আওয়ার ইসলাম : যুদ্ধ বিধ্বস্থ আফগানিস্তানে ঘটল একটি ব্যতিক্রম ঘটনা। কারণ ইতোপূর্বে এই দেশটিতে কখনোই ইরানবিরোধী বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়নি। শুক্রবার দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে নাগরিক সমাজের উদ্যোগে ইরান বিরোধী বিক্ষোভটি অনুষ্ঠিত হয়। আফগানিস্তানের পানি ব্যবস্থাপনা এবং বাধ প্রকল্প নিয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সমালোচনার প্রতিবাদেই ওই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।
প্রায় কয়েকশো বিক্ষোভকারী ইরান সংলগ্ন হ্যালমান্দ প্রদেশের রাজধানী লস্করগাহ শহরের রাস্তায় নেমে আসে। বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দেয়- ‘হাসান রুহানির মৃত্যু হোক’, ‘আফগানিস্তানের শত্রুদের মৃত্যু হোক’।
বিক্ষোভকারীরা আফগানিস্তানের আশরাফ ঘানি সরকারের প্রতি আহ্বান জানায় যেন, হাসান রুহানীর কথা কোন কান না দেয়। আফগানিস্তানের নদীগুলোকে যেসব বাঁধ আছে সেগুলোর সুরক্ষা দিয়ে ধরে রাখা পানির সঠিক ব্যবহারেরও আহ্বান জানায় বিক্ষোভকারীরা।
গত সোমবার ইরানের রাজধানী তেহরানে ধূলিঝড় এবং অন্যান্য পরিবেশগত ইস্যুগুলো নিয়ে অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনে হাসান রুহানি অভিযোগ করেন, আফগানিস্তানের কয়েকটি বাধ সীমান্তবর্তী কয়েকটি ইরানি অঙ্গরাজ্যের জনপদকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। এসব এলাকার মানুষেরা তাদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে।
রুহানি বলেন, ‘আমরা এই সমস্যাকে অবহেলা করবো না, যা আমাদের পরিবেশকে ধ্বংস করে দিচ্ছে।’ এসময় তিনি আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী কাজাকি, কামাল খান, বাকশাবাদ এবং সালমা বাধগুলোর নাম উল্লেখ করে সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেন।
আফগানিস্তানের রাজনীতিবিদরাও ইরানের প্রেসিডেন্টের এই বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন। তারা এ ধরণের মন্তব্যকে দেশের আভ্যন্তরীণ ব্যপারে নাক গলানো হিসেবে দেখছেন তারা। আফগান গণমাধ্যমেও রুহানীর বক্তব্যের সমালোচনা করা হয়। ডেইলি আফগানিস্তান টাইমস’র এক সম্পাদকীয়তে বলা হয়- ‘পানি আমাদের প্রয়োজন, আমাদের বিদ্যুৎ প্রয়োজন, সেচ এবং সবুজ প্রকৃতিও আমাদের চাই।’ পত্রিকাটির মতে, আফগানিস্তানের ৮০ শতাংশ পানি পার্শ্ববর্তী পাকিস্তান এবং ইরানে প্রবাহিত হয়। তাই ওই পানিকে কোন কাজে লাগাতে পারেনা আফগানিস্তান।
আফগানিস্তানে প্রথমবারের মতো ইরান বিরোধী বিক্ষোভ হলেও এ বিষয়ে কোন প্রতিকিয়া ব্যক্ত করেনি ইরান। ১৯৭৩ সালে ইরান-আফগান পানি চুক্তি সম্পন্ন হয়েছিলো। চুক্তি অনুযায়ী, হ্যালমান্দ নদীর পানি কখনোই দাবি করতে পারে না ইরান। ভয়েজ অব আমেরিকা
-এজেড