আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম হিসেবে যাত্রা শুরু করে পরে ই-কমার্স ব্যবসায় নামা আলোচিত রিং আইডি আয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে।
গত মে মাসে ২৩ কোটি ৯৪ লাখ টাকা, জুন মাসে ১০৯ কোটি ১৩ লাখ টাকা এবং জুলাই মাসে ৭৯ কোটি ৩৮ লাখ টাকা অবৈধভাবে সংগ্রহ করেছে রিং আইডি। তিন মাসে তারা হাতিয়ে নিয়েছে মোট ২১২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।
রাজধানীর ভাটারা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় গত শুক্রবার গুলশান থেকে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক সাইফুল ইসলামকে গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য জানায় অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর আঁখি বেগম নামের এক ভুক্তভোগী ১০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় ১৫ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও মাল্টি-লেভেল মার্কেটিং কন্ট্রোল অ্যাক্টের আওতায় মামলা করেন।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানান, গতকাল শনিবার আদালতের নির্দেশে সাইফুলকে দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। অন্য আসামিদের বিষয়েও তদন্ত চলছে। রিং আইডি যেন অবৈধভাবে দেশের বাইরে টাকা পাচার করতে না পারে সে জন্য এরই মধ্যে তাদের সব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করতে বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ জানিয়েছে তদন্তকারীরা।
সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আজাদ রহমান বলেন, সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার রিং আইডির অবৈধ কার্যক্রম সম্পর্কে বিপুল পরিমাণ তথ্য সংগ্রহ করে তিন মাসে ২১২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার তথ্য পেয়েছে। তাদের এসব সন্দেহজনক কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে বেশ কিছুদিন আগে সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার থেকে বাংলাদেশ ফিন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইইউ) অনুসন্ধানের জন্য একটি চিঠি দেওয়া হয়। বিএফআইইউ এরই মধ্যে অনুসন্ধান শুরু করেছে। এ ছাড়াও রিং আইডি ইস্যুতে সাইবার পুলিশ সেন্টারে মানি লন্ডারিং বিষয়ে একটি অনুসন্ধান কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
রিং আইডিতে বিনিয়োগ করে প্রতারিত হয়েছেন এমন অভিযোগে আঁখি বেগমের করা মামলার অন্য আসামিরা হলেন—শরিফুল ইসলাম, ইরিন ইসলাম, সালাহউদ্দিন, আহসান হাবিব, রফিকুল ইসলাম, নাজমুল হাসান, আব্দুস সামাদ, রেদোয়ান রহমান ও রাহুল।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, একটি সংঘবদ্ধ ডিজিটাল প্রতারকচক্র রিং আইডির আড়ালে কয়েন বিক্রি করে ইলেকট্রনিক লেনদেনের সাহায্যে অর্থ সংগ্রহ করত। অভিযুক্তরা সহজে আয়ের পথ হিসেবে মানুষকে রিং আইডিতে বিনিয়োগে প্ররোচিত করেছে। ২০১৯ সালে বাদী আঁখি বেগম, তাঁর দুই ভাই ও এক ভাগ্নে মোট ৮৬ হাজার টাকা বিনিয়োগ করেন। এর মধ্যে আঁখির এক ভাই একবার শুধু সামান্য অঙ্কের কিছু টাকা উত্তোলন করতে পেরেছিলেন। এরপর আর কোনো লাভ পাননি, বিনিয়োগের মূল টাকাও ফেরত পাননি।
-কেএল