নিজস্ব প্রতিবেদক:
দারুননাজাত সিদ্দীকিয়া কামিল মাদরাসার প্রাক্তন ছাত্র মোহাম্মদ শিহাবউদ্দিন আল-আযহারী মিশরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের এমফিল ডিগ্রি অর্জন করেন। গত (২৫ নভেম্বর ২০২৪ ইং) রোজ সোমবার মিশরের রাজধানী কায়রোতে বাংলাদেশী মেধাবী শিক্ষার্থী গবেষক মুহাম্মাদ শিহাব উদ্দীন আজহারীর এমফিল থিসিস ডিসকাশন সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
আল-আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক সাইন্স অনুষদের অধীনে গবেষক মুহাম্মাদ শিহাব উদ্দীন আজহারীর লিখিত এমফিল থিসিসের আলোচ্য বিষয় ছিল:-
الأحاديث المرفوعة والموقوفة الواردة في كتاب: "التيسير في التفسير" للإمام نجم الدين أبي حفص عمر بن محمد النسفي الحنفي المتوفى سنة: (537 هـ) من بداية قوله تعالي: {إِن تَتُوبَا إِلَى ٱللَّهِ فَقَد صَغَت قُلُوبُكُمَا...} (التحريم: ٤) إلي تفسير قوله تعالي: {إِنَّمَا نُطعِمُكُم لِوَجهِ ٱللَّهِ لَا نُرِیدُ مِنكُم جَزَاء وَلَا شُكُورًا} (الإنسان:٩) ( تخريجا ودراسة )
অনুষদটির ইমাম আহমাদ আত-তাইয়িব হলে অনুষ্ঠিত সেমিনারের সুপারভাইজার ছিলেন অধ্যাপক ড. খালিদ শাকির আতিয়াহ সুলাইমান (হাফি:)। তিনি উসুলুদ দীন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ও ইসলামিক সাইন্স অনুষদের হাদিস বিষয়ক অধ্যাপক।
উক্ত অনুষ্ঠানে (মুনাকিশ) হিসেবে উপস্থিত হন ইসলামিক থিওলোজি অনুষদ, কায়রোর হাদিস বিভাগের অধ্যাপক ড. হিশাম ইবরাহিম ফারজ মুহাম্মাদ (হাফি:) এবং ২য় (মুনাকিশ) হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. হাসান কামাল হাসান আল কছবী (হাফি:)।
এছাড়াও উক্ত সেমিনারে কুল্লিয়াতুল উলুমিল ইসলামীয়ার বিভিন্ন বিভাগের সম্মানিত অধ্যাপকবৃন্দের আগমনে থিসিস ডিসকাশন সেমিনারকে আরো প্রাণবন্ত করে তোলে। এই সেমিনারে শত শত বাংলাদেশী ও বিদেশী শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে সেমিনারটি হয়ে উঠে প্রাণবন্ত।
ডিসকাশন শেষে সম্মানিত সুপারভাইজারগণ এমফিল গবেষক মুহাম্মাদ শিহাব উদ্দীন আজহারীকে সর্বোচ্চ ফলাফল মুমতাজ (এক্সিলেন্ট) প্রদানের মাধ্যমে উত্তীর্ণ ঘোষণা করেন। এসময় উপস্থিত সুপারভাইজারগণ, ইত্তেহাদের দায়িত্বশীবৃন্দ ও উপস্থিত শিক্ষার্থীরা এবং তার বিদেশী সহপাঠীরা গবেষককে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
বাংলাদেশ স্টুডেন্টস অর্গানাইজেশন, মিশর তার সমৃদ্ধ আগামী ও সার্বিক সাফল্য কামনা করে। তাছাড়া তারা বলেন, আল-আযহার থেকে এমন অভূতপূর্ব সাফল্যের সাথে এমফিল ডিগ্রি অর্জন আমাদের গৌরবান্বিত করেছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের সুনামকে আরো একবার উজ্জীবিত করেছে।
উল্লেখ্য যে, মুহাম্মাদ শিহাব উদ্দীন আজহারী দারুন্নাজাত সিদ্দিকিয়া কামিল মাদরাসা থেকে ২০১২ সালে দাখিল, ২০১৪ সালে আলিম পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। অতঃপর ২০১৫ সালে সরকারীভাবে আল আজহার ইউনিভার্সিটির পক্ষ থেকে স্কলারশিপের জন্য চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হন। এবং ২০১৬ সালের ২০ এপ্রিল আল আজহার ইউনিভার্সিটিতে উচ্চ শিক্ষা অর্জনের জন্য যান। ২০১৬-২০১৭ শিক্ষাবর্ষে মারকায শেখ যায়েদে আরবি ভাষা শিক্ষা কোর্সে অংশগ্রহণ করেন। অতঃপর ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষে আল আজহার ইউনিভার্সিটির কুল্লিয়াতু উসুলিদ্দীন এ ১ম বর্ষে ক্লাস শুরু করেন। উসুলুদ্দীন অনুষদের হাদিস ডিপার্টমেন্ট থেকে ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে সফলতার সাথে চার বছর মেয়াদি অনার্স ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। এবং ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষে মাস্টার্স (তামহিদী) এ ভর্তি হন। ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষে উসুলুদ্দীন অনুষদের হাদিস ডিপার্টমেন্ট থেকে জাইয়্যেদ জিদ্দান (গড় ৮৩% নাম্বার) নাম্বার (এ+) পেয়ে সফলতার সাথে উত্তীর্ণ হন। অতঃপর ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষে উক্ত অনুষদের হাদিস ডিপার্টমেন্ট থেকে ১৫ আগস্ট ২০২৩ সালে এমফিল থিসিস রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হয়। অতঃপর ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষে সেপ্টেম্বর মাসে এমফিল থিসিস ডিসকাশন অনুষ্ঠানের জন্য আবেদন করেন।
গত ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ইং রোজ সোমবার, সকাল ১০:০০ থেকে প্রায় দুপুর ১:০০ পর্যন্ত ( প্রায় ৩ ঘন্টা) এমফিল থিসিস এর উপর ডিসকাশন সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। থিসিস ডিসকাশন শেষে সকলের (প্রায় তিন শত শিক্ষার্থীর ) উপস্থিতিতে আল আজহার ইউনিভার্সিটির উসুলুদ্দীন অনুষদের হাদিস ডিপার্টমেন্ট থেকে সম্মানিত সুপারভাইজার সর্বোচ্চ রেজাল্ট (Excellent) মুমতাজ ঘোষণা করেন।
তার এই সাফল্যে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন দারুননাজাত প্রাক্তন ছাত্র এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ। তাছাড়া দারুননাজাত সিদ্দীকিয়া কামিল মাদরাসার শিক্ষকমন্ডলীও তাকে শুভেচ্ছা জানান
হাআমা/