আট বছর ধরে মেয়েকে ধর্ষণের মামলায় সৎবাবা আরমান হোসেন ওরফে সুমন (৩৮) স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
বুধবার ঢাকার মহানগর হাকিম আহসান হাবীবের আদালতে ১৬৪ ধারায় দেয়া এই জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।
এর আগে এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সোশ্যাল মিডিয়া মনিটরিং বিভাগের পরিদর্শক নাজমুল নিশাত আসামিকে আদালতে হাজির করেন। পরে জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন। জবানবন্দি রেকর্ডের পর আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার এজাহারে তরুণী উল্লেখ করেন, আরমান হোসেন ওরফে সুমন তার সৎ বাবা। ২০০৫ সালে তরুণীর মা সুমনের সঙ্গে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এর এক বছর পর থেকে মা ও সৎ বাবার সঙ্গে বসবাস শুরু করে মেয়েটি। মোহাম্মদপুরের নূর জাহান রোডে এক ভাড়া বাসায় থাকতেন তারা। তার মা চাকরির সুবাদে সকালেই বাসা থেকে বের হয়ে যেতেন অফিসে। ২০০৮ সালে মেয়েটি সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী, সেমময় ওই বাসায় তাকে ধর্ষণ করেন তার সৎ বাবা সুমন। মেয়েটির আপত্তিকর ছবি তোলেন মোবাইল ফোনে। কাউকে না জানাতে তিনি হুমকি দেন মেয়েটিকে।
তিনি এতে বলেন, ভয়ে ও মায়ের স্বামী হওয়ায় মেয়েটি বিষয়টি গোপন রাখেন। এরপর নগ্ন ছবি প্রকাশের ভয় দেখিয়ে তার মায়ের অবর্তমানে বাসায় দিনের পর দিন মেয়েটিকে ধর্ষণ করা হয়েছে। ২০১২ সালে নূর জাহান রোড থেকে মগবাজার দিলু রোডে বাসা ভাড়া নিয়ে তারা চলে আসেন। এ বাসাতেও সুমন তাকে প্রায়ই নির্যাতন করে আসছিলেন।
এজাহারে আরো বলা হয়েছে, ২০১৫ সালে মেয়েটি অন্তঃস্বত্ত্বা হয়ে পড়লে সুমন তাকে হাসপাতালে নিয়ে গর্ভপাত ঘটান। এরপরও তার ওপর নির্যাতন থামেনি। ২০১৬ সালের ৫ ডিসেম্বর তরুণী ওই বাসা ছেড়ে তার মগবাজারে খালার বাসায় ওঠেন। সেখানেও তাকে কুপ্রস্তাব দিয়ে তার কাছে যেতে বলতেন ও নানাভাবে হুমকি দিতেন। কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ক্লিপ তরুণীর এক বন্ধুর ফেসবুক ইনবক্সে পাঠিয়ে হুমকি দেন সুমন। তিনি ওই তরুণীর ছবিযুক্ত করে দুটি ফেসবুকে দুটি নকল আইডি খোলেন বলেও তরুণীর অভিযোগ।
এ বিষয়ে তরুণী চলতি বছরের ২১ জুন রমনা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। এরপরও ওই ফেসবুক আইডি দুটি থেকে তরুণীর বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হত।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, তরুণীর মা বিষয়টি জানলেও মেয়ের ওপর নির্যাতন বন্ধ করতে পারেননি।
একটি অবৈধ সম্পর্ক, ভয়ংকর শেষ পরিণতি