.
ফ্রান্সের মোট জনগণের ১৫ শতাংশের চেয়ে অধিক হচ্ছে মুসলিম। যদিও সরকারিভাবে সাত থেকে দশ শতাংশের বেশি স্বীকার করা হয় না। অস্বীকারের অবশ্য যথেষ্ট কারণ আছে। তা হলো, মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা, বাংলাদেশ, পাকিস্তানসহ পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা হাজার হাজার মুসলিম অবৈধ হওয়ায় ফ্রান্সের সরকারের নথিভুক্ত নয়।
.
সংখ্যা যা-ই হোক, ফ্রান্সে মুসলমান এবং ইসলামের অবস্থান আসলেই রাষ্ট্রের মূলধারাকে ছুঁয়েছে। এই ক’বছর পূর্বেও ইউরোপের অন্যান্য দেশের মতো ফ্রান্সেও ঈদ অনেকটা নামাজসর্বস্ব ছিল, তাও আবার সব মুসলিমের জন্য সম্ভব ছিল না। যাদের সুযোগ ছিল, তারা ঈদের দিন সকালে নিকটস্থ মসজিদে দু’রাকাত নামায পড়েই কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে ভূ দৌড়। রাজকপালে যদি ঈদের দিন ছুটি পেয়ে যায়, তাহলে তো ঈদ-ই ঈদ।
.
মুসলিম শিশুরা ঈদের ইতিহাস, শিক্ষা কিংবা আনন্দ বিষয়ে শুধু মা-বাবার মুখের কথাতেই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু দিনে দিনে বদলাচ্ছে ইউরোপ। বদলাচ্ছে ফ্রান্স। ফ্রান্সের রাষ্ট্রযন্ত্র ইসলাম এবং মুসলমানদের নিয়ে নতুনভাবে ভাবছে। এরই ধারাবাহিকতায় দুবছর পূর্বে ঘোষণা এসেছে, ‘যদি কেউ ঈদের দিন কর্মক্ষেত্রে আসতে না চায়, তাকে বাধ্য করা যাবে না। এবং অনুপস্থিত হলে জবাবদিহি করা যাবে না।’ এছাড়াও এবার অনেক স্কুল থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের বলে দেয়া হয়েছে, ঈদের দিন স্কুলে না এলে সমস্যা নেই। এর প্রেক্ষিতে মুসলিমরা একেবারে নিঃসংকোচে বাচ্চাদের স্কুলে না পাঠিয়ে একসাথে ঈদ উদযাপন করেছে বলে অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন অনেক অভিভাবক।
.
এসব উপযোগী সিদ্ধান্ত এবং উদ্যোগের ফলে ঈদের আমেজে অনেকটা কার্যকরী ভূমিকা পালন করছে। ক’বছর থেকে মসজিদের পাশাপাশি প্যারিসসহ ফ্রান্সের বিভিন্ন শহরে খোলা পার্কে আয়োজিত হচ্ছে, ঈদের জামাত। যাতে হাজার হাজার মুসলমানের পাশাপাশি স্হানীয় মেয়র, প্রশাসনিক কর্মকর্তারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে উপস্থিত হচ্ছেন। স্কুলের বাধ্যবাধকতা না থাকায় সন্তানদের নিয়ে ঈদের জামাতে উপস্থিত হয়ে যেন মুসলিম পরিবারসমূহের ঈদে পূর্ণতা পাচ্ছে। মুসলমানদের ব্যবসা-বাণিজ্য প্রায় বন্ধ থাকার পাশাপাশি সরকারের ঈদের দিনে কর্মক্ষেত্রে উপস্থিতির শিথিলতা আইন ফ্রান্সের বিভিন্ন সেক্টরে ব্যপক প্রভাব ফেলছে।
.
বিশ্লেষকরা বলছেন, ঈদের দিন মুসলমানদের বিষয়ে সরকারের এই সিদ্ধান্ত অনেকটা অঘোষিত ছুটি- যা অতি শিগগির জাতীয় ছুটিতে পরিণত হবে।
.
আরআর