আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: মাদকসক্তির কারণে গত ২৭ মাসে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ১০৬ জন সদস্যকে চারিচ্যুত করা হয়েছে। মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে চলাফেরা, পারিবারিক অশান্তি ইত্যাদি কারণে পুলিশের এই সদস্যরা মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন বলে ডিএমপি সূত্র বলছে। পুলিশের নিজস্ব অনুসন্ধানে ডিএমপিতে কর্মরত কনস্টেবল থেকে উপপরিদর্শক পদমর্যাদার ১১৩ জনকে মাদকাসক্ত হিসেবে শনাক্ত করা হয়, এদের মধ্যে ওই ১০৬ জনকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার মুহা. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, বাকি ৭ জনের বিষয়টি আপিল পর্যায়ে রয়েছে। এই চাকরিচ্যুতরা অস্ত্রের পশিক্ষণপ্রাপ্ত। সুতরাং সবসময় তাদের নজরদারিতে রাখতে হবে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশকে বলা হয়েছে বলে জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, ‘মাদক নিয়ন্ত্রণ করা পুলিশের দায়িত্ব।
সেই পুলিশ যদি মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে, তাহলে অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণ করবে কিভাবে। তাই চাকরিচ্যুতির মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) ডিএমপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে ডিএমপি কমিশনার মুহা. শফিকুল ইসলাম এসব কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন ‘নগরবাসীর যতটা প্রত্যাশা ছিল, আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকা সত্ত্বেও হয়তো সেই প্রত্যাশা পূরণ করতে পারিনি। তবে সেই চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। মাত্র ৩২ হাজার পুলিশ সদস্য দিয়ে দুই কোটি নাগরিকের সেবা দেওয়া সম্ভব নয়। যদি নগরবাসী তথ্য দিয়ে সহায়তা করে তাহলে সম্ভব।’
ডিএমপির ৪৭ বছরে বড় অর্জন প্রসঙ্গে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘জঙ্গি দমন সবচেয়ে বড় অর্জন। কেননা জঙ্গি দমন নিয়ে কোথাও কোনো প্রশ্ন ওঠেনি। তা ছাড়া খেলাসহ আন্তর্জাতিক যত ইভেন্ট হয়েছে, শৃঙ্খলার সঙ্গে সব শান্তিপূর্ণভাবে শেষ করতে পেরেছি। অপরাধ সংঘটিত হলে এর রহস্য উদ্ঘাটনে আমাদের ৯০ শতাংশের বেশি সফলতা রয়েছে।
ঘটনা ঘটার সপ্তাহখানেকের ভেতরেই আমরা এর রহস্য উদ্ঘাটন করতে পেরেছি। এসময় তিনি আরও যোগ করে বলেন, ‘আমাদের সক্ষমতা বাড়াতে ডিবিতে একটি ল্যাব তৈরি করা হচ্ছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা থাকবে এই ল্যাবে। পোশাকের ছেঁড়া কোনো অংশ, কোনো কাগজের টুকরা, মোটরসাইকেলের নাম্বার প্লেট কিংবা এ রকম কোনো অংশবিশেষ দিয়ে সহজে একটি ঘটনার সঙ্গে জড়িত অপরাধীকে শনাক্ত করা সম্ভব হবে। শিগগিরই এটি করা হবে।’
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের জুলাই থেকে ডিএমপিতে পুলিশ সদস্যদের ডোপ টেস্ট শুরু করা হয়। প্রথম দফায় সাতজনের ডোপ টেস্ট করলে বেশির ভাগের ফল পজিটিভ আসে। পরে বিভিন্ন ইউনিটের আরো ১৮ জনের পরীক্ষা করলে একজনের পজিটিভ আসে। এতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সতর্ক হন। পর্যায়ক্রমে সন্দেহভাজন সব পুলিশ সদস্যকে ডোপ টেস্ট করা হচ্ছে। গত বছরের নভেম্বর থেকে এ পর্যন্ত ১২ জন চাকরিচ্যুত হয়েছেন। ডিএমপি সূত্র জানায়, অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ল্যাবে মাদকাসক্তি শনাক্তের এই পরীক্ষা (ডোপ টেস্ট) করা হয়।
-এটি