আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: আজ থেকে ২২ দিন সব ধরনের ইলিশ মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। ইলিশের প্রজনন নির্বিঘ্ন করতে ৪ঠা অক্টোবর থেকে ২৫শে অক্টোবর পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে।
এসময় ইলিশ আহরণের পাশাপাশি পরিবহন, মজুদ, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময়ের ওপরেও রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করা হলে জরিমানা ও কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।
মৎস্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলাকালে জেলেরা ২০ কেজি করে চাল সহায়তা পাবেন। বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় এই সহায়তা পাবেন ৩ লাখ ৭ হাজার ১২৪ জেলে। এর মধ্যে বরিশাল জেলার ৫১ হাজার ৭০০ জন, পিরোজপুরের ১৭ হাজার ৭০০, পটুয়াখালীর ৬৩ হাজার ৮০০, ভোলার ১ লাখ ৩২ হাজার, বরগুনায় ৩৭ হাজার ৭৪ এবং ঝালকাঠিতে সহায়তা পাবেন ৩ হাজার ৮৫০ জেলে। এরই মধ্যে ৬ হাজার ৯৪২ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
ইলিশ গবেষকেরা বলছেন, ইলিশ মূলত সারা বছরই ডিম দেয়। তবে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর- এই দুই মাসের চারটি অমাবস্যা-পূর্ণিমায় ডিম পাড়ে।
বিশেষ করে অক্টোবরের দুটি অমাবস্যা-পূর্ণিমাকে কেন্দ্র করে প্রতিবছর ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এই সময়ে ইলিশ ধরা থেকে বিরত থাকার প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে মা ইলিশ রক্ষা করা, যাতে তারা নিরাপদে নদীতে ডিম ছাড়তে পারে। এই ডিম রক্ষা করতে পারলে তা নিষিক্ত হয়ে জাটকার জন্ম হবে।
সেই জাটকা রক্ষা করা গেলে দেশে বড় আকারের ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। এ ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর প্রতিবছর ২ নভেম্বর থেকে ৩০ জুন- এই ৮ মাস জাটকা ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকে। দুই ধাপের এই নিষেধাজ্ঞার কারণে দেশে ইলিশ উৎপাদন যেভাবে বেড়েছে, তেমনি ওজন-আকারেও বেড়েছে।
বাংলাদেশে ২০০৩-০৪ সাল থেকেই জাটকা রক্ষার কর্মসূচি শুরু করা হয়। তখন থেকেই ধীরে ধীরে ইলিশের উৎপাদন বাড়ছিল।
এদিকে ভোলায় ২২ দিনের ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞাকে সামনে রেখে সাগর ও নদী থেকে ফিশিংবোট, ট্রলার, নৌকা ও মাছ শিকারের সব সরঞ্জাম নিয়ে ঘাটে ফিরতে শুরু করেছেন জেলেরা। এসময় মা ইলিশ রক্ষায় নিষেধাজ্ঞা কঠোর করার দাবি জানান জেলেরা। পাশাপাশি নিষেধাজ্ঞার সময় জেলেদের নামে বরাদ্দ করা চাল দ্রুত বিতরণ এবং এনজিওর কিস্তি আদায় বন্ধের বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানান তারা।
ভোলা সদর উপজেলার ভেদুরিয়া ও ধনিয়া ইউনিয়নের মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মাছ ধরার সরঞ্জাম নিয়ে দল বেঁধে ঘাটে ফিরছেন জেলেরা। তীরে নোঙর করে ফিশিংবোট, ট্রলার থেকে ইঞ্জিন, জালসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম নিরাপদ স্থানে রেখে দিচ্ছেন। আবার কোনো কোনো জেলে এসব সরঞ্জাম নিয়ে যাচ্ছেন বাড়িতে।
-কেএল