আওয়ার ইসলাম: আখেরী মুনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হল চরমোনাইয়ের অগ্রহায়ণ মাসের বার্ষিক মাহফিল। গত ২৬ নভেম্বর বাদ জোহর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করী, পীর সাহেব চরমোনাই এর উদ্বোধনী বয়ানের মাধ্যমে শুরু হয় এ মাহফিল।
মাহফিলে প্রধান অধিবেশন মোট ৭টি। তন্মধ্যে আমীরুল মুজাহিদীন হযরত পীর সাহেব চরমোনাই ৫টি ও নায়েবে আমীরুল মুজাহিদীন মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম, শায়েখে চরমোনাই ২টি অধিবেশনে বয়ান পেশ করেন।
আজ সকাল ৮.৩০টায় আমীরুল মুজাহিদীন মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম, পীর সাহেব চরমোনাই এর আখেরী মুনাজাতের মাধ্যমে সমাপ্ত হয় চরমোনাই মাহফিল।
মুনাজাতে হযরত পীর সাহেব চরমোনাই দেশ, মানবাত, ইসলাম ও দেশের মানুষের শান্তি ও কল্যাণের জন্য দুয়া করেন। বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠা এবং ইসলাম বিরোধী, মানবতাবিরোধী অপশক্তির হিদায়াত কিংবা ধ্বংসের জন্য দুয়া করেন তিনি।
আখেরী বয়ানে হযরত পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, মানুষ যখন আল্লাহবিমূখ হয়ে যায় তখন মানুষের মধ্যে মানবতা থাকে না বিধায় তারা যেকোনো অপরাধে জড়িয়ে পরে। সুতরাং আমাদের সবার মধ্যে আল্লাহভীতি এবং আল্লাহ ও রাসূলের পূর্ণ আনুগত্য থাকতে হবে। আল্লাহ ও তার রাসূল সা. মনোনীত দ্বীন ব্যতীত অন্য কোনো তন্ত্র-মন্ত্র কখনোই গ্রহণ করা যাবে না।
যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আদর্শ ব্যতীত অন্য আদর্শ গ্রহণ করে কিংবা সে আদর্শের দিকে লোকদিগকে আহবান করে, নিশ্চয়ই তারা পথভ্রষ্ট।
মাহফিলের মূল ৭টি বয়ান ছাড়াও এতে মূল্যবান বয়ান পেশ করেন, পীর সাহেব চরমোনাই রহ. এর খলীফা মাওলানা মুজিবুর রহমান (কালিশুরী হুজুর), মাওলানা আব্দুল মজিদ (পীর সাহেব মোড়েলগঞ্জ), মাওলানা সেকান্দার আলী সিদ্দিকী (পীর সাহেব কাঠীপাড়া), আল্লামা নূরুল হুদা ফয়েজী (পীর সাহেব কানুদাসকাঠী), দক্ষিণ আফ্রিকা দারুল উলুম-এর মুহতামীম মাওলানা মুফতী আমজাদ হোসাইন, চরমোনাই আলিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও পীর সাহেব চরমোনাই রহ. এর সাহেবজাদা মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী, চরমোনাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুফতী সৈয়দ এছহাক মুহাম্মাদ আবুল খায়ের, পীর সাহেব চরমোনাই রহ. এর সাহেবজাদা মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ জিয়াউল করীম, চরমোনাই জামেয়ার মুহাদ্দিস মুফতী নূরুল আলম, চরমোনাই আলিয়ার প্রধান মুফাস্সির মাওলানা গাজী মুহাম্মাদ জাফর ইমাম, আলিয়ার মুহাদ্দিস মাওলানা নিজামুল ইসলাম, মাওলানা মাহমুদুল হাসান অলিউল্লাহ (পীর সাহেব বরগুনা) সহ দেশবরেণ্য উলামায়ে কিরামগণ।
আজ আখেরী মুনাজাতে অংশগ্রহণ করেন বরিশাল সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ সাইদুর রহমান রিন্টু, বরিশালের প্রশাসনিক পদস্থ কর্মকর্তা, বরেণ্য শিক্ষাবিদ, লেখক, গবেষক, সাংবাদিক ও বিভিন্ন পেশাজিবী গন্যমাণ্য ব্যক্তিবর্গ।
এ বছর চরমোনাই মাহফিলে এসে মোট চারজন ব্যক্তি ইন্তেকাল করেন। তন্মধ্যে একজন হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ও অপর তিনজন বার্ধক্যজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেন। এদের সকলের নামাজে জানাজা মাহফিলের স্টেজেই অনুষ্ঠিত হয়। জানাজার পরে স্বজনদের নিকট লাশ হস্তান্তর করা হয়।