ইকবাল আজিজ
কক্সবাজার
কক্সবাজারে শুরু হওয়া দুই দিনের ওজাহাতি জোড়ের প্রথম দিনে বিপুল পরিমাণ লোক সমাগম হয়েছে। ইজতেমার নির্ধারিত সীমানা পেরিয়ে আশপাশে অবস্থান নেয় আগত মুসল্লিরা।
শুরুর দিনে অন্তত দুই লাখ লোক অংশগ্রহণ করেছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। বুধবার (৭ নভেম্বর) বাদ মাগরিব আখেরী মোনাজাত। এতে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনায় বিশেষ দোয়া করা হবে বলে জানান আয়োজক কমিটির অন্যতম সদস্য মাওলানা মোহসেন শরীফ।
কক্সবাজারে ওলামায়ে কিরাম ও তাবলিগ জামাতের দুইদিনব্যাপী জোড় মঙ্গলবার (৬ নভেম্বর) ফজরের নামাজের পর আমবয়ানের মাধ্যমে শুরু হয়েছে। সকালে বয়ান করেন মুফতি মাওলানা মোরশেদুল আলম চৌধুরী। এরপর কিত্তা ও হালকাওয়ারী তালিম চলে।
বাদে জুহর আলোচনা করেন কাকরাইলের প্রধান মুরব্বি আহলে শুরা হাফেজ ক্বারী মাওলানা জুবাইর আহমদ। বাদ আছর কক্সবাজার তাবলিগ জামাতের অন্যতম মুখপত্র মাওলানা আতাউল করিম, প্রকৌশলী আবদুল মুকিব এর সুযোগ্য সন্তান মাওলানা আবদুল বার। রাত ১০ টার দিকে এশার নামাজ শেষে প্রথম দিনের কার্যক্রম সমাপ্ত হয়।
সমাপনী দিন বুধবার ফজরের নামাজের পর চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদরাসার সিনিয়র শিক্ষক মুহাদ্দিস মুফতি মাওলানা জসিম উদ্দিন আলোচনা করবেন।
সকাল ৯টা থেকে জেলার শীর্ষস্থানীয় আলেমগন অালোচনা করবেন। তারা তাবলীগে সৃষ্ট মতানৈক্য নিয়ে আলোচনা ও সংকট সমাধানের দিকনির্দেশনা দিবেন। মাগরিব নামাজের পর অাখেরী মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
এদিকে, দুই দিনব্যাপী জোড়ের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে। প্রথম দিনের অায়োজনে কোন ধরণের বিশৃঙ্খলা দেখা যায়নি।
পুরা এলাকায় তিন স্তরে দায়িত্ব পালন করছে জেলা পুলিশের ৩৬২ সদস্য। সেখানে সাদা পোশাকধারী রয়েছে ৫২ জন।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন জানান, সফলভাবে ইজতেমা সম্পন্ন করতে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষার্থে পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে।
তিনি জানান, কিত্তাওয়ারী পুলিশের অবস্থানের পাশাপাশি চারিদিকে নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করা হয়েছে।
জরুরি অবস্থা মোকাবেলায় স্থাপন করা হয়েছে সাব কনট্রোল। সেখানে ‘স্ট্যান্ডবাই’ আলাদা ফোর্স অবস্থান করছে। হলিডে মোড় থেকে লাবণি পয়েন্ট পর্যন্ত গাড়ি মোবাইল টিম রয়েছে। আশপাশের এলাকায় দায়িত্ব পালন করছে ফুট পেট্রল।
প্রথম দিন আকাশ কুয়াশাচ্ছন্ন ও মৃদু শীত অনুভুত হলেও প্রভাব ফেলেনি তাবলীগের আয়োজনে। প্রচুর লোক সমাগম হয়।
সোমবার দুপুরের পর থেকে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন ইজতেমা প্রাঙ্গনে জমায়েত হয়ে যায়। চট্টগ্রাম ও ঢাকা থেকে বেশ কয়েকটি জামাত ইজতেমায় যোগ দেয়।
দেশের বাইরের বেশ কয়েকজন তাবলিগের সাথী ইজতেমা প্রাঙ্গণে দেখা গেছে। উপজেলাভিত্তিক তাবুতে মুসল্লিরা অবস্থান নেয়।
কক্সবাজার তাবলীগ জামাতের মুখপত্র মাওলানা আতাউল করিম জানান, ইজতেমার মূল তাবুর বাইরে ৮ উপজেলার জন্য ১০টি খিত্তা (অবস্থানের তাবু), মুরব্বি, ওলামা মাশায়েশ ও ভিআইপিদের জন্য ১টি করে খিত্তা তৈরী করা হয়েছে।
আগত মুসল্লিদের জন্য অস্থায়ী ভিত্তিতে আড়াইশ টয়লেট, ৫০টি ডাস্টবিন এবং প্রায় ১০০ টিওবওয়েল স্থাপন করা হয়েছে। নির্মাণ করা হয়েছে ৪টি পাহারাঘর। নিয়োজিত করা হয়েছে প্রায় ৭০০ স্বেচ্ছাসেবক।