বৃহস্পতিবার, ০৪ জুলাই ২০২৪ ।। ২০ আষাঢ় ১৪৩১ ।। ২৮ জিলহজ ১৪৪৫


হজরত মাদানী-হজরত থানভী আমাদের দুই চোখ : মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
ছবি: আওয়ার ইসলাম

মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ। দেশের শীর্ষ ফিকাহবিদ আলেম। কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের আমেলার সদস্য। বেফাকের সিলেবাস সংক্রান্ত সাব-কমিটিরও সদস্য। সম্প্রতি সিলেবাস নিয়ে বেফাকের একটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে অনলাইন-অফলাইনে ব্যাপক ঝড় উঠেছে। পক্ষে-বিপক্ষে নানা আলোচনা উঠেছে। নানাজন নানাভাবে অভিযোগ করে যাচ্ছেন। মনে রাখার মতো বিষয় হলো, বেফাক কওমি ছাত্র-শিক্ষকদের আস্থা ও ভালোবাসার ঠিকানা। স্বাধীনতার পর থেকে কওমি মাদরাসাগুলোর বিকাশ, মানোন্নয়ন, সুসংগঠিত করা ও মায়ের আদর যত্নে আগলে রাখা প্রতিষ্ঠানটির নাম ‘বেফাক।’ জাতীয় প্রতিষ্ঠান বেফাকের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা-ভালোবাসা অবিরত। সাম্প্রতিক সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করণ কেন, কী কারণে বেফাক সিলেবাস নিয়ে এই মুহূর্তে ঘোষণা দিলো? সেসব জানতে ও জানাতে আওয়ার ইসলাম মুখোমুখি হয় বেফাকের সিলেবাস সংক্রান্ত সাব-কমিটির অন্যতম সদস্য মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ-এর। সোমবার রাত সাড়ে ৯টায় কথা হয় বোর্ডটির এই সদস্যের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আওয়ার ইসলামের বার্তা সম্পাদক কাউসার লাবীব ও চিফ রিপোর্টার হাসান আল মাহমুদ


আওয়ার ইসলাম : সাম্প্রতিক সময়ে মিশকাতুল আসার, তারিখে মিল্লাত ও তাহরিকে দেওবন্দ গ্রন্থ নিয়ে বেফাক একটি ঘোষণা করেছে, কোনো কোনো কিতাব সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। শুনেছি আপনি এ সিলেবাস সাব-কমিটির সদস্য। বেফাকের সিলেবাস কমিটি বিষয়ে জানতে চাই।

মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ : বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাক গত ১৮ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে অনুষ্ঠিত মজলিসে খাস-এর সভায় মাওলানা সাজিদুর রহমানকে আহ্বায়ক করে ১৯ সদস্য বিশিষ্ট একটি নেসাব সাব-কমিটি গঠন করে। যে কমিটি বেফাকের নেসাব সংক্রান্ত সকল কাজ করে থাকে। কোরবানি ঈদের আগে নেসাব কমিটির একটি বৈঠক হয়। বৈঠকে সবার মতামতের ভিত্তিতে জরুরিভাবে মিশকাতুল আসার, তারিখে মিল্লাত ও তাহরিকে দেওবন্দ কিতাবের নেসাব সংক্ষিপ্ত ও সহজকরণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য ৫ সদস্যের একটি কমিটি করে তাদেরকে কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

৫ সদস্যের কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে ছিলেন আমাদের বেফাকের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক। সদস্য মুফতী মানসুরুল হক, কিন্তু তিনি এবার হজে যাওয়ায় ৫ সদস্যের কমিটির বৈঠকে থাকতে পারেননি। তবে তিনি মূল নেসাব কমিটর বৈঠকে ছিলেন। এছাড়াও সদস্য হিসেবে মুফতী জাফর আহমাদ (ঢালকানগর), মুফতী ফয়জুল্লাহ (লালবাগ) এবং আমি (মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ ) আছি। পাশাপাশি মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী যেহেতু বোর্ডের প্রধান পরিচালক তাই তিনিও এই কমিটির কাজের সঙ্গে ছিলেন।

আওয়ার ইসলাম : তাহরিকে দেওবন্দ গ্রন্থের যে অংশটুকু বাদ দেয়া হয়েছে, তা কোন্ দৃষ্টিকোণ থেকে বাদ দেয়া হয়েছে? তার কী ব্যাখ্যা?

মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ : সিলেবাসে দীর্ঘদিন ধরেই বেফাকের সদস্যসহ নানা শিক্ষাবিদ আলেমগণের বইটির ভাষাগত কঠোরতা ও সমস্যা নজরে পড়েছে। শিক্ষার্থীরা এ বই আয়ত্ব করতে পারে না। শিক্ষকরা পড়াতে গেলে পারছেন না। অনেক অভিযোগ। এছাড়া, বইয়ে এমন কিছু ইতিহাসও জুড়ে দেয়া হয়েছে, যেগুলো পরীক্ষার নেসাবের জন্য না পড়লেও চলবে। হ্যাঁ, এসব ইতিহাস ব্যক্তিগত বা উচ্চতর গবেষণার জন্য প্রয়োজন আছে। কিন্তু নেসাবে এমন কিছু থাকা উচিত না, প্রয়োজন না। অনেক সময় তাহরিকে দেওবন্দ কিতাবে শিক্ষার্থীরা ফেলও করে। নাম্বার কম পায়। এমন অভিযোগ নানা সময়ে শুনে এসেছি। কারণ ওই একটা- ‘বইটির ভাষাগত কঠোরতা।’ এছাড়াও ভাষা প্রয়োগ ও শব্দ চয়নের ব্যাপারে আপত্তি বা সমস্যা আছে।

মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ-এর আরেকটি সাক্ষাৎকার পড়ুন : অল্পকিছু প্রতিষ্ঠান ছাড়া বাকিগুলোতে তাখাচ্ছুছের উদ্দেশ্য ব্যাহত হচ্ছে’

মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ-এর আরেকটি সাক্ষাৎকার পড়ুন : ‘শাড়ী-লুঙ্গি নয়, গরীবের প্রয়োজন মেটে এমন জিনিস দিয়েই যাকাত দেওয়া উত্তম’

আমাদের মুরব্বিরাও অনেক দিন ধরেই ভাবছেন বইটির সম্পাদনা নিয়ে। বইটি সম্পাদনা, কাটছাঁট সংযোজন-বিয়োজন বিষয়ে মরহুম লেখকের ঘনিষ্ঠদের সঙ্গেও বোর্ডের কর্তৃপক্ষের আলোচনা হয়েছে। কিন্তু পরিবারের সদস্যরা সময় দিতে পারেননি। আপাতত, এ বছরের জন্য বইটির সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করে ঘোষণা করা হয়েছে। যাতে শিক্ষার্থীদের জন্য সহজ হয়। যে তথ্যগুলো শিক্ষার্থীদের এখন প্রয়োজন নাই, সেসব পড়ে তাদের জন্য যেন বিষয়টা কঠিন না হয়ে ওঠে।

আগামী বছর এ বইটি আরও সহজ করে উপস্থাপন করার উদ্যোগ রয়েছে কিংবা এর মতো বিকল্প কোনো বই। বইয়ের রচয়িতা (আল্লামা আবুল ফাতাহ মুহাম্মদ ইয়াহইয়া রহ.) বেফাকে অনেক অবদান রেখেছেন। আমরা লেখকের ঘনিষ্ঠজনদের কাছে আবারও আবেদন করব তারা যেন বইটি সহজবোদ্ধ ও প্রয়োজনীয় সম্পাদনা করে দেন। তারা এবারও করে দিতে অক্ষম হলে বিকল্প বই সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।

আওয়ার ইসলাম : একটা অভিযোগ উঠেছে- ‘যে অংশগুলো বাদ দেয়া হয়েছে তাতে ভারতবর্ষে জমিয়তের অবদান ও শাইখুল ইসলাম হজরত হুসাইন আহমদ মাদানী রহ. এর মহান কর্মযজ্ঞ ইত্যাদি বিষয়কে পরিকল্পিতভাবেই নাকি বাদ দেয়া হয়েছে।’ এ অভিযোগের সঙ্গে আপনি একমত কি না বা এর জবাবে আপনি কী বলবেন?

মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ : ইন্নালিল্লাহ! এ অভিযোগের সঙ্গে একমত হলে তো আমি মনে করি আমার ঈমানই থাকবে না। কারণ মাদানী-থানভী আমাদের দুই চোখ। এ দুই চোখ দিয়েই আমরা দেখি, চলি-ফিরি সবকিছু করি। আমরা এ দুই আকাবিরদের ইতিহাস জানি, তাঁরা একজন আরেকজনের সঙ্গে কত শ্রদ্ধাশীল ছিলেন। বেফাক কেন? কওমির যেকোনো আলেম কেউ যদি মহান দুই আকাবিরদের প্রতি ‍বিদ্বেষ রাখে, তাহলে আলেমের খাতা থেকেই তার  নাম কাটা যাবে। এ দুই বুজুর্গের প্রতি আমাদের ইলম, ইসলাহ ও সিয়াসতের অঙ্গন নানাভাবে ঋণী।

কিতাবের শুরু থেকে এমন কিছু বিষয় বাদ দেয়া হয়েছে যেগুলো শিক্ষার্থীদের জন্য উপযোগী না। উচ্চতর গবেষণার জন্য যারা পড়বে তাদের জন্য ঠিক থাকে। মেশকাত (ফজিলত) জামাতের শিক্ষার্থীদের জন্য না।

আওয়ার ইসলাম : ভারত উপমহাদেশের দুই বুজুর্গ শাইখুল ইসলাম হুসাইন আহমদ মাদানী ও হাকীমুল উম্মত মাওলানা আশরাফ আলী থানভী (থানভী-মাদানী সিলসিলা) বিতর্ককে উস্কে দেয়ার জন্যই নাকি সিলেবাস থেকে ওই অংশটুকু বাদ দেয়া হয়েছে? এ অভিযোগের ব্যাপারে আপনার মতামত কী?

মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ : তা কখনোই হতে পারে না। মাদানী-থানভী কারো প্রতি বিদ্বেষ রাখা ওলামায়ে দেওবন্দের আদর্শ হতে পারে না। এ দুই বুজুর্গের মাঝে পার্থক্য করার মানেই হল ওলামায়ে দেওবন্দকে জবাই করে দেয়া। এ দুই বুজুর্গের সিলসিলা আমাদের ওলামায়ে দেওবন্দের জন্যই আদর্শ। তাদের প্রতি কোনো ‍বিদ্বেষ রাখা, তাদের কোনো বিষয়কে কাটছাঁট করা কল্পনাও করতে পারি না।

আওয়ার ইসলাম : আমরা যতটুকু জানি, বেফাকের মত এত বড় শিক্ষাবোর্ড কোনোকিছু করার আগে বা পরে ভেবেচিন্তে করে। তো, বছরের মাঝ পথে এসে সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করতে হল কেন? এটা বছরের শুরুতে করবে বা বছর শেষ হলে করবে। মাঝ পথে করাতে শিক্ষার্থীরা তো আরও বিপাকে পড়বে। এখনতো তাহরিকে দেওবন্দসহ একাধিক কিতাবের শুরুর অংশ পড়া হয়ে গেছে। অথচ তা এখন বাদ দেওয়া হয়েছে। এ সংক্ষিপ্তকরণ এখন না করলেও পারতো কী না বেফাক?

মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ : বিভিন্ন কাজ থাকে বেফাকের। আল-আহাম, ফাল-আহাম (গুরুত্বের বিবেচনায় প্রাধান্য) হিসাবে যেটা বেশি গুরুত্ব সেটা আগে করা হয়ে থাকে। বছরের শুরু থেকেই আমরা হাইআতুল উলয়ার ছয় বোর্ডের নেসাবের সঙ্গে বেফাকের সমন্বয় করা নিয়ে কাজ করেছি। ওই সমস্ত কাজে আমরা কঠিন ব্যস্ত ছিলাম। তারপরও বেফাকের সিলেবাস সংক্ষিপ্তকরণ বিষয়ে আমরা কাজ শুরু করেছি, কুরবানির আগেই তা শেষ হয়ে যেত। কিন্তু নানা কারণে তা হয়ে উঠেনি। আবার কেউ হজে চলে গেছেন। তাই হজের আগের কাজটা হজ শেষে অফিস খোলার পর সম্পন্ন করা গেছে। কাজ শেষ হওয়া মাত্রই আমরা এখন ঘোষণা করলাম, কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে মেইন পড়া এখনো সামনে রয়ে গেছে। কিতাবটার সিলেবাস এখন সহজ করে দেয়া হয়েছে, এতে শিক্ষার্থীদের উপকার হবে, বিপাকে পড়তে হবে না বলে বিশ্বাস রাখি।  

আওয়ার ইসলাম : সোশ্যাল মিডিয়াতে তাহরিকে দেওবন্দ কিতাবটি নিয়ে ব্যাপক কথা হচ্ছে পক্ষে-বিপক্ষে নানান রকম। আপনার কাছে দুইটা আবেদন। এক- আপনারা সোশ্যাল মিডিয়ার সমালোচনার ঝড় থামানোর জন্য সোশ্যাল এক্টিভিস্টদের প্রতি কোনো অনুরোধ করবেন কি না?  দুই- এই সদ্য ঘোষিত সিলেবাস সমালোচনার মুখে প্রত্যাহার করবেন কি না?

মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ : আপনার দ্বিতীয় প্রশ্ন- প্রত্যাহার করার বিষয়টা আমি বলতে পারব না। এ বিষয়ে আমি কোনো দায়িত্বশীলও না। আমি সাধারণ একজন সদস্য কর্মী। এটা বড়দের ব্যাপার। বেফাকের চেয়ারম্যান সাহেব (মুহিউস সুন্নাহ আল্লামা মাহমুদুল হাসান) আছেন, মহাসচিব সাহেব (মাওলানা মাহফুজুল হক) আছেন। খাস কমিটি আছে, আমেলা আছে। তারা দেখবেন। আমি কিছু বলতে পারব না।

কিন্তু প্রথম প্রশ্নের ব্যাপারে আমার বক্তব্য হল, দেশবাসীসহ সোশ্যাল মিডিয়ায় যারা সমালোচনা করছেন, তাদের কাছে আমার আবদার- এ নিয়ে আকাবির-মুরব্বিদের সমালোচনা করে নিজের ক্ষতি টেনে আনার কোনো দরকার নেই। বরং আপনারা নিশ্চিত থাকেন, আমাদের মাঝে থানভী-মাদানী কোনো গ্রুপিং নেই। এর কল্পনাও কমিটির নেই। তা শুধু সহজকরণের জন্যই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরপরও কোনো যুক্তিসঙ্গত আলোচনা-মতামত থাকলে বেফাকে চিঠি দিন। আপনাদের মতামত বিবেচনায় নেওয়ার মানসিকতা বেফাকের অবশ্যই আছে। কিন্তু তা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় আকাবিরদের বিরুদ্ধে বা বেফাকের বিরুদ্ধে পক্ষে-বিপক্ষে কথা বলা মানেই নিজেদের অস্তিত্বেরই ক্ষতি। আমি অনুরোধ করব- এর থেকে আপনারা ফিরে আসবেন।

আওয়ার ইসলাম : বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকের সিলেবাসভূক্ত আরও অন্যান্য কিতাবেও ভাষা ও ভাবপ্রকাশের জটিলতা আছে বলে অনেকে মনে করেন। কঠোরতা বা দুর্বোধ্যতা আছে। তাহরিকে দেওবন্দ কিতাবটি নিয়ে যেভাবে সহজ করার উদ্যোগ নিয়েছেন, তাফসিরে বায়যাবী, শরহে আকাঈদ, মুখাতাসারুল মাআনী কিতাবসহ যেগুলোতে দুর্বোধ্যতা আছে, এগুলো সহজ করণের জন্য আপনারা সাব-কমিটি বা বেফাক কোনো উদ্যোগ নেবেন কি না?

মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ :  আসলে আমি মনে করি সিলেবাস সংক্রান্ত বিষয়ে কমিটি আরও অন্যান্য কিতাব নিয়েও ভাববেন। দেখবেন। এমন উদ্যোগ বেফাকেরও আছে। কিন্তু বিভিন্ন মাদরাসা, শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে যেসব কিতাবের ব্যাপারে কঠিনভাবে আপত্তি-অভিযোগ এসেছে, সেসব কিতাব নিয়ে আমরা প্রাথমিকভাবে বসে চিন্তা-ভাবনা করে তিনটা কিতাব দেখেছি। এতে যা করার সম্ভব হয়েছে, তা করেছি। তারপরও কোনো ভুল-ভ্রান্তি কারো চোখে পড়লে আমাদের অবগত করলে আমরা ব্যবস্থা নেবো। এখন তিন কিতাব করলাম, সামনে আরও অভিযোগ এলে অন্যান্য কিতাবও সহজ করার উদ্যোগ নেয়া হবে, ইনশাআল্লাহ।

কেএল/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ