বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


দেশে প্রতিবছর নিউমোনিয়ায় ২৫ হাজার শিশুর মৃত্যু

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: রক্তে অক্সিজেনের ঘাটতি (হাইপক্সেমিয়া) বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়ে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের অত্যন্ত জটিল একটি সমস্যা। দেশের স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের অবকাঠামো অনুযায়ী মাধ্যমিক স্তরের স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে নিউমোনিয়া নিয়ে আসা শিশুর প্রায় ৪২ শতাংশই হাইপক্সেমিয়ায় ভোগে। যার ফলে দেশে প্রতিবছর নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ২৫ হাজার শিশুর মৃত্যু হয়, যা সম্পূর্ণ প্রতিরোধযোগ্য।

আজ বুধবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে মহাখালীর আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশে (আইসিডিডিআর,বি) বিশ্ব নিউমোনিয়া দিবস উপলক্ষে ‘মেডিকেল অক্সিজেন নিরাপত্তা’ বিষয়ে আলোচনা অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়।

অনুষ্ঠানে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইসিডিডিআর,বির মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের সহযোগী বিজ্ঞানী আহমেদ এহসানুর রহমান।

তিনি বলেন, সারা বিশ্বে প্রতি বছর ৭ কোটি ৩০ লাখ মারাত্মক অক্সিজেন ঘাটতিতে ভোগেন। যার মধ্যে শিশুই তিন কোটি ২০ লাখ।

এহসানুর রহমান বলেন, হাইপক্সেমিয়ায় আক্রান্ত যে কোনো রোগীর জন্য চিকিৎসা হিসেবে অক্সিজেন থেরাপি প্রয়োজন। বিভিন্ন ধরনের শারীরিক পরিস্থিতিতে হাইপক্সেমিয়া ঘটতে পারে শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত নবজাতক থেকে শুরু করে নিউমোনিয়া, ম্যালেরিয়া, সেপসিস এবং যক্ষ্মা আক্রান্ত শিশু, প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ (সিওপিডি), হৃদরোগ ও হাঁপানিসহ আরও অনেক। এনেস্থেশিয়াসহ প্রায় সব ধরনের বড় অস্ত্রোপচারকালে অজ্ঞান করবার সময়ও মেডিকেল অক্সিজেন অপরিহার্য।

তিনি বলেন, আমাদের চারপাশের বাতাসে অক্সিজেনের পরিমাণ ২১ শতাংশ এবং আমরা যে বাতাসে শ্বাস নিই তাতে আমাদের প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের পরিমাণ শুধুমাত্র ১৯ দশমিক ৫ শতাংশ। কিন্তু যাদের রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ কম তাদের ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য নয়।

বাংলাদেশ হেলথ ফ্যাসেলিটি সার্ভে-২০১৭ এর তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে এক চতুর্থাংশেরও কম স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে তিনটি অক্সিজেন উৎসের যে কোনো একটি রয়েছে। যার মধ্যে ১৩ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে অক্সিজেন কনসেনট্রেটর বিদ্যমান ছিল, মাত্র ২১ শতাংশ স্বাস্থ্য সেবাকেন্দ্রে ফ্লো-মিটারসহ অক্সিজেন ভর্তি সিলিন্ডার পাওয়া গেছে। মাত্র ৬ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে অক্সিজেন সরবরাহ বা বিতরণের ব্যবস্থা এবং পালস অক্সিমিটার ছিল।

২০২০ সালের এপ্রিল-মে মাসে পরিচালিত আইসিডিডিআর,বির নেতৃত্বাধীন আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশের ৬০টি জেলা হাসপাতালের মধ্যে ৭২ শতাংশ হাসপাতালে পালস অক্সিমেট্রি যন্ত্রটি রয়েছে এবং মাত্র ৭ শতাংশের ক্ষেত্রে আর্টারিয়াল ব্লাড গ্যাস এনালাইসিস (রক্তে অক্সিজেন, কার্বন-ডাই অক্সাইডের পরিমাণ, অক্সিজেনের ঘনত্ব, এসিড-ক্ষারের ব্যালেন্স ইত্যাদি পরিমাপ করার পরীক্ষা) করার ব্যবস্থা রয়েছে। অক্সিজেন সিকিউরিটি দেওয়ার জন্য অক্সিজেনের অন্যান্য উৎসের ক্ষেত্রে ১৮ শতাংশ হাসপাতালের কাছে অক্সিজেন কন্সেন্ট্রেটর যন্ত্র, ২ শতাংশের বন্ধ স্টোরেজ ট্যাংকে তরল অক্সিজেন ছিল এবং ৩ শতাংশের ক্ষেত্রে ওই হাসপাতালে একটি অক্সিজেন প্ল্যান্ট ছিল।

এছাড়াও সেন্ট্রাল ও সার সেন্ট্রাল পাইপিং শুধুমাত্র ১৭ শতাংশ জেলা হাসপাতালে বিদ্যমান ছিল এবং ২০ শতাংশ জেলা হাসপাতালে পরিদর্শনের দিনে ফেল-স্প্লিটার উপস্থিত ছিল। এক-চতুর্থাংশ জেলা হাসপাতালে নন-ইনভেসিভ ভেন্টিলেশনসহ লো-ফ্লো অক্সিজেন থেরাপি দেওয়ার ব্যবস্থা ছিল, যেখানে মাত্র ৭ শতাংশ জেলা হাসপাতাল নন-ইনভেসিভ এবং ইনভেসিভ দু ধরনের ভেন্টিলেশনের সঙ্গেই বেসিক অক্সিজেন থেরাপি দিতে পারে।

-এসআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ