।।কাউসার লাবীব।।
ভারি বৃষ্টি ও ভারতের মেঘালয়-আসাম থেকে নেমে আসা উজানের ঢলে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছেন সুনামগঞ্জবাসী। মাত্র ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে সদর, ছাতক, দোয়ারাবাজার, তাহিরপুর, বিশ্বম্ভপুর হাজার হাজার বসত ঘরে বানের পানি ডুকে পড়েছে।
ভয়াবহ এই দুর্যোগে বন্যাকবলিত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে সুনামগঞ্জ’র ঐতিহ্যবাহী কওমি মাদরাসা জামেয়া মারকাজুল উলূম বর্মাউত্তর-রামনগর-বাণীপুর। মাদরাসাটিতে গতকাল সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে সবার জন্য। শত শত পানিবন্দী মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন এখানে। তবে মানুষ মাথা গোঁজার আশ্রয় পেলেও দেখা দিয়েছে তীব্র খাদ্য ও খাবার পানি সঙ্কট।
মাদরাসাটির প্রিন্সিপাল আওয়ার ইসলামকে জানান, স্থানীয় বাজার দোকানপাট সব ডুবে গেছে। তাই টাকা থাকলে খাবার পাওয়া যাচ্ছে না। যদি কেউ সিলেট শহরের দিক থেকে সামর্থ অনুযায়ী খাবার সরবরাহ করেন তাহলে মানুষের কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব হতো।
তিনি আরো বলেন, আমরা মাদরাসা বন্ধ দিয়ে আমাদের বেশকিছু ছাত্রকে রেখে দিয়েছি। তারা ইতোমধ্যে সাধারণ মানুষের জন্য স্বেচ্ছাশ্রম দিচ্ছেন।
এদিকে জানা গেছে, পুরো সুনামগঞ্জ শহরের ৯০ ভাগ বসত ঘরে বানের পানি ডুকে পড়েছে। ছাতক শহরের শতভাগ এলাকা বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়ে আছে। সুনামগঞ্জ ও ছাতক পৌর এলাকার প্রধান সড়কে হাঁটু পানি থেকে কোমর পানিতে ডুবে আছে।। শহরের প্রধান সড়ক গুলোতে অনায়াসে নৌকা চলাচল করছে। ৬৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সিলেট সুনামগঞ্জ সড়কে ৫ স্থানে কোমর পানিতে ডুবে থাকায় সুনামগঞ্জের সংগে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়েছে।
জেলা সদর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে ছাতক,তাহিরপুর দোয়ারাবাজার, বিশ্বম্ভপুর উপজেলা। এসব এলাকার প্রধান সড়কে এখন সাতার পানিতে নিমজ্জিত। নৌকা ছাড়া এসব উপজেলায় যাওয়ার বিকল্প কোন বাহন নেই। সুনামগঞ্জ শহরের তেঘরিয়া,সাহেব বাড়িরঘাট, উকিলপাড়া, নুতনপাড়া,শান্তিবাগ হাছননগর, পাঠানবাড়ি জেলরোড, মধ্যবাজার,পশ্চিমবাজার, বড়পাড়া, আরপিনগর,মল্লিকপুর ওয়েজখালী, হাজীপাড়া, নবীনগর সহ ৯ টি ওয়ার্ডের পাঁচশতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বানের পানি ডুকে পড়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন হাজার হাজার ব্যবসায়ী।
-কেএল