শাহনূর শাহীন: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল ট্রাম্প কর্তৃক জেরুসালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণার পর থেকে মুসলিম বিশ্ব চরম ক্ষুব্ধ। প্রতিরোধ প্রতিবাদে ফিলিস্তিনের সাথে একাত্ততা ঘোষণা করে উত্তাল সময় পার করছে গোটা মুসলিম বিশ্ব।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তায়্যিব এরদোগানের আহ্বানে ওআইসির জরুরি বৈঠকে জেরুসালেমকে ফিলিস্তিনের রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। অংশ নিয়েছে ওআইসিভুক্ত বিশ্বের সকল মুসলিম রাষ্ট্র। সবার সরব উপস্থিতি ও জোরালো ভূমিকা পালন করছে মুসলিম বিশ্বের নেতৃবৃন্দ। এক্ষেত্রে একমাত্র সৌদি আরব কিছুটা ব্যতিক্রম।
সৌদি আরবের ভূমিকায় মুসলিম বিশ্ব কিছুটা হতাশ এবং ক্ষুব্দ। ওআইসির সম্মেলনে উপস্থিত হননি সৌদি বাদশা বা উচ্চ পর্যায়ের কোনো কর্মকর্তা। সৌদি বাদশার পক্ষ থেকে জেরুসালেম ইস্যুতে গণমাধ্যমে ফিলিস্তিনের পক্ষে বক্তব্য বিবৃতি দু’একটা আসলেও তা ছিলো খুবই জরাজীর্ণ।
এ জন্য অনেকেই মনে করছেন সৌদি আরবের নীরব সম্মতি নিয়েই মার্কিন প্রেসিডেন্ট এমন দুঃসাহসিক সিদ্ধান্ত নেন। সৌদি বাদশা সালমান বিন আব্দুল আজিজের রাজ সিংহাসনের ভাবি উত্তরসুরি মুহাম্মদ বিন সালমান পরিণত হচ্ছেন সমালোচকদের লক্ষবস্তুতে।
অবশ্য ফিলিস্তিনের পরাষ্ট্রমন্ত্রী সম্প্রতি এক বক্তব্যে বলেন, সৌদি আরব ফিলিস্তিনের অধিকারের পক্ষেই রয়েছেন কিন্তু ইসরাইলি মিডিয়া সৌদি আরবের ব্যাপারে নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশ করে আমাদের প্রতিপক্ষ বানানোর ষড়যন্ত্র করছে।
কিন্তু তাতেও কাটেনি ঘোর। কাটেনি সন্দেহ-সংশয় বা বিশ্বাস অবিশ্বাসের দ্বন্ধ। দ্বিধা-দ্বন্দ্বের এই অমানিশা দূর করতে ঝটিকা সফরে সৌদি আরবে গেলেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। পৃথক পৃথক বৈঠক করেছেন সৌদি বাদশা সালমান এবং যুবরাজ মুহাম্মাদ বিন সালমানের সঙ্গে।
সবার মনে এখন একটাই প্রশ্ন কী আলোচনা হয়েছে তাদের মধ্যে। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক গণমাধ্যম আল আরাবিয়া বলেছে, ফিলিস্তিনের বর্তমান অবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেই সঙ্গে পূর্ব জেরুসালেমকে রাজধানী করে কিভাবে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র, যেটা ফিলিস্তিনিদের বৈধ অধিকার, প্রতিষ্ঠা করা যায় তার উপায় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
ফিলিস্তিনিদের প্রতি সৌদি আরবের সমর্থন অব্যাহত রাখার কথা বলেছেন বাদশা সালমান।
বৈঠকে সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রী আব্দেল আল-জুবায়ের ও দেশটির গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান খালেদ আল হুমাইদান এবং ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আল আরাবিয়ার খবরে বলা হয়, রিয়াদে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে কয়েকজন রাজপুত্র এবং ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তবে এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না বাদশা সালমানের পরবর্তী উত্তরাধিকারী মুহাম্মাদ বিন সালমান। মূলত তিনিই বর্তমান বাদশাকে যাবতীয় পরামর্শ দিচ্ছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
এসএস