আওয়ার ইসলাম: ভারতে তরিঘড়ি তিন তালাক বিল পাশ নিয়ে সমালোচনা অব্যাহত রয়েছে। মুসলিম সংস্থা ও ইসলামিক স্কলারসহ নানা শ্রেণির মানুষ এ আইনের বিপক্ষে যুক্তি তুলে ধরছেন।
গত বৃহস্পতিবার লোকসভায় এ সংক্রান্ত বিল পাস হওয়ার পর থেকেই তীব্র সমালোচনা অব্যাহত রয়েছে।
বিলটির প্রতিক্রিয়ায় জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের পশ্চিমবঙ্গের সম্পাদক মুফতি আব্দুস সালাম বলেছেন, জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ আগেই বলেছে, সুপ্রিম কোর্টে এ সম্পর্কিত যে রায় এসেছিল তা ছিল দ্বিখণ্ডিত রায়। এ নিয়ে বিচারকদের মধ্যে মতভেদ ছিল। স্বামী যদি একত্রে তিন তালাক দেয় তাহলে শরীয়া অনুসারে বিয়ে ভেঙে যাবে এবং তা আমরা মেনে চলতে বাধ্য। এই জায়গায় আইনের কোনো হস্তক্ষেপ আমরা চাই না।
তিনি বলেন, ‘আমরা চাই না কেউ একত্রে তিন তালাক দিক। ভুলভাবে তালাক দেয়ার প্রবণতা বন্ধ করতে ওলামা ও মুফতিরা এক্ষেত্রে নানাভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও দেশের আইনে যদি বলা হয় তিন তালাক দিলে তা সাব্যস্ত হবে না, তাহলে তা ঠিক হবে না। কারণ, এটা শরীয়ার বিষয়। এক্ষেত্রে আমরা কোনো আইন চাই না। ধর্মীয়ভাবে যে জিনিসটা ভুলভাবে চলছে, তাকে আমরা ধর্মীয় পথেই বন্ধ করতে চাই।’
মুফতি আব্দুস সালাম বলেন, ‘ওই বিষয়ে জমিয়তের দিল্লির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যরাও বলেছেন এবং আমাদের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ মাদানী সাহেবও বলেছেন, আইন শাস্তি দিতে চাইলে দেবে কিন্তু আমরা এটাকে কোনোভাবেই মেনে নিতে পারব না। এ নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে তা নিয়ে দুই/তিন দিনের মধ্যে দিল্লিতে জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের ওয়ার্কিং কমিটির সভায় পরবর্তী গাইডলাইন ঠিক হবে যে আমরা কোন পথে চলব।’
বৃহস্পতিবার লোকসভায় মুসলিম নারীদের তাৎক্ষণিক তালাকের বিরুদ্ধে ভারতীয় সংসদে বিল পেশ করেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। ওই দিনই সংসদে দীর্ঘ ৬ ঘণ্টা বিতর্ক শেষে সন্ধ্যায় বিলটি পাস হয়। নতুন ওই বিল আইনে পরিণত হলে তাৎক্ষণিক তালাকে তিন বছর পর্যন্ত কারাবাসের পাশাপাশি জরিমানা দিতে হবে।
তাছাড়া কোনো ব্যক্তি যদি নিজের স্ত্রীকে এক সঙ্গে তিন তালাক তা সে মুখে উচ্চারণ করে, লিখিত, মোবাইলে, হোয়াটসঅ্যাপে, ফেসবুক, ইমেইল প্রভৃতি মাধ্যমে দিলে তা বেআইনি বলে গণ্য হবে।
লোকসভায় ওই বিল সম্পর্কে মজলিশ-ই ইত্তেহাদুল মুসলেমিন প্রধান ব্যারিস্টার আসাদউদ্দিন ওয়াইসির সংশোধনী প্রস্তাব ২ ভোটের মোকাবিলায় ২৪১ ভোটে খারিজ হয়ে যায়। ৪ সদস্য ভোটাভুটিতে অংশ নেননি।
ওয়াইসি ছাড়াও এদিন বিজেডি এমপি ভর্তৃহরি মহতাব, কংগ্রেস এমপি সুস্মিতা দেব, সিপিআইএমের এ সম্পতের সংশোধনী প্রস্তাব পেশ করা হলেও সরকারপক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে তা খারিজ হয়ে যায়।
‘তিন তালাক বিল শুধু মুসলিম নয় হিন্দু নারীদেরও স্বার্থ বিরোধী’