ভারী বর্ষণ ও উজান নেমে আসা ঢলে দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। বিভিন্ন নদ নদীর পানি বৃদ্ধি এতে চরম দুরবস্থায় পড়েছে তিন জেলার লাখ লাখ পানিবন্দী মানুষ। এদিকে বন্যার পানিতে ফসলি জমি, সবজি ক্ষেত, পাট ক্ষেত ও আখ ক্ষেত তলিয়ে গেছে অনেক জায়গায়। তাছাড়াও জামালপুর সাতটি উপজেলায় ৩১৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জেলায় স্কুল, কলেজ, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন এক সপ্তাহ ধরে পানিতে তলিয়ে আছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে জানা যায়,
জামালপুর সাতটি উপজেলায় ৩১৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবন এক সপ্তাহ ধরে পানিতে তলিয়ে আছে।
জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, বন্যার কারণে জেলার ৩১৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৩০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উচ্চ বিদ্যালয় ৫০টি, কলেজ ৮টি ও ২৮টি মাদ্রাসা। জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের পাউবো সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘন্টায় যমুনার বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে ৮৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়।
জামালপুরের ইসলামপুরে বানে ভাসছে লাখো মানুষ। বানভাসী মানুষেরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। প্রয়োজনের তুলনায় ত্রাণ অপ্রতুল বলে জানা গেছে। ইসলামপুরের পাথর্শী ইউনিয়নের বেড়েগাঁও এলাকায় বৃহস্পতিবার নাজিম উদ্দিনের ছেলে আরিফ (২) পানিতে পড়ে মারা গেছে।
কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ও ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে বিপদসীমার ১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
রাজিপুর উপজেলার বটতলা এলাকায় পাকা সড়কের ১৫ ফুট ধসে গেছে। এতে করে পাশ্ববর্তী বালিয়ামারী, জালছিড়ার পাড়, মিয়া পাড়া, বটতলা মন্ডলপাড়া ও কলেজপাড়াসহ ৭ গ্রামের মানুষের যোগাযোগে দুর্ভোগ বেড়েছে। এসব এলাকার লোকজন পাশ্ববতী সড়ক দিয়ে ৮ থেকে ১০ কিলোমিটার ঘুরে রাজিবপুর উপজেলা শহরে যেতে হচ্ছে।
মৌলভীবাজারের বন্যা পরিস্থিতি ফের অবনতি হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাত ভারী বৃষ্টি ও উজান নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি আবারও অবনতি হয়েছে। ফলে আবারও বাড়িঘর রাস্তাঘাট ডুবতে শুরু করেছে। এতে জনজীবন বিপর্যস্থ পড়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অকাল বন্যায় হাকালুকি হাওর সংলগ্ন কুলাউড়া,জুড়ি ও বড়লেখা উপজেলার ভূকশিমইল, কাদিপুর,জয়চন্ডি,জায়ফরনগর, বর্ণি, তালিমপুর, সুজানগর ও দাসেরবাজার ইউনিয়নসহ আশপাশের এলাকার প্রায় দুইলাখ মানুষ আবার পানিবন্দী পড়েন। বড়লেখা উপজেলায় বন্যার অবনতি ঘটায় উপজেলার তালিমপুর, বর্নি, সুজানগর, উত্তর শাহবাজপুর, দাসেরবাজারসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে ১৪টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়। এসব আশ্য় কেন্দ্রে বাড়িঘর তলিয়ে যাওয়া দুর্গত ২৫৩ পরিবার আশ্রয় নেয়।
-এজেড