আওয়ার ইসলাম: অবসরে যাচ্ছেন দেশের প্রথম নারী বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা। আজ বৃহস্পতিবার সুপ্রিমকোর্টে তার শেষ কর্মদিবস। নাজমুন আরা সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে কর্মরত আছেন।
আগামীকাল শুক্রবার (৭ জুলাই) তার বয়স ৬৭ বছর পূর্ণ হবে। সাংবিধানিক বাধাবাধ্যকতায় আজকেই তার কর্মদিবসের শেষ দিন।।
অবসরে যাওয়ার আগে আজ দুপুরে প্রধান বিচারপতির এজলাশ কক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় ও বিকালে জাজেস লাউঞ্জে সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারকরা তাকে সংবর্ধনা প্রদান করবেন। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানার ৪২ বছরের বর্ণাঢ্য বিচারিক জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হবে।
বিচারপতি নাজমুন আরা ১৯৭৫ সালের ২০ ডিসেম্বর মুন্সেফ হিসেবে (সহকারী জজ) নিয়োগ পান। ওই নিয়োগের মধ্য দিয়েই তিনি দেশের প্রথম নারী বিচারক হিসেবে নাম লেখান। এরপর পদোন্নতি পেয়ে ১৯৯০ সালের ২০ ডিসেম্বর জেলা জজ হন ।
জেলা জজ হিসেবে যোগ্যতা ও দক্ষতার পরিচয় দিয়ে তিনি ২০০০ সালের ২৮ মে হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। এর দুই বছর পর ২০০২ সালের ২৮ মে স্থায়ী বিচারপতি হন। ২০১১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় তাকে। এরপর শপথ নেন আপিল বিভাগের প্রথম নারী বিচারপতি হিসেবে। ছয় বছর আপিল বিভাগের বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর শুক্রবার তিনি অবসরে যাবেন।
বিচারপতি নাজমুন আরা সংবিধানের ষোড়শ (বিচারপতি অপসারণ) ও ত্রয়োদশ সংশোধনী (তত্ত্বাবধায়ক সরকার) সংক্রান্ত মামলা, সেনানিবাসে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বাড়ির মামলাসহ অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ মামলার রায়দানকারী বেঞ্চের বিচারপতি ছিলেন।
তিনি নারী বিচারকদের সংগঠন বাংলাদেশ উইমেন জাজেস অ্যাসোসিয়েশনের (বিডব্লিউজেএ) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। আন্তর্জাতিক নারী আইনজীবী সংস্থায় দু’বার সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আমেরিকা, চীন, ভারত, নেপাল, থাইল্যান্ড, ইতালি, জাপান, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সম্মেলনে অংশ নেন।
নাজমুন আরা সুলতানা ১৯৫০ সালের ৮ জুলাই মৌলভীবাজারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা চৌধুরী আবুল কাশেম মইনুদ্দিন ও মাতা বেগম রাশিদা সুলতানা দ্বীন। দু’জনই প্রয়াত। তার মাতা ছিলেন ময়মনসিংহ রাঁধাসুন্দরী গার্লস হাই স্কুলের শিক্ষিকা।
তিনি ময়মনসিংহ সদরের বিদ্যাময়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৬৫ সালে মেট্রিকুলেশন, ১৯৬৭ সালে মুমিনুন্নেসা উইমেন্স কলেজ থেকে আইএ পাস করেন। তিনি বিএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন ১৯৬৯ সালে আনন্দ মোহন কলেজ থেকে।
ময়মনসিংহ ল’ কলেজ থেকে ১৯৭২ সালে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর ওই বছরের জুলাইয়ে ময়মনসিংহ জেলা আদালতে আইনজীবী হিসেবে শুরু করেন আইন পেশা। তার স্বামী কাজী নুরুল হক। তাদের বড় ছেলে কাজী সানাউল হক উপল থাকেন অস্ট্রেলিয়া।
এসএস/