মুহাম্মাদ উল্লাহ ইয়াহইয়া সহীহ ঈমান-আমল গঠন ও আত্মশুদ্ধির আহ্বান নিয়ে আগামী ৯, ১০ , ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ৩ দিনব্যাপী মুন্সীগঞ্জের ইসলাহী জোড়।
মুন্সীগঞ্জ জেলায় পদ্মার তীরে অবস্থিত দিঘীরপাড়ের পূর্বরাখি গ্ৰামে প্রতি বছর সর্বশ্রেণির ধর্মপ্রাণ মুসলমান উলামা ও আম জনতার উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হয় এ ইসলাহী জোড়।
তাযকিয়া ও আত্মশুদ্ধি মুমিনের জীবনে অপরিহার্য একটি বিষয়। বিশুদ্ধ ঈমান ও আমল গঠন ব্যতীত আত্মিক উন্নয়ন অকল্পনীয়। ইখলাস এবং আল্লাহ তাআলার প্রতি একনিষ্ঠতা এবং আমিত্ব ও লৌকিকতা বিবর্জিত আমল মুমিনের আত্মিক উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য শর্ত। আত্মিক পরিচর্যা ও আত্মশুদ্ধির এই মেহনত সম্পর্কে পবিত্র কুরআনেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কুরআন-হাদীসে একে তাযকিয়া ও ইহসান শব্দে উল্লেখ করা হয়েছে। যা মুমিনের জন্য অতি আবশ্যকীয় একটি বিষয়।
আওলাদে রাসূল (তথা নবী-বংশধর) ফেদায়ে মিল্লাত সায়্যিদ আসআদ মাদানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি-এর সুযোগ্য খলিফা হযরত মাওলানা মুফতি হাফীজুদ্দীন দামাত বারাকাতুহুম তাযকিয়া ও আত্মশুদ্ধির ময়দানে একজন কামেল রাহবার। অভিজ্ঞ আধ্যাত্মিক পথনির্দেশক। তারই আহবানে সর্বস্তরের মুসলমানদের বিশুদ্ধ ঈমান আমল গঠন ও আত্মশুদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে প্রতিবছর এই ইসলাহী জোড়ের আয়োজন করা হয়ে থাকে। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের বিশিষ্ট ওলামায়ে কেরাম ও আল্লাহওয়ালা বুজুর্গগণ এই মজলিসে গুরুত্বপূর্ণ বয়ান ও নসিহত পেশ করে থাকেন। তবে ইসলাহী জোড়ে মুসলমানদের আত্মিক উন্নয়নে আমলী জীবন গঠনের মশক এবং অনুশীলনের প্রতি সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ করা হয়ে থাকে।
এবারের ইসলাহী জোড়ে বিদেশী মেহমানদের মধ্যে বর্তমান বিশ্বের অন্যতম বিশিষ্ট ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব ভারতের সায়্যিদ মাহমুদ আসআদ মাদানী দামাত বারাকাতুহুম-এর সাহেবজাদা সায়্যিদ হোসাইন মাহমুদ মাদানী দামাত বারাকাতুহুম এবং দারুল উলূম দেওবন্দের উস্তাদ হযরত মাওলানা মুনিরুদ্দিন কাসেমী দামাত বারাকাতুহুম তাশরিফ আনবেন, ইনশাআল্লাহ। এ ছাড়াও দেশের বিশিষ্ট ওলামায়ে কেরাম ও আল্লাহওয়ালা বুজুর্গগণ আগমন করবেন।
পদ্মা নদীর কোল ঘেঁষে স্বচ্ছ নির্মল আবহাওয়ায় অবস্থিত মসজিদ-মাদরাসা ও খানকার সমন্বয়ে গঠিত 'মাদানী কমপ্লেক্সে' প্রতিবছর তিন দিনব্যাপী এই ইসলাহী জোড়ে আল্লাহর বান্দাদের নূরানী এক মিলনমেলা তৈরি হয়।
আল্লাহ তায়ালার মহব্বত ও সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে আল্লাহ-প্রেমিক বান্দারা ঘর বাড়ির মায়া ছেড়ে প্রতিবছর সারাদেশ থেকে হাজির হন এই মাদানী কমপ্লেক্সে। শরীয়ত ও তরিকত তথা কুরআন হাদিসের বিশুদ্ধ তালিম এবং আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি লাভে আধ্যাত্মিক অনুশীলনের সময় এই সম্মিলিত মেহনতে মুসলমানরা তাদের পরিশুদ্ধ ও আত্মিক উন্নতি লাভ করে থাকেন।
যা তাদের ব্যক্তি ও পারিবারিক জীবনেও পরিশুদ্ধ ও আদর্শ জীবনাচারে তাদেরকে অভ্যস্ত করে তুলে। ব্যক্তি, পরিবার ও রাষ্ট্রীয় পরিমণ্ডলসহ গোটা বিশ্ব মানবের কল্যাণকামী মনোভাবে তাদেরকে গড়ে তোলে। ৩ দিনব্যাপী ইসলাহী জোড়ের এ আয়োজন তাই সর্বস্তরের মুসলমানদের জন্য অতি প্রতীক্ষিত ও কাঙ্খিত এক দ্বিনি সম্মেলন।
বিশেষত বর্তমান সময়ে ফিতনা-ফাসাদের ব্যাপক বিস্তার ও পার্থিব জীবনের মোহ মায়ায় যখন ব্যক্তির মন ও মানসিকতা কলুষিত হয়ে চলেছে এমন সময় আত্মিক ও আধ্যাত্মিক উন্নয়নের এই মেহনত মুমিন মুসলমানের জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যবাহী।
-এটি