপাতত আমরা ( শুধু আমরা না, সম্ভবত অন্য কোন দলও দলীয় ব্যানারে নামেনি) দলীয় ব্যানারে না এলেও মাঠে সক্রিয় আছি।’

তার মতে, ‘আমরা মনে করি মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান রক্ষার্থে হলেও কোটা বাতিল করা উচিত। এবং মেধাকেই প্রাধান্য দেয়া উচিত। পাশাপাশি এই কোটা পদ্ধতির কারণে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি একধরনের বিদ্বেষ তৈরি হচ্ছে, যা কখনো কাম্য নয়। এটি পরিবর্তন না হলে দেশের মেধা পাচার হয়ে যাবে। মেধাবী তরুন প্রজন্ম দেশ ছেড়ে ভিন্ন দেশ মেরামতে আত্মনিয়োগ করবে। এবং তাতে করে এই দেশ মেধাহীন এক ভঙ্গুর রাষ্ট্রে পরিণত হবে।’

‘এই কোটা পদ্ধতি বাতিল করতে হবে অথবা সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে’ বলে মত ব্যক্ত করেন তিনি।

বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিসের সভাপতি মুহাম্মাদ কামাল উদ্দিন বলেন, ‘কোটা সামাজিক বৈষম্য তৈরি করে। বাংলাদেশে বিদ্যমান কোটাব্যবস্থা দেশের বৃহৎ জনশক্তির কর্মক্ষমতাকে অবমূল্যায়ন করে অপেক্ষাকৃত দুর্বলদের রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন সেক্টরে পদায়ন করেছে, যা এই দেশ ও জাতির অনেক সম্ভাবনাকে নষ্ট করেছে। ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকেও বর্তমান কোটাব্যবস্থা বৈষম্যমূলক। বাংলাদেশের সংবিধান‌ও সকল চাকরিতে দেশের সকল মানুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করতে বলে। শুধু অনগ্রসর প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সমাজের মূল ধারায় আনার লক্ষ্যে সামান্য কোটার অনুমোদন করে। তাই আমরা অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য সংবিধান অনুযায়ী কিছু কোটা রাখা ব্যতিত সকল কোটার বিলুপ্তি চাই।’

চলমান আন্দোলনে দলটির ভূমিকা প্রসঙ্গে তিনি জানান, ‘কোটা আন্দোলন সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন। তাই সাংগঠনিক ব্যানারে কোনো প্রোগ্রাম আমরা করিনি। তবে আমাদের জনশক্তিদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে সাধারণ ছাত্রদের সাথে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী বিভিন্ন জায়গায় আমাদের জনশক্তিবৃন্দ এই আন্দোলনে মাঠে ময়দানে সক্রিয় আছে।’

এদিকে ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশের সভাপতি নিজাম উদ্দিন আল আদনান বলেন, ‘কোটা বিরোধী আন্দোলনের সূচনালগ্ন থেকেই আমরা আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীদের পাশে ছিলাম এবং এখনো আছি। যতক্ষণ না এটির ব্যাপারে আদালতের পূর্বের রায় পুণ:বহাল করা হবে ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা আন্দোলনকারীদের সমর্থন আদায়ে পাশে থাকবো।’

তিনি বলেন, কোটাপ্রথা সম্পূর্ণ বেআইনি ও সংবিধান পরিপন্থী। সংবিধানের ২৯ আর্টিকেলে স্পষ্ট বলা আছে ‘প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ বা পদ-লাভের ক্ষেত্রে সকল নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতা থাকিবে।’ তাছাড়া কোটা কখনো মেধার বিকল্প হতে পারে না।

নিজাম উদ্দিন আল আদনানের মতে, ‘কোটা বিরোধী আন্দোলন কোন রাজনৈতিক ইস্যু নয়। স্বাধীনতা-উত্তর সমাজ থেকে বৈষম্য দূর করে সমতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এযাবৎ যারা আন্দোলন-সংগ্রাম করে এসেছিলেন এবং বর্তমানে যারা কোটা বিরোধী আন্দোলন করছেন; আমরা মনে করি এ দুয়ের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই।’

হাআমা/, কেএল/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ