আওয়ার ইসলাম: মানবতার বিবেক হিসেবে পরিচিত জাতিসংঘের সব প্রতিষ্ঠানেই যৌন হয়রানি ও নির্যাতনের ঘটনা ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত দ্য গার্ডিয়ানের এক তদন্ত প্রতিবেদনে এমনটাই উঠে এসেছে।
ওই প্রতিবেদনটিতে বলা হচ্ছে, বিশ্ব জুড়ে সংস্থাটির আঞ্চলিক অফিসগুলোতে অহরহই এমন ঘটনা ঘটছে। কিন্তু শীর্ষ কর্মকর্তারা একদমই নিশ্চুপ। এমনকি অগ্রাহ্য করা হচ্ছে অভিযোগকারীদের।
বেশ কয়েকজনের ভুক্তভোগীর সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে ওই প্রতিবেদন ছেপেছে দ্য গার্ডিয়ান। সেখানে বলা হয়েছে, যৌন হয়রানির ব্যাপারে সংস্থাটিতে এক ধরনের নীরবতার সংস্কৃতি চালু রয়েছে। এর অভিযোগ প্রক্রিয়াও ত্রুটিপূর্ণ। অভিযোগ করলে ভুক্তভোগীরাই উল্টো বিপদে পড়েন।
সাক্ষাৎকার দেয়া নারীদের মধ্যে ১৫ জন জানিয়েছেন যে, গত পাঁচ বছরের মধ্যে তারা যৌন হয়রানির বা হামলার শিকার হয়েছেন। তাদের এ অভিযোগের মধ্যে কটূক্তি থেকে শুরু করে ধর্ষণও রয়েছে।
এদের মধ্যে অন্তত ৭ নারী তাদের সঙ্গে যা ঘটেছে সে ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে প্রচারণাকারী অধিকার কর্মীরা বলেছেন, চাকরি হারানোর ভয় কিংবা অভিযোগ করে কিছুই হবে না সেই হতাশা থেকে অনেক নির্যাতিতাই এ ব্যাপারে এগোতে চান না।
বিভিন্ন সংস্থায় পরামর্শক হিসেবে কাজ করেন এমন একজন নারী বলেছেন, আপনি যদি অভিযোগ করেন তাহলে আপনার ক্যারিয়ার একেবারেই শেষ। বিশেষ করে আপনি যদি পরামর্শক হন। এটা অনেকটা অব্যক্ত ব্যাপার।
ওই নারী বলেন, বিশ্ব খাদ্য সংস্থায় কাজ করার সময় নিজের সুপারভাইজারের হাতে যৌন হয়রানির শিকার হন তিনি।
জাতিসংঘ এসব অভিযোগ স্বীকার করে জানিয়েছে, এ বিষয়গুলো উদ্বেগের। তবে সংস্থাটির মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস যৌন হয়রানির অভিযোগের বিষয়ে অগ্রাধিকার এবং এ বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বনের কথা জানিয়েছেন।
১০টিরও বেশি দেশে কর্মরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাতিসংঘের কর্মীরা
গার্ডিয়ানের কাছে যৌন হয়রানির বিষয়ে কথা বলেছেন। ভিন্ন দপ্তরের তিন নারী জানিয়েছেন, তারা যৌন হয়রানি বা যৌন হামলার বিষয়ে অভিযোগ করেছিলেন। এরপর তাদেরকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে বা চাকরিচ্যুত করার হুমকি দেয়া হয়েছে।
সংস্থার চার বর্তমান ও সাবেক কর্মী জানান, যৌন হামলার শিকার হওয়ার পর তারা চিকিৎসাসেবা অথবা পরামর্শ পর্যন্ত পাননি। এদের মধ্যে একজন চাকরিচ্যুত হয়েছিলেন।
তিনি জানিয়েছেন, হামলার পর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তিনি তিনজন আলাদা নারীরোগ বিশেষজ্ঞকে দেখিয়েছেন।
এইচজে