এক দিনে দুই দফা ‘বোমার হুমকির’ বার্তা পাওয়ার পর ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা বাড়িয়েছে কর্তৃপক্ষ।
পাকিস্তানি একটি নম্বর থেকে হুমকির বার্তা আসার ঘটনায় বুধবার সকাল থেকেই ব্যস্ত সময় কাটছিল বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় কর্মরত সংস্থাগুলোর সদস্যদের। সেই হুমকিদাতাকে শনাক্ত করা যায়নি। এর মধ্যে রাতে মালয়েশিয়ার একটি নম্বর থেকে আবারও হুমকি দেওয়া হয়।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অপরিচিত একটি নম্বর থেকে এপিবিএন এর ডিউটি অফিসারের (সরকারি) নম্বরে আমরা আরেকটি সম্ভাব্য হুমকির বার্তা পেয়েছি। এরপর প্রটোকল অনুযায়ী আমরা সবগুলো এজেন্সির মধ্যে সমন্বয় করে কাজ করছি এবং নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।”
বিমানবন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা কাউকে ভীত না হতে অনুরোধ করছি।”
বুধবার রাত ১১টার দিকে হোয়াটসঅ্যাপে হুমকির ওই বার্তা আসে। পরে বৃহস্পতিবার সকালে জানানো হয়, নিরাপত্তা তল্লাশি করে কোথাও কিছু পাওয়া যায়নি।
ঢাকা মহানগর পুলিশ জানায়, এর আগে বুধবার ভোর ৪টা ৩৭ মিনিটে এয়ারপোর্ট এপিবিএনের ডিউটি অফিসারের হোয়াটসঅ্যাপে একটি পাকিস্তানি নম্বর থেকে ‘বম থ্রেট’ এর বার্তা আসে।
ওই বার্তায় দাবি করা হয়, রোম থেকে ঢাকাগামী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি-৫৩৬ ফ্লাইটে ৩৪ কেজি উচ্চমাত্রার বিস্ফোরক রয়েছে।
বুধবার সকাল ৯টা ২০ মিনিটে ফ্লাইটটি ঢাকায় অবতরণের পর ২৫০ জন যাত্রী এবং ১৩ জন ক্রুকে নিরাপদে নামিয়ে আনা হয়।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভুঁইয়া বুধবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বিমানবন্দরের এপিবিএন কন্ট্রোল রুমের ডিউটি অফিসারের সরকারি নম্বরে উড়োজাহাজে বোমা থাকার বার্তাটি আসে। পরে সেই নম্বরে তথ্যদাতার সঙ্গে কিছু আলাপ হয়। তবে তিনি ভয়েস কল রিসিভ করেননি।
ওই ব্যক্তি কি হুমকিদাতা না তথ্যদাতা, এ প্রশ্নের উত্তরে বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, “তিনি তো হুমকি দেননি, তথ্য দিয়েছেন। তবে যে কেউ বাংলাদেশে বসেও পাকিস্তানি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর ব্যবহার করতে পারেন। “ওই তথ্যদাতা একটি লাগেজের ছবিও পাঠিয়েছেন, যে ধরনের লাগেজে বোমাটি থাকতে পারে বলে তার ভাষ্য।”
এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর বলেন, “পরে আমরা খবর পেয়ে আমাদের প্রটোকল অনুযায়ী ব্যবস্থা নিই। সকালে অনেকগুলো ফ্লাইট ল্যান্ড করার কথা ছিল। আমরা অন্য সবগুলো ফ্লাইট আগে নামিয়ে দিই।
“ওই এয়ারক্রাফটের ল্যান্ডিংয়ের পর একটু দূরে থার্ড টার্মিনালের সামনে নিয়ে যাওয়া হয়; যার কারণে এয়ারপোর্টের স্বাভাবিক কার্যক্রমে কোনো ছন্দপতন হয়নি।”
তিনি বলেন, “উড়োজাহাজ থেকে আগে যাত্রীদের নামিয়ে এনে স্ক্রিনিং করে গাড়িতে উঠিয়ে এয়ারপোর্ট টার্মিনালে নিয়ে আসা হয়। এরপর তাদের প্রত্যেকটা লাগেজ একটা একটা করে এক্স-রে করে তল্লাশি করা হয়।
“দুটো সন্দেহভাজন লাগেজকে আলাদা করা হয়, সেগুলো খুলে পরীক্ষা করেও কিছু পাওয়া যায়নি। এরপর এয়ারক্রাফটের কার্গো থেকে প্যালেটগুলো নামিয়ে একটা একটা করে তল্লাশি চালানো হয়।”
বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, “বিমান বাহিনী, পুলিশ, র্যাব, আনসারসহ সবগুলো সংস্থার সদস্যরা এই কার্যক্রমে অংশ নেন। পুলিশের কুকুরগুলোকে কাজে লাগানো হয়।
আরএইচ/