আওয়ার ইসলাম: আগরতলা বিমানবন্দর সম্প্রসারণের জন্য বাংলাদেশের কাছে জমি চেয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।
ত্রিপুরা রাজ্যের এই বিমানবন্দরটিকে (বর্তমান মহারাজা বীর বিক্রম বিমানবন্দর) সম্প্রসারণ করতে বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কিছু ভূমি প্রয়োজন বলে জানিয়েছে ভারত। ইতোমধ্যেই এ ধরনের একটি মৌখিক প্রস্তাব বাংলাদেশের কাছে পাঠানো হয়েছে।
২০১৮ সালের জুলাই মাসে ভারতের তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (বর্তমান প্রতিরক্ষামন্ত্রী) রাজনাথ সিং বাংলাদেশ সফরকালে প্রথম এ প্রস্তাব দেন।
এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল গত সোমবার বলেন, ভারতের কাছ থেকে এ ধরনের একটি প্রস্তাব এসেছে, তবে সরকার এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।
তিনি জানান, ভারতকে ইতোমধ্যে ট্রানজিট ও ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা দেয়া হয়েছে। গত এক বছর ধরে বেশ কয়েকটি সভায় নতুন করে এই প্রস্তাব দিয়ে আসছে দেশটি।
তবে ভারত কী পরিমাণ জমি চায় তা কোনো কর্মকর্তাই জানাতে পারেননি। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আগরতলা বিমানবন্দরের রানওয়ে বাংলাদেশের আখাউড়ার চানপুর সীমান্তের এক কিলোমিটারেরও কম দূরে অবস্থিত। কলকাতা ও গুয়াহাটি থেকে বিমান উড্ডয়নের পর আগরতলা বিমানবন্দরে অবতরণের সময় বাংলাদেশের আকাশসীমা ব্যবহারের প্রয়োজন পড়ে।
এদিকে ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, আগরতলা বিমানবন্দরের জন্য আন্তর্জাতিক মানের একটি রানওয়ে তৈরি করতে হলে বাংলাদেশের আখাউড়া উপজেলার চানপুরের প্রায় এক কিলোমিটার পর্যন্ত ভূমি প্রয়োজন হবে।
গোপন একটি সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ভারতের সাথে কীভাবে তার জমি ভাগ করে নিতে পারে তা নিরীক্ষা করতে গত বছরের অক্টোবর মাসে কয়েকটি মন্ত্রণালয় ও গোয়েন্দা সংস্থার সাথে বৈঠকে বসেছিলো পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এ ব্যাপারে সেই বৈঠকে অংশ নেয়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দুই কর্মকর্তা বলেন, আমরা ভারতকে একটি আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দিতে বলেছি। এছাড়া একজন সামরিক কর্মকর্তা বাংলাদেশের ভূখণ্ড ভারতকে দেয়া হলে কী ধরনের নিরাপত্তা সংক্রান্ত সমস্যা হতে পারে তা ব্যখ্যা করেছেন।
এদিকে এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রসচিব শহিদুল হক। তিনি জানান, ভারতের এই প্রস্তাব সবাই ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছে। জেনেভা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও আংশিকভাবে সুইজারল্যান্ডে এবং আংশিকভাবে ফ্রান্সে পড়েছে। সুইজারল্যান্ড এবং ফ্রান্স উভয় স্থান থেকে সেখানে অধিগমন করা যায়।
ভারতকে ভূমি দেয়াটা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি কি না -এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, এটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলতে পারবেন। তবে আমি এটিকে দূরদর্শী দৃষ্টিকোণে ব্যবসা এবং গতিশীলতার দিক থেকে দেখেছি। বিভিন্ন দেশে আন্তঃসীমান্ত বিমানবন্দর রয়েছে। অনেক দেশ একই বিমানবন্দর ব্যবহার করে।
উল্লেখ্য, আগরতলা বিমানবন্দরটিকে ২০১৯ সালের শেষে অথবা ২০২০ সালের শুরুর মধ্যে ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের তৃতীয় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে গড়ে তোলার প্রকল্প হাতে নিয়েছে নয়াদিল্লি।
-এটি