আওয়ার ইসলাম : দলের কর্মীদের মধ্যে বিভেদ নেই, বিভেদ নেতাদের মধ্যে। নির্যাতিত কর্মীরা স্বীকৃতি চায়। আর নেতাদের মানসিকতা খাই খাই। নেতাদের এই ‘খাই খাই ভাব’ পরিহার করতে হবে।
রবিবার খুলনা জেলা স্টেডিয়ামে আওয়ামী লীগের বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, গুটি কয়েক মানুষের জন্য আওয়ামী লীগের সততার রাজনীতি প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে না। ক্ষমতা না থাকলে ক্ষমতার দাপট চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যাবে। পকেটভারী করানোর জন্য কাউকে দলে ভেড়াবেন না। ত্যাগী কর্মীদের মূল্যায়ন করবেন, দল ভারী করার জন্য কোন খারাপ লোকদের দলে নেয়ার প্রয়োজন নেই। দলের মধ্যে কলহ কোন্দল করবেন না। আওয়ামী লীগকে আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ বানাবেন না। যদি আওয়ামী লীগ নিজেদের প্রতিপক্ষ না হয় তাহলে আগামী নির্বাচনে বিজয় কেউ ঠেকাতে পারবে না।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দলের প্রেসিডিয়ামের সদস্য পিযুষ কান্তি ভট্টাচার্য এবং অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এস এম কামাল হোসেন। সম্মানিত অতিথি’র বক্তৃতা করেন শেখ হেলাল উদ্দিন এমপি।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম হানিফ এমপি, আব্দুর রহমান এমপি, বস্ত্র ও পাটপ্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম, দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য পারভীন জামান কল্পনা, মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ এমপি, হুইপ সোলাইমান জোয়াদ্দার সেলিম, বীরেন্দ্র শিকদার এমপি, প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব সাইফুজ্জামান শিখর বক্তৃতা করেন।
সভায় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি মন্ত্রী। আমার এপিএস, ভাই, আত্মীয়স্বজন যদি অপকর্ম করে, তবে আমি কি ভালো মানুষ? তাই আমি বলব, হয় এদের সংশোধন করুন, না হয় এদের পরিহার করুন।
তিনি বিএনপির সমালোচনা করে বলেন, বিএনপি এখন ‘বাংলাদেশ নালিশী পার্টি’। তাদের আছে শুধু নালিশ আর নালিশ। বিএনপির আন্দোলনের ডাক আষাঢ়ের তর্জন-গর্জনের মতোই। বিএনপি’র মরা গাঙে আর কখনো জোয়ার আসবে না। বিএনপি বলেছিল ঈদের পরে আন্দোলন করবে, কোথায় তাদের সেই আন্দোলন। দেখতে দেখতে কেটে গেছে আট বছর, আর কবে আন্দোলন হবে। রোজার ঈদ গেল, কোরবানী ঈদ গেল। আন্দোলনতো আর হল না। যে দল আন্দোলনে পরাজিত শক্তি তারা নির্বাচনে বিজয়ী হতে পারে না। এটাই হলো ইতিহাস।
তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, নির্বাচনের প্রস্তুতি নিন। কেন্দ্র ভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করুন। কেন্দ্র ভিত্তিক উঠান বৈঠক করতে হবে। আওয়ামী লীগের সমর্থক সুশীল সমাজ, ইমাম, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে তাদেরকে এই কমিটির সদস্য করার নির্দেশনা দেন তিনি। ওবায়দুল কাদের বলেন, সামনে খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। মানুষের দ্বারে দ্বারে যান। ভুল হলে জনগনের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন। মানুষের ভালোবাসার থেকে বড় কিছু নেই, তাদের অর্জন করুন।
মাদকের ভয়াবহতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই ইয়াবা তরুণদের নষ্ট করে দিচ্ছে। মাদককে না বলার জন্য তিনি অঙ্গীকার করান। সভায় আরো বক্তৃতা করেন খুলনা জেলা সভাপতি শেখ হারুনুর রশিদ, নগর সভাপতি তালুকদার আব্দুল খালেক এমপি, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান এমপি, আওয়ামী লীগ নেতা মনসুর আহম্মেদ, নজরুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম মিলন, শাহিন চাকলাদার, পঙ্কজ ভট্টাচার্য, সুভাস চন্দ্র বোস, নিজামুদ্দিন খান নিলু, ডাঃ মোজাম্মেল হোসেন এমপি, শেখ কামরুজ্জামান টুকু, সরফুদ্দিন খান, আজগর আলী, আব্দুল হাই এমপি, ফরহাদ হোসেন। খুলনা বিভাগের বিভিন্ন উপজেলা থেকে দলের প্রায় ২৫ হাজার নেতাকর্মীরা প্রতিনিধি সভায় অংশ নেয়।
-এজেড