যুবাইর ইসহাক; কন্টিবিউটর, আওয়ার ইসলাম
আমরা দেশে মা-বাবা ভাই বোনের সঙ্গে ঈদ করছি। পরিবার থেকে দূরে থাকলেও ঈদ উপলক্ষ্যে বাড়ি ফিরছি। নাড়ীর টানে বাড়ি ফিরে রাজধানী প্রায় শূন্য। কিন্তু এমন অনেক মানুষ আছেন। যারা বাড়িতে ফিরতে পারবেন না। পরিবারের সাথে ঈদ করবেন না। ওরা বুকে ব্যথা চেপে হাসেন। অানন্দের ভান ধরেন।
যারা আমাদের সুখের জন্য, পরিবারের শান্তির জন্য পরিবার থেকে অনেক দূরে অবস্থান করছেন। নিজের দেশ ছেড়ে হয়ে আছেন দূরপ্রবাসী। প্রবাসীরা ঈদের আগে বাড়িতে টাকা পাঠিয়ে একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস নেন। ওদের কাছে তখনি আনন্দ লাগে। যেন ঈদের সবটুকু আনন্দ ওই টাকা পাঠানোর ভিতরেই। বাড়িতে বলেন, মার জন্য শাড়ি কিনো, বাবার জন্য পাঞ্জাবী নিয়ো। ওর জন্য এই করো। অথচ আমরা জানতে চাই না তারা কীভাবে ঈদ করছেন? ঈদের জন্য কী করছেন? কিন্তু তারা সবসময় চান আমরা সুখে থাকি। পরিবার শান্তিতে থাকুক। দেশ ভালো থাকুক।
কেমন কাঁটলো ওপারে তাদের ঈদ? খোঁজ নিয়েছে আওয়ার ইসলাম।
মাওলানা কবীর হুসাইন। দেশের বাড়ি ফিরোজপুর। কাতারে থাকেন। দেশে খুলনা বিভাগের হুফ্ফাজুল কোরআন ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারী ছিলেন। কাতারে একটি মাদ্রাসার শিক্ষক। ঈদ নিয়ে জানতে চাইলে বলেন, দেশে একটি মাদ্রাসার শিক্ষক ছিলাম। সাধারত ঈদুল আযহা মাদ্রাসায় করাতাম। চামড়া কালেকশন করতে হতো। এটাতেও অালাদা মজা আছে। এ ঈদ আমার প্রবাসী জীবনের ৫ম ঈদ। ঈদ মানে তো আনন্দ। আর আনন্দ হয় মা-বাবা ভাই বোন পরিবারের সাথে কাটালে। এই প্রবাসে কেমন যেন একা একা মনে হয়।
কীভাবে দিনটা কাটছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন একটা তাবলীগী মারকাজে এসেছি। কিছু ছাত্র তাবলীগে এসেছে। তাদের সঙ্গে দেখা করবো। তাছাড়া বন্ধু-বান্ধবরা দাওয়াত করেছে। ওদের ওখানে ঘুরতে যাবো। এভাবেই কেটে যাবে।
সাঈদুল ইসলাম। আছেন আরব আমিরাতে। দেশের বাড়ি টাঙ্গাইল। তিনি জানান, প্রবাসে এটা আমার ৬ষ্ট ঈদ। দিনটা মোটামুটি একরকম কাটছে। বাড়িতে এখনো কথা বলতে পারি নি। বললে একটু ভালো লাগতো। আর পরিবারের সবাইকে নিয়ে একসাথে ঈদ করলে তো আলাদা আনন্দ ছিল। এখন অনেক খারাপ লাগছে। কিন্তু আমাদের তো উপায় নেই। এভাবেই কষ্টের ভেতর দিয়েই প্রতিটা ঈদ কাটে।
ফারহান আব্দুল্লাহ ফাহিম। আছেন আরব আমিরাত। দেশের বাড়ি চট্রগ্রাম। এই ঈদ তার প্রবাসী জীবনে ১৭ তম ঈদ। প্রবাসে ঈদ কেমন কাটছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তেমন ভালো না। এই তো এখন রান্না করবো, খাবো, নামায পড়বো, ঘুমাবো। এটাই আমাদের ঈদ। খুব মন খারাপ। সকালে নামায পড়তে গেছি। অনেকের চোখে পানি এসে গেছে। অনেক মনে পড়ছে আপনজনকে।
ইয়াসিন মোহাম্মদ খান। আছেন কাতারে। দেশের বাড়ি নোয়াখালী। এ ঈদ তার প্রবাস জীবনে দ্বিতীয় ঈদ। দিনটা কেমন কাটছে জানতে চাইলে বললেন, প্রবাস মানেই কাজ আর কাজ। এই তো দেখেন, আজ ঈদের দিন তবুও ডিউটি করছি। কোন ছুটি নেই। বাড়ি ছাড়া আর ঈদের আনন্দ হয় নাকি? ডিউটি করছি নামায পড়বো, খাবো, ঘুমাবো। এভাবে দিনটা কেটে যাবে।
আরআর