আওয়ার ইসলাম: মিয়ানমারে সেনানিয়ন্ত্রিত দুটি বড় বাণিজ্য সংস্থার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। গত ফেব্রুয়ারিতে সেনা অভ্যুত্থান ও এরপর গণতন্ত্রের দাবিতে আন্দোলনরত মানুষকে নির্যাতন–নিপীড়নের জন্য মার্কিন সরকার এ পদক্ষেপ নিচ্ছে।
মার্কিন সরকারের ঘনিষ্ঠ দুটি সূত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের এই দুটি বাণিজ্য সংস্থা হলো মিয়ানমার ইকোনমিক করপোরেশন (এমইসি) ও মিয়ানমার ইকোনমিক হোল্ডিং লিমিটেড (এমইএইচএল)।
এই দুটি সংস্থা সামরিক মালিকানাধীন। শিগগিরই এই দুটি সংস্থাকে কালো তালিকাভুক্ত করার পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়। সেই সঙ্গে এমইসি ও এমইএইচএলের যুক্তরাষ্ট্রে থাকা সম্পদও জব্দ করা হতে পারে। গত বৃহস্পতিবারই এ ধরনের ঘোষণা আসতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
গত ১ ফেব্রুয়ারি রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) সরকারের পতন ঘটায় সেনাবাহিনী। গ্রেপ্তার করা হয় সু চিসহ এনএলডির শীর্ষ নেতাদের। এরপর থেকেই দেশটিতে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ চলছে। এই বিক্ষোভ দমনে জান্তা সরকারও কঠোর। এরই মধ্যে দেশটিতে আড়াই শর বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। সেনা-পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন প্রায় তিন হাজার বিক্ষোভকারী। অবশ্য গতকাল বুধবার ছয় শর বেশি বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে জান্তা সরকার।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইয়াঙ্গুনের ইনসেইন কারাগার থেকে অন্তত ১৫টি বাসে করে বন্দীদের বের হতে দেখা গেছে। তাদের বেশির ভাগই বয়সে তরুণ।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ২০১১ সালের পর রাজনৈতিক সংস্কারের সময়ে বেসরকারি মালিকানাধীন সংস্থাগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে। ওই সময়ই বাণিজ্য সংস্থা হিসেবে শক্তিশালী হয়ে উঠতে থাকে মিয়ানমার ইকোনমিক করপোরেশন (এমইসি) ও মিয়ানমার ইকোনমিক হোল্ডিং লিমিটেড (এমইএইচএল)।
গত কয়েক বছরে বড় বড় ব্যবসার লাইসেন্স, জমি ও সামগ্রিক অর্থনীতির ওপরে নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন মিয়ানমারের সামরিক নেতারা। দেশটির সামরিক মালিকানাধীন সংস্থা মদ, তামাক ও ভোগ্যপণ্য থেকে শুরু করে খনি, কলকারখানা, পর্যটন, ভূমি উন্নয়ন এবং টেলিযোগাযোগ খাত পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যবসা ও বিনিয়োগে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে।
এর আগে রোহিঙ্গা নিধন নিয়ে গঠিত জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল যে মিয়ানমারের অর্থনীতিতে সেনাবাহিনী গভীরভাবে জড়িয়ে আছে। সেনাবাহিনীর বাণিজ্যিক স্বার্থের এই জাল সব সময় জবাবদিহি ও তদারকির বাইরে থেকেছে বলেও জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়।
-এটি