গত ২৬ নভেন্বর চট্টগ্রাম আদালতে নির্মম হত্যার শিকার নিহত অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফের গ্রামের বাড়িতে আজ রাতে নিহতের পরিবারের প্রতি সহানুভূতি জানাতে ও কবর জিয়ারতে উপস্থিত হয়েছিলেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের একঝাঁক শীর্ষস্হানীয় নেতৃবৃন্দ।
আজ বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় তাঁরা সাইফুল ইসলামের বাড়িতে পৌঁছে তাঁর স্বজনদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সমাবেদনা প্রকাশ করেন।
এরপর নিহত সাইফুল ইসলামের কবর জেয়ারত শেষে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা করেন তারা। সেখানে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের বাইরেও এলাকাবাসীরা অংশ নেন।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন ' প্রিয় নবী মোহাম্মদ রাসূল (সা.) এর একটি সুন্নাত হলো বিপদগ্রস্হ আপনজন হারানো বেদনাহত মানুষের পাশে দাঁড়ানো, এটি সুন্নাতের একটি আমল। আজ আমরা সকলেই শহীদ সাইফুল ইসলামের পরিবারের পাশে শোক ও গভীর সমবেদনা জানাতে ও এই সুন্নতের আমল করতে উপস্থিত হয়েছি। এবং আমরা শহীদ সাইফুল ইসলামের এ আত্মত্যাগের শাহাদাতের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করছি। আজ এখান থেকে দেশপ্রেমী মুসলমানদের পক্ষে থেকে বলতে চাই আমাদের সন্তানদেরকে, আমাদের ভাইদেরকে হত্যা করেও হক্বের পক্ষ থেকে আমাদের কখনোই বিচ্যুত করা যাবে না।
শহীদ সাইফুল ইসলাম আলিফ মৃত্যুর আগ মুহুর্ত পর্যন্ত অন্যায়, অবিচার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন বলে উল্লেখ করে মামুনুল হক বলেন " তাঁর সর্বশেষ যে আহ্বান ছিল তা জাতির প্রতি অন্যায় ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে।
যেভাবে তাঁকে দিনের আলোয় আদালত পাড়ায় ইসকনের উগ্রগোষ্ঠী নির্মম সন্ত্রাসবাদ চালিয়ে হত্যা করেছে তার সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।দেশ বিরোধী অন্যায়ের জন্য যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে এর বাইরেও যাদের যাদের সূত্রতা থাকবে এখানে প্রত্যেককে ধরতে হবে।
তিনি বলেন 'আদালত পাড়ায় এই ধরণের একটি ঘটনা বাংলাদেশের বিচার বিভাগকে কলংকিত করেছে এবং দেশের আইনকে বৃদ্ধাংগুলি দেখিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। সুতারং এই ঘটনায় শুধু কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে নয়, যারাই সম্পৃক্ত ছিল তাদের প্রত্যেককেই অনতিলম্বে যেকোন মূল্যেই গ্রেপ্তারের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তুির দাবী জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন ' এদেশের বিগত স্বৈরাচারের অপশক্তি এখনও চায় যাতে দেশের সাম্প্রদায়িক হামলা ও যুদ্ধ শুরু হয়। তারা চায় হিন্দু-মুসলমানের বিভেদ সৃষ্টি করে নিরীহ হিন্দুদের ওপর আক্রমন চালাতে। কিন্তু আমাদের ঐক্যবদ্ধ সহমর্মিতা ও সংযত আচরণ সেসব নসাৎ করেছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর আল্লামা খলিল আহমদ কাসেমী আল কুরাইশী, নায়েবে আমির আল্লামা মুফতি জসিম উদ্দিন, নায়েবে আমির আল্লামা আলী উসমান, কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মাওলানা মাহফুজুল হক, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, অর্থ সম্পাদক মাওলানা মুনির হুসাইন কাসেমী, জিরি মাদ্রাসার মহাপরিচালক মাওলানা খুবাইব, জামিয়ার কোরআনিয়া মাদ্রাসার সহকারী পরিচালক মাওলানা এমদাদুল্লাহ সোহাইল ও মাওলানা রিদওয়ানুল ওয়াহেদসহ স্হানীয় আলেম ওলামারা।
এসময় হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নেতারা বলেন' ইসকনসহ বিগত স্বৈরাচারী শক্তি হয়ে যারাই আসবে তাদেরকে শক্ত হাতে প্রতিহত করা হবে। তারা দ্রুত ইসকনকে বাংলাদেশের নিষিদ্ধের দাবীও তোলেন।
হাআমা/