আওয়ার ইসলাম: রংপুরের মিঠাকুপুরে এক সপ্তাহের ব্যবধানে সাপের কামড়ে একই গ্রামে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। সাপের কামড়ের শিকার হয়েছেন আশপাশের কয়েকটি গ্রামের আরও ১৩ জন। এখন সাপের আতঙ্কে দিন কাটছে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার রানীপুকুর ইউনিয়নের বাসিন্দাদের।
গত শুক্রবার দুপুরে সরেজমিন রানীপুকুর ইউনিয়নের ভক্তিপুর দোলাপাড়া গ্রামে গিয়ে জানা যায়, স্থানীয় হাছেন আলীর ছেলে সালাউদ্দিন (১৮) রোববার সকালে পাটক্ষেতে কাজ করতে গিয়ে সাপের কামড়ে আক্রান্ত হন। সেই দিন রাতেই তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনার তিনদিন পার না হতেই একই গ্রামে আলম মিয়ার অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া ছেলে রানা মিয়া রাতে ঘুমাতে গিয়ে নিজ ঘরে সাপের কামড়ের শিকার হয়। রানাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও ভ্যাকসিনের অভাবে তারও মৃত্যু হয়।
এদিকে গত সাতদিনে ভক্তিপুর দোলাপাড়াসহ খাপুর, চূহড়, গাচুয়াটারী গ্রামে তাজনগর, বিশ্বনাথ খাপুরসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে অন্তত ১৩ জন সাপের কামড়ে আক্রান্ত হয়েছেন।
এদের মধ্যে দোলাপাড়া গ্রামে লোকমান (৩৫), মৃত রানা মিয়ার বাবা আলম মিয়া (৩৮), আব্দুর রউফ (৫২), জয়নাল আবেদীন (৬০), শফিকুল ইসলাম (২৫), বকুল মিয়া (৬০), চূহড় গ্রামের জিন্নাহ্ আলী (৫২), বিশ্বনাথ খাপুর গ্রামের রাশেদা বেগমের (৪০)। অন্যদের নাম জানা যায়নি।
আহতরা ইতিমধ্যে মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও বিভিন্ন কবিরাজের কাছে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
খাপুর গ্রামের আতোয়ার রহমান বলেন,হঠাৎ করে গ্রামে ছোট বিষাক্ত কালো সাপের উপদ্রব বাড়ছে। গত সাতদিনে আশপাশের গ্রামের অন্তত ১৫ জন সাপের কামড়ে আক্রান্ত হয়েছেন। গরু-ছাগলও নিরাপদ নয়। সর্বশেষ গত শুক্রবার সকালে দোলাপাড়া গ্রামে সাপের কামড়ে একটা ছাগল মারা গেছে।
ভক্তিপুর দোলাপাড়া গ্রামের পল্লী চিকিৎসক গোলজার হোসেন বলেন, সাপের আতঙ্কে গ্রামের মানুষ বাসা ছেড়ে বাইরে থাকছে। সাপের ছোবলে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। আরও অনেকে আক্রান্ত হয়েছে। হাসপাতালে সাপের কামড়ের প্রতিষেধক ভ্যাকসিন নেই, এ কারণে গ্রামের মানুষের মনের মধ্যে ভয় কাজ করছে।
সাপের কামড়ে মৃত্যু হওয়া রানা মিয়ার মা রানু বেগম ও বাবা আলম মিয়া বলেন, হাসপাতালে সাপের কামড়ের চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত ওষুধ নেই। ভ্যাকসিনের অভাবে আমাদের ছেলের অকাল মৃত্যু হয়েছে।
-এএ