আওয়ার ইসলাম: নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে আদমজী ইপিজেডের রপ্তানিমুখী একটি পোশাক কারখানার বকেয়া বেতন-বোনাসের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শ্রমিকরা।
এ সময় বাধা দিতে গেলে পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে ১২ পুলিশসহ অর্ধশতাধিক শ্রমিক আহত হয়েছেন। এ সময় শ্রমিকরা বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর করে এবং একটি কাভার্ডভ্যানে আগুন ধরিয়ে দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার সকালে আদমজী ইপিজেডের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নেয় সোয়াদ ফ্যাশনের শ্রমিকরা। পুলিশ তাদের সরিয়ে দিতে চাইলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। পরে শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে। সেখন থেকে তাদের সরিয়ে দিতে গেলে পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়।
অমুসলিমদের সাথে যেমন ছিলেন রাসূল সা.
এ সময় শ্রমিকরা বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর করে এবং একটি কাভার্ডভ্যানে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে ও শ্রমিকদের ওপর লাঠিচার্জ করে। এতে তিন পুলিশ সদস্যসহ আহত হন অর্ধশতাধিক। সেখান থেকে ৭ শ্রমিককে আটক করা হয়েছে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আহত শ্রমিকদের বিভিন্ন স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
সোমবার সিদ্ধিরগঞ্জে বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। শ্রমিকদের অভিযোগ, গত ৩-৪ মাস ধরে তারা বেতন পাচ্ছেন না।
এছাড়া বোনাস, ছুটির টাকা ও রিজার্ভ ফান্ডের টাকাও পরিশোধ করা হয়নি। এর মধ্যে সাড়ে ৩ হাজার কর্মরত শ্রমিককে কিছু না বলে হঠাৎ করে কারখানাটি গত ২১ সেপ্টেম্বর করে বন্ধ করে দেয় মালিকপক্ষ। পরের দিন ইপিজেডের প্রধান ফটকে বন্ধের নোটিশ দেখে শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে।
পরে শিল্প পুলিশ বন্ধ কারখানার মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ২২ অক্টোবর বেতনা-বোনাস পরিশোধের আশ্বাস দিলে শ্রমকিরা সড়ক অবরোধ তুলে নেয়। বেতন পরিশোধের পূর্বনির্ধারত তারিখ অনুযায়ী সোমবার ইপিজেড এলাকায় শ্রমিকরা গেলে পুলিশ তাদের ইপিজেড ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়নি।
এ সময় পুলশ ও শ্রমিকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এক পর্যায়ে শ্রমিকরা শিমরাইল-নারায়ণগঞ্জ সড়কের ইপিজেড এলাকায় একটি কভার্ডভ্যানে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং যানবাহন ভাংচুর করতে থাকে। অবস্থা বেগতিক দেখে পুলিশ কয়েক রাউন্ড টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে।
নারায়ণগঞ্জ শিল্প পুলিশ সুপার জাহিদুর রহমান জানান, শ্রমিকরা তাদের বকেয়া বেতনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভকালে একটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও অর্ধশতাধিক যানবাহন ভাংচুর করে। এ সময় বাধা দিলে তারা পুলিশের ওপর হামলা চালায়।
পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে কয়েক রাউন্ড টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে। পরে বেপজা কর্তৃপক্ষ, শিল্প পুলিশ সুপার জাহিদুর রহমান, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি আব্দুস সাত্তার মিয়া, নাসিক প্যানেল মেয়র-২ মতিউর রহমান মতি বন্ধ ঘোষিত সোয়াদ কারখানার মালিক পক্ষের সঙ্গে সকাল ১১টার দিকে বৈঠক করেন।
বৈঠকে আগামী ১৫ নভেম্বর শ্রমিকদের বকেয়া বেতনাদি পরিশোধের আশ্বাস দিলে তারা ৫ ঘণ্টা পর দুপুর ১টার দিকে সড়ক অবরোধ তুলে নেয়।
তিনি আরও জানান, পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ, গাড়ি ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ অভিযাগে ৩ শ্রমিককে আটক করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় ১২ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। তাদের নারায়ণগঞ্জের খানপুর হাসপাতলসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অারো পড়ুন-
আমিনুল ইসলাম মামুন; শোলাকিয়া থেকে কোটি হৃদয়ে
যুক্তরাজ্যের স্কুলগুলোতে জনপ্রিয় হয়ে ওঠছে হিজাব