আওয়ার ইসলাম: বিএসটিআইয়ের লাইসেন্সধারী ১৪টি কোম্পানির পাস্তুরিত দুধে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকারক সীসা এবং অ্যান্টিবায়োটিকের অস্তিত্ব থাকায় দুধ উৎপাদন, সরবরাহ ও বিক্রি পাঁচ সপ্তাহের জন্য বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
রোববার বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মুহাম্মদ ইকবাল কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
লাইসেন্সধারী সব ব্র্যান্ডের পাস্তুরিত দুধে অ্যান্টিবায়োটিক ও ডিটারজেন্টসহ বিভিন্ন ক্ষতিকর উপাদান আছে কি-না সে বিষয়ে চারটি প্রতিষ্ঠানের ল্যাবের পরীক্ষা প্রতিবেদন নিয়ে শুনানি শেষে এ আদেশ দেন আদালত।
আদালতে বিএসটিআইর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার সরকার এম আর হাসান। এ বিষয়ে রিট আবেদনকারীর পক্ষে ব্যারিস্টার অনীক আর হক, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের পক্ষে ব্যারিস্টার মুহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম শুনানি করেন।
আদালতের দ্বারা নিষিদ্ধ করা প্রতিষ্ঠান এবং ব্র্যান্ডগুলো হল: ১. আফতাব মিল্ক অ্যান্ড মিল্ক প্রোডাক্ট লিমিটেড (আফতাব), ২. আকিজ ফুড অ্যন্ড বেভারেজ (ফার্ম ফ্রেশ), ৩. অ্যামেরবিকান ডেইরি লিমিটেড (মু) ৪. বাংলাদেশ দুগ্দ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় ইউনিয়ন লিমিটেড (মিল্ক ভিটা), ৫. বারো আউলিয়া ডেইরি (ডেইরি ফ্রেশ), ৬. ব্র্যাক (আড়ং মিল্ক), ৭. ড্যানিশ ডেইরি ফার্ম লিমিটেড (আয়রান)।
৮. ইছামতী ডেইরি লিমিটেড (পিউরা), ৯. ইগলু ডেইরি লিমিটেড (ইগলু), ১০. প্রাণ ডেইরি লিমিটেড (প্রাণ মিল্ক), ১১. উত্তরবঙ্গ ডেইরি খামার (মিল্ক ফ্রেশ), ১২. জিহান মিল্ক এন্ড ফুড প্রসেসিং, ১৩. শিলাইদাহ ডেইরি (আলট্রা মিল্ক), ১৪. পূর্ব বাংলা ডেইরি প্রডাক্টস (আরওয়া)
এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বায়োমেডিক্যাল রিসার্চ সেন্টারের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক আ ব ম ফারুক গত ২৫ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্মেসি লেকচার থিয়েটারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কিছু খাদ্যের গুণগতমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেন। এরপর দ্বিতীয় দফা পরীক্ষায়ও পাস্তুরিত দুধের ১০ নমুনার সবক’টিতে অ্যান্টিবায়োটিক পাওয়া গেছে বলে ১৩ জুলাই এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করেন, ঢাবির বায়োমেডিক্যাল রিসার্চ সেন্টার সাবেক পরিচালক অধ্যাপক আ ব ম ফারুক। তার এ প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করা হয়।
গত ১৪ জুলাই এক আদেশে বিএসটিআইয়ের লাইসেন্সধারী সব ব্র্যান্ডের পাস্তুরিত দুধে অ্যান্টিবায়োটিক ও ডিটারজেন্টসহ বিভিন্ন ক্ষতিকর উপাদান আছে কিনা, তা এক সপ্তাহের মধ্যে পরীক্ষা করতে চারটি ল্যাবকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
চারটি ল্যাব হলো- ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবরেটরি, বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ, ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ডায়রিয়াল ডিজিজ রিসার্চ, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি) ও সাভারের বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণাগার। এরপর ২৩ জুলাই তিন সংস্থার প্রতিবেদন হাতে পায় বিএসটিআই। এরপর এগুলো আদালতে জমা দেন।
এছাড়া নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের তৈরি করা (বিসিএসআইআর ও পরমাণু শক্তি কমিশনের ল্যাবে পরীক্ষা করা) ১১ কোম্পানির দুধ পরীক্ষার প্রতিবেদনও আদালতে দেয়া হয়। একইসঙ্গে উপস্থাপন করা হয় ঢাবি অধ্যাপক আ ব ম ফারুকের প্রতিবেদনও।
-এএ