শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫ ।। ২৮ চৈত্র ১৪৩১ ।। ১৩ শাওয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
‘মার্চ ফর গাজা’য় অংশগ্রহণকারীদের জন্য জরুরি ৫ নির্দেশনা তালিবুল ইলমের আবশ্যকীয় পাঁচটি কাজ পাকিস্তানের সব সমস্যার পেছনে ইহুদি ষড়যন্ত্র থাকে: মাওলানা ফজলুর রহমান বাড়িতে বাবার লাশ রেখে এসএসসি পরীক্ষা দিল নাহিদ মানবতার জন্য আপনিও আসুন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে: শায়খ আহমাদুল্লাহ ইসরায়েলকে প্রতিহত করতে আন্তর্জাতিক উদ্যোগ দরকার: বিএনপি মাদরাসাছাত্রদের কর্মসংস্থানের বিষয়ে কাজ করছে এনসিপি : নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী মুসলিম রাষ্ট্রের ওপর এখন সশস্ত্র ল’ড়াই ফরজ: মুফতি তাকি উসমানি ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি সফল করার আহ্বান শায়খে চরমোনাই’র নড়াইলে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা মামলায় আ. লীগের ৪৮ নেতাকর্মী কারাগারে

ইসলামী পর্ব তথা ঈদ ও রোজা পালনের ভিত্তি কি?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

।।ড. ওয়ালীয়ুর রহমান খান।।

ইসলামীপর্ব পালনের ভিত্তি হলো, আঞ্চলিকভাবে খালি চোখে চাঁদ দেখা। খিলাফত আমলে সিরিয়া ও মদীনা মুনাওয়ারায় সংবাদ পাওয়া সত্যেও ইবনে আব্বাস রা সহ সাহাবগণ দুই দিনে রোজা ও ঈদ পালন করেছেন। বলেছেন, এভাবেই রাসূলুল্লাহ স আমাদের আদেশ দিয়েছেন। (মুসলিম-1078; 2528)

সাম্প্রতিক সময়ে এ বিষয়ে কিছু বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। যার মূল বিষয়বস্তু 4টি:
1-আঞ্চলিকভাবে চাঁদ দেখা।
2-প্রথম চাঁদ দেখার সংবাদ।
3-সৌদি আরবের সাথে।
4-জ্যোতির্বিজ্ঞানের আলোকে বা লুনার ক্যালেন্ডার অনুযায়ী।

তবে আঞ্চলিকভাবে চাঁদ দেখে বিগত দেড় হাজার বছর ধরে মুসলিম বিশ্ব পর্ব পালন করছে এবং এ পদ্ধতিকেই আরব আজমের বিখ্যাত ফকীহগণ সঠিক বলে গ্রহণ করেছেন।

কয়েক বছর আগে ঢাকাস্থ সৌদি দূতাবাস কর্মীরা সৌদি শীর্ষ শায়খ সালেহ আল উছাইমীন (রা) কে লিখিত প্রশ্ন করেছিল, আমরা সৌদি আরবের নাগরিক ঢাকায় থাকা অবস্থায় রোজা ও ঈদ পালন কিভাবে করব? শায়খ লিখিতভাবে জবাব দিয়েছিলেন, বাংলাদেশের জনগণের সাথে তাদের সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী আমল করবে। (ফাতওয়াটি ইফার সংশ্লিষ্ট ফাইলে আছে।)

প্রথম কোথাও চাঁদ দেখার সংবাদ পাওয়া গেলে সব দেশ এর অনুসরণ করবে বলে ওআইসি ফিকহ একাডেমীর বিভিন্ন সময়ে সিদ্ধান্ত থাকলেও বিশ্বের খ্যাতিমান আলেম ও সরকার প্রধানগণ এটির গুরুত্ব দেননি।

এর বড় একটি প্রমাণ গতকালের আফগানিস্তানে প্রথম চাঁদ দেখা যাওয়া এবং সেখানকার ফুকাহায়ে কেরাম সরকার আজ ঈদ পালন করছেন, জানা সত্যেও সৌদি সরকার বা ওআইসি কর্তৃপক্ষ ঐক্য প্রকাশের কোন ঘোষণা দেননি। চাঁদপুরের দরবারের অনুসারীদের কর্মকাণ্ড মনে হচ্ছে বিষয়টি এমন যে, আরব দেশের চাঁদ দর্শন আমলযোগ্য আর নন আরব দেশের চাঁদ দর্শন আমলযোগ্য নয়।

বাংলাদেশের সাদ্রা পীরদের ভন্ডামি এবার আরো স্পষ্ট হয়ে গেলো: এরা দাবি করে সৌদি আরবের সাথে রোজা ও ঈদ পালন।

অর্থাৎ নিজ দেশের ফুকাহায়ে কেরামের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে রাষ্ট্রীয় ঘোষণা অমান্য কারী (রাষ্টদ্রোহী) এই কয়েক গ্রামের লোক এবার দুই ভাগ। একভাগ প্রথম দর্শনের ভিত্তিতে আফগানিস্তানের সাথে আজ ঈদ করছে। বড় অংশটি সৌদির ঘোষণার অপেক্ষায় আছে। কাল ঈদ পালন করবে।

আর যারা এস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির দাবি অনুযায়ী চাঁদ না দেখে শুধু প্রযুক্তি দ্বারা সিদ্ধান্ত নিতে বলেন, তারা এখন বলুন, পশ্চিমে না হয়েও গতকাল আফগানিস্তানে চাঁদের প্রথম প্রকাশ কি করে হলো? তাহলে হাদীস ও ফিকহ অনুযায়ী খালি চোখে চাঁদ মামাকে দেখতে এত সংকোচ কিসের?

লক্ষ্য করুন, মহানবী স এর নির্দেশনা "চাদ দেখে রোজা রাখ এবং চাঁদ দেখে ঈদ কর, আকাশ মেঘলা থাকলে শাবান মাস ত্রিশ দিন পূর্ণ কর"। (বুখারি-1909) কতই না সুন্দর ও সার্বজনীন সমাধান।
এটি না মেনে যত অভিনব পদ্ধতি অবলম্বন করা হচ্ছে তত জটিলতা বাড়ছে।

সুতরাং নবী সা এবং খুলাফায়ে রাশিদূনের যুগ থেকে আজ পর্যন্ত মুসলিম বিশ্বের সর্বত্র অনুসৃত সঠিক ও নিরাপদ পদ্ধতি আঞ্চলিকভাবে খালি চোখে চাঁদ দেখে ফুকাহায়ে কেরাম ও সরকারের ঘোষণার কোন বিকল্প নেই। মনে রাখা জরুরি, ঈদ পালন জাতীয় ইবাদত বা উৎসব; কোন ব্যক্তিগত বা দলীয় ইবাদত নয়। আল্লাহ্ তাআলা আমাদের বৈচিত্রের মধ্যেই সুন্দর ও বিজ্ঞানময় ঐক্য দান করেছেন। আলহামদুলিল্লাহ।

-কেএল


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ