আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: ঈদযাত্রায় রেলওয়ে স্টেশনের পাশাপাশি অনলাইনেও বিক্রি করা হচ্ছে ট্রেনের আগাম টিকেট। অনলাইনে অর্ধেক এবং ঢাকার পাঁচটি স্টেশনে মিলছে বাকি অর্ধেক টিকেট। তবে, অনলাইনে টিকেট কাটতে গিয়ে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
দীর্ঘ সময় চেষ্টা করেও টিকেট কাটতে পারেননি অনেকে। তাঁদের অভিযোগ, এক ঘণ্টার মধ্যেই অনলাইনের টিকেট শেষ হয়ে গেছে।
অনলাইন ও রেলস্টেশনে আজ শনিবার সকাল ৮টা থেকে টিকেট বিক্রি শুরু হয়। তবে, ৮টার আগে থেকেই অনলাইনে লগইন করে টিকেট কাটার অপেক্ষা করছিলেন অনেকে। কিন্তু অনেকেই টিকিট পাননি। যদিও কারও কারও টিকিট পাওয়ার তথ্য জানা গেছে।
রেলওয়ের ঘোষণা অনুযায়ী, শনিবার সকাল থেকে ঈদযাত্রার ৫০ শতাংশ টিকেট অনলাইনে এবং বাকি ৫০ শতাংশ কাউন্টারে বিক্রি করার কথা।
কিন্তু, অনলাইনে টিকেট কাটতে গিয়ে সার্ভারে সমস্যা হচ্ছিল বলে অভিযোগ করেছেন টিকেট প্রত্যাশীরা। ওয়েবসাইটে এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ইংরেজিতে তিন বাক্য লেখা ছিল, যার বাংলা করলে দাঁড়ায়, ‘আপনি আমাদের কাছে খুবই মূল্যবান। মানসম্পন্ন পরিষেবা নিশ্চিত করতে আমরা আপনাকে লাইনে রাখছি। ধৈর্য ধরার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।’
ট্রেনের আগাম টিকেট কাটার জন্য নির্ধারিত ওয়েবসাইটে লগইন করতে পারেননি অনেকেই। ছবি : সংগৃহীত
‘বাংলাদেশ রেলওয়ে পরিবার’—নামের একটি ফেসবুক পেজ রয়েছে ট্রেনের যাত্রীদের। সেখানে ট্রেনের নানা ধরনের সুবিধা-অসুবিধার কথা জানান যাত্রীরা। আজ সকাল থেকে ওই পেজে যাত্রীরা টিকেট না পাওয়ার কথা জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
মো. ইউসুফ মিয়া নামের একজন লিখেছেন, ‘প্রায় এক ঘণ্টা ধরে ট্রাই করেও লগইন করতে পারলাম না। রেলওয়ে ই-টিকেটিং সার্ভিসের নতুন সিস্টেম শুধু ভোগান্তি ছাড়া আর কিছু নয়। একটা সার্ভার সামাল দেওয়ার সক্ষমতাটুকুও নাই।’
শরিফুল ইসলাম নামের একজন লিখেছেন, ‘ওরে কঠিন, তোমায় সহজ রেখেছে কে? সকাল ৮টা থেকে ঢুকতে চেষ্টা করতে করতেই টিকেট শেষ। পরে ওয়েবসাইটে যাওয়া যায়, কিন্তু আর লগইন করতে পারলাম না। পরে হলো, তবে লগইন করতে করতে ট্রেনের টিকেট শেষ!’
জি এম আজাদ হোসাইন নামের এক টিকেটপ্রত্যাশী লিখেছেন, ‘সকাল ৮টা থেকে অনলাইনে ট্রেনের টিকেট কাটার চেষ্টা করছি। ওয়েবসাইটে প্রবেশ করা যায় না। শুধু লেখা আসে, ‘ইউ আর ভেরি ভ্যালুয়েবল টু আস’। এক ঘণ্টার চেষ্টায় যখন ওয়েবসাইটে ঢুকতে পারলাম, তখন দেখি টিকেট শেষ। ২৭ তারিখের ঢাকা-খুলনার কোনো টিকেট আর নাই। যেখানে ওয়েবসাইটে ঢোকা যায় না, সেখানে টিকেট শেষ হয়ে যায় কীভাবে?’
নাজমুল হুদা নামের একজন টিকেটপ্রত্যাশী সকাল সাড়ে ৭টার পর থেকে ওয়েবসাইটে ঢুকে বসেছিলেন। যদি পরে আর না ঢুকতে পারেন, সেই শঙ্কা থেকেই আগে লগইন করেছেন। কিন্তু, ৮টা বাজার পর থেকেই সার্ভার ডাউন হয়। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘এটা কোনো সিস্টেম? আমার মনে হয়েছে, টিকেট উধাও হওয়ার কোনো না কোনো কারণ আছে। এখানে রেলের লোকজন জড়িত থাকতে পারে।’
তবে, টিকেট কাটতে পেরে কেউ কেউ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। মেহেদী হাসান নামের একজন লিখেছেন, ‘দীর্ঘ এক ঘণ্টা যুদ্ধ করার পর টিকেট কাটতে পেরেছি। মোবাইল দিয়ে যখন লগইন করতে পারছিলাম না, তখন ওয়াইফাই দিয়ে, ডেক্সটপ দিয়ে ঢুকে দেখি অনেক টিকেট।
সঙ্গে সঙ্গে তিনটি কেটে নিলাম। পৌনে ৯টার দিকে সার্ভার ফ্রি হলে ৮টা ৫৭ মিনিটে টিকেট কাটতে পেরেছি। যারা কাটতে পারেন নি, আগামীকাল পৌনে ৯টা থেকে চেষ্টা করতে পারেন। টিকেট কাটতে পেরে নিজেকে নায়ক নায়ক মনে হচ্ছে।’
-এটি