শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
কাল যাত্রাবাড়ী মাদরাসায় মজলিসে দাওয়াতুল হকের ইজতেমা শেখ হাসিনা ভারতে বসে দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছেন: মজলিস মহাসচিব ডেঙ্গুতে এক সপ্তাহে ৩১ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ৬২৩০ মসজিদে নববীর আদলে হবে আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ: ধর্ম উপদেষ্টা খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত নতুন নির্বাচন কমিশনকে বিগত কমিশন থেকে শিক্ষা নিতে হবে: মুফতী ফয়জুল করীম লালপুরে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে জমি দখল ও বাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ জনতার চেয়ারম্যান সৈয়দ তালহাকে সুনামগঞ্জ ৩ আসনে জমিয়তের প্রার্থী ঘোষণা কুরআন-হাদিসের ভিত্তিতেই হতে হবে সংস্কার: বায়তুল মোকাররমের খতিব ইসলামী সঙ্গীত সম্রাট আইনুদ্দীন আল আজাদ রহ.-এর বাবার ইন্তেকাল

আপন দু’বোনকে একত্রে বিয়ে; ইসলাম কী বলে?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

।।আবুল ফাতাহ কাসেমি।।

কেইস স্টাডি এক. গত কয়েক দিন পূর্বে একটি নিউজ পোর্টালের খবরে আঁতকে উঠি। ‘তিন বোনের এক স্বামী’। খবরের ভেতরে চোখ বুলাতেই কপালে ভাঁজ পড়ে। খবরের ভাষায়- ‘সাভারের তেতুঁলজোড়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড মুসলিম পাড়া এলাকায় একে একে তিন বোনকে বিয়ে করেছেন সোহরাব হোসেন নামে এক যুবক। পেশায় তিনি একজন নরসুন্দর।

খুলনা জেলার কয়রা থানার বাগমারা এলাকার আব্দুর রহমান সরদারের ছেলে সোহরাব সরদার প্রথমে লিমা আক্তারকে (২১) বিয়ে করেন ৪ বছর আগে। বিয়ের ১ বছর পর তার বড় বোনকে (২২) বিয়ে করেন। তিন বছর সাংসারিক জীবন অতিবাহিত করেন দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে। সম্প্রতি আবারও তিনি তার শ্যালিকা অর্থাৎ প্রথম ও দ্বিতীয় স্ত্রীর আপন ছোট বোনকে (১৮) বিয়ে করেন।

গত ৩ জানুয়ারি তৃতীয় বিয়ের পর আলাদা সংসার পেতেছেন সোহরাব। ছোট বোন মাত্র তিন মাস আগে পোশাক কারখানায় কাজ নিতে বড় বোনের বাসায় আসেন। সোহরাবের দ্বিতীয় স্ত্রীও স্থানীয় একটি পোশাক কারখানার শ্রমিক। একই কারখানাতে ছোট বোনকে কাজ পাইয়ে দিয়েছেন বড় বোন।

চাকরি পেয়ে বোন-দুলাভাইয়ের সঙ্গে একই বাসাতে থাকতেন ছোট বোন। অল্প কিছুদিন আগে ছোট বোন শারীরিকভাবে অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। বমি হতে থাকে ঘনঘন। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে ধরা পড়ে প্রেগন্যান্সি। তারপরই দুলা ভাইয়ের সঙ্গে অবৈধ মেলা মেশার কথা শিকার যান ছোট বোন।

প্রেগন্যান্সি ধরা পড়ার তিনদিনের মাথায় শ্যালিকাকে বিয়ে করে নেন সোহরাব। এভাবে একে একে আপন তিন বোনের স্বামী হয়ে যান বিকৃতমনা সোহরাব। এ বিষয়ে অভিযুক্ত স্বামী সোহরাবের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রথম স্ত্রী নিজেই আমাকে ছেড়ে যান।

এরপর তার বড় বোন আমাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে বিয়ে করেন। কিন্তু তিন বছরের সংসার জীবনে আমরা নিঃসন্তান থাকি। তাই প্রথম ও দ্বিতীয় স্ত্রীর ছোট বোনকে বিয়ে করতে বাধ্য হই।’

কেইস স্টাডি দুই. একজন পরিচিতের মাধ্যমে জানতে পারলাম, ঢাকার একটি প্রসিদ্ধ এলাকার বাসিন্দা তার শ্যালিকার সাথে পরকীয়ায় জড়িত হন। স্ত্রীর ঘরে তার কয়েকটি সন্তানও রয়েছে। স্ত্রীকে তালাক না দিয়েই তিনি তার স্ত্রীর ছোট বোন শ্যালিকাকে বিয়ে করেন এবং কয়েক বছর যাবত একসাথে ঘর সংসারও করছেন।

কথিত দ্বিতীয় স্ত্রীর (শ্যালিকার) ঘরেও কয়েকটি বাচ্চা হয়েছে। প্রথম স্ত্রী বিষয়টি নিয়ে প্রথম প্রথম আপত্তি জানালেও পরে সয়ে যান। জানা যায়, এ লোক ব্যক্তি জীবনে ধর্মকর্মের চর্চাও করেন!

পাঠক! ঘটনা দু’টি আমাদের বর্তমান সমাজ ব্যবস্থার এক করুণ চিত্র আমাদের সামনে তুলে ধরছে। দীনহীন সমাজের এক নির্মম বাস্তবতা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে। যিনা ব্যভিচারের মত মারাত্মক গুনাহর পাশাপাশি আপন দু’বোনকে বিয়ে করার মত চরম গুনাহে লিপ্ত হওয়ার ঘটনা ঘটে যাচ্ছে অহরহ। খোঁজ নিলে হয়তো এ সমাজের আরো ভয়াবহ চিত্র ফুটে উঠতে পারে। এ যেন ইসলাম পূর্ব সেই ‘আইয়ামে

জাহেলিয়াত’কে জানান দিচ্ছে। জাহেলি যুগের দীনহীন মানুষ আপন মা, মেয়ে, ফুফি এমনকি আপন দু’বোনকেও একসাথে বিয়ে করত। ইসলাম এ ধরণের অসামাজিক, অনৈতিক, অসভ্যতাকে চিরতরে মিটিয়ে দিয়েছে। ইসলাম এ ধরণের নোংরামোকে স্থায়ীভাবে হারাম ঘোষণা করেছে।

উপরের ঘটনা দু’টোর শরিয়াহ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে আমরা এ ঘটনাকে কয়েকটি প্রশ্নে সাজাবো।
১. দু’ বোনকে একত্রে বিয়ে করা জায়েয কি না? শরিয়তের দৃষ্টিতে তা কোন পর্যায়ের অপরাধ?
২. কেউ স্ত্রীর বোনকে বিয়ে করলে বোন স্ত্রী হিসেবে গণ্য হবে কি না?
৩. স্ত্রীর বোনকে বিয়ে করলে স্বামীর উপর মহর ওয়াজিব হবে কি না?
৪. স্ত্রীর বোনের (কথিত দ্বিতীয় স্ত্রীর) সাথে সহবাস করলে প্রথম স্ত্রীর সাথে বিয়ে বাকি থাকবে? না এ বিয়ে ভেঙ্গে যাবে?
৫. স্ত্রীর বোনের (কথিত দ্বিতীয় স্ত্রীর) সাথে সহবাস করার পর বাচ্চা হলে শরিয়তে এ বাচ্চার হুকুম কী?
৬. সহবাসের পর দু’বোনের মধ্যে প্রথমজনকে রাখবে না দ্বিতীয়জনকে?
৭. এ ধরণের বিয়ে হয়ে গেলে করণীয় কী?

শরিয়তের দৃষ্টিতে কোন পর্যায়ের অপরাধ?

উত্তর এক.
কোন স্বামীর অধিনে স্ত্রী থাকা অবস্থায় স্ত্রীর বোনকে বিয়ে করা সম্পূর্ণ হারাম। কবিরা গুনাহ। তবে স্ত্রী মারা গেলে কিংবা তালাকপ্রাপ্ত হলে ইদ্দতের পর স্ত্রীর বোনকে বিয়ে করতে পারবে। ফতোয়া শামিতে রয়েছে-

‘মাহরাম দুজনকে একত্রে এক বিবাহে অথবা তালাকে বায়েনের এক ইদ্দতে আবদ্ধ করা হারাম। এবং একজনকে পুরুষ ধরলে অন্যজনের সাথে বিয়ে শুদ্ধ হয় না এমন কাউকেও বিয়ে করা বা বিবাহে একত্র করা হারাম।’ (ফতোয়া শামি ৩/৩৭ এইচ এম সাইদ কোম্পানি)
ফতোয়া হিন্দিয়াতেও কাছাকাছি শব্দে একই হুকুম বর্ণিত হয়েছে,

‘মাহরাম দুজনকে একত্রে বিবাহ করা হারাম। এ ক্ষেত্রে মূলনীতি হল, এবং একজনকে পুরুষ ধরলে অন্যজনের সাথে বিয়ে শুদ্ধ হয় না এমন কাউকেও বিয়ে করা বা বিবাহে একত্র করা হারাম। চাই উভয়ের মাঝে বংশের আত্মীয়তা হোক বা দুগ্ধ সম্পর্কের। উভয়ে একত্রে বিয়ে করা জায়েজ নেই। (ফতোয়া হিন্দিয়া ১/২৭৭)

স্ত্রীর বোনকে বিয়ে করলে স্ত্রী হিসেবে গণ্য হবে কি না?

উত্তর দুই.
কেউ স্ত্রীর বোনকে বিয়ে করলে স্ত্রীর বোন দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে গণ্যই হবে না। কারণ তা বিয়ে বলেই গণ্য হয় নি। তা বাতিল বিয়ে হিসেবে ধর্তব্য হবে। বরং তা যিনা ব্যাভিচার হিসেবে ধতর্ব্য হবে বিধায় উভয়ের মাঝে কথিত এ বিয়ে ছিন্ন করে দিতে হবে। পরের বিয়েটি ফাসেদ হবে। ফতোয়া হিন্দিয়াতে রয়েছে-

আলাদা আলাদা আকদে যদি দুই বোনকে বিয়ে করে তাহলে পরের বিয়ে ফাসেদ বলে গণ্য হবে। (ফতোয়া হিন্দিয়া, ১/২৭৭)

স্ত্রীর বোনকে বিয়ে করলে স্বামীর উপর মহর ওয়াজিব হবে কি না?

উত্তর তিন.
স্ত্রীর অন্য বোনকে বিয়ে করলে স্বামীর উপর মহর ওয়াজিব হবে না। ফতোয়া হিন্দিয়াতে রয়েছেÑ
যদি একই আকদে দু’বোনকে বিয়ে করে তাহলে সাথে সাথে তাদের মাঝে বিচ্ছিন্ন করে দিবে। তাদের সাথে যদি স্বামীর সহবাস না হওয়ার পর বিচ্ছিন্ন হয় তাহলে তারা উভয়ে কোন মহর পাবে না। আর সহবাসের পরে বিচ্ছিন্ন হলে উভয়ের জন্য মহরে মিসিল ও নির্ধারিত মহরের কম সংখ্যার মহর নির্ধারণ করা হবে।

তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আলাদা আলাদা আকদে বিয়ে হওয়ায় সে বিয়ে বাতিল বলে গণ্য হয়ে স্বামীর উপর কোন মহর আবশ্যক হবে না। কারণ বিয়েই তো হয় নি। বরং উভয়ের আলাদা হয়ে যাওয়া আবশ্যক। তারা কখনোই একত্রে ঘর সংসার করতে পারবে না। নির্জনে একত্রিত হতে পারবে না। ফতোয়া হিন্দিয়াতে আরো আছে,

বিচারক এ বিয়ের ব্যাপারে অবগত হলে সাথে সাথে তাদের মাঝে বিচ্ছিন্ন করে দিবেন এবং সহবাসের পূর্বে বিচ্ছিন্ন করলে কোন ধরণের হুকুম আরোপিত হবে না। (ফতোয়া হিন্দিয়া, ১/২৭৭)

প্রথম স্ত্রীর সাথে বিয়ে বাকি থাকবে?

উত্তর চার.
স্ত্রীর বোনের (কথিত দ্বিতীয় স্ত্রীর) সাথে সহবাস করলে প্রথম স্ত্রীর সাথে বিয়ে বাকি থাকবে? না এ বিয়ে ভেঙ্গে যাবে? এ ব্যাপারে শরিয়াহর বক্তব্য হল, অন্য বোনের (কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী বা শ্যালিকার) সাথে সহবাস করলে প্রথম স্ত্রীর সাথে বিয়ে বাকি থাকবে। প্রথম বিয়ে ভাঙবে না। ফতোয়া শামিতে রয়েছে-

কোন স্বামী তার স্ত্রীর বোনের সাথে সহবাস করলে স্বামীর উপর স্ত্রী হারাম হয় না। (ফতোয়া শামি ৩/৩৭ এইচ এম সাইদ কোম্পানি)

স্ত্রীর বোনের (কথিত দ্বিতীয় স্ত্রীর) সাথে সহবাস করার পর বাচ্চা হলে শরিয়তে এ বাচ্চার হুকুম কী?

উত্তর পাঁচ.
যেহেতু স্ত্রীর বোনের সাথে বিয়েই শুদ্ধ হয় নি তাই এ সহবাসকে ব্যভিচার হিসেবেই ধরা হবে। আর ব্যভিচারের ফলে যে শিশুর জন্ম হয় তাকে শরিয়তের পরিভাষায় ‘ওলাদুজ জিনা’ বা জারজ সন্তান বলা হয়। আর জারজ সন্তানের নিসবত তথা সম্মন্ধ হয় তার মায়ের দিকে। কারণ বাবা অবৈধ, তাই অবৈধ বাবার সঙ্গে তাকে সম্পৃক্ত করা হবে না। হাদিস শরিফে এসেছে,

আমর ইবনু শু‘আইব রহ. থেকে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও তার দাদার সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন,এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বললো, হে আল্লাহর রাসূল! অমুক আমার পুত্র,জাহিলী যুগে আমি তার মায়ের সাথে যিনা করেছিলাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ইসলামে অবৈধ সন্তানের দাবির কোনো ব্যবস্থা নেই। আর জাহিলী যুগের প্রথা বাতিল হয়ে গেছে। বিছানা যার সন্তান তার এবং যিনাকারীর জন্য রয়েছে পাথর। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২২৭৪) তাই তার বংশ প্রমাণিত হবে না। ফতোয়া হিন্দিয়াতে (১/৫৪০) আছে,

সন্তান বৈধ হওয়ার নূন্যতম সময়
বিয়ের কমপক্ষে ছয় মাস পর বাচ্চা জন্ম নিলেই স্বামী-স্ত্রীর বৈধ সন্তান হিসেবে গণ্য হবে। সে সূত্রে বিয়ের ছয় মাস পর বাচ্চা জন্ম নিলে স্বামী নিজের সন্তান না বলে অস্বীকার করতে পারবে না। এ ক্ষেত্রে তাদের শারিরিক সম্পর্ক হয়েছে কিনা, হলে কখন হয়েছে- তা ধর্তব্য নয়। কারণ তা অত্যন্ত গোপনীয় ও স্পর্শকাতর ব্যাপার। (মাবসুতে সারাখসি : ১৭/১৫৫)

আবার বিয়ের পরে স্বামী ছাড়া অন্য কারো সঙ্গে অবৈধ মিলনে যদি কোনো সন্তান জন্ম নেয়, তাহলে ওই সন্তানের পিতৃত্বের সম্পর্কও স্ত্রীর বৈধ স্বামীর ধর্তব্য হবে। ওই নারীর স্বামীই তার সন্তানের বৈধ বাবা বিবেচিত হবে। এ ক্ষেত্রে সন্তানটিকে অবৈধ সন্তান বলা যাবে না। হাদিসে এসেছে, সন্তান বৈধ স্বামীরই গণ্য হবে, আর ব্যভিচারী বঞ্চিত হবে। (বুখারি, হাদিস নং : ২০৫৩)

অবৈধ সন্তানের সাধারণ বিধান কী হবে
সাধারণত অবৈধ সন্তানর রক্ষণাবেক্ষণ, প্রতিপালন ও ধর্মবিষয়ক প্রায় বিধান বৈধ সন্তানের অনুরূপ। কারণ, এখানে সন্তানের কোনো দোষ নেই; বরং দোষ তার মা-বাবার। তাই তার বৈধ অধিকার ইসলামে সাব্যস্ত রয়েছে। তবে কিছু কিছু বিধানে অবশ্যই পার্থক্যও রয়েছে।

সহবাসের পর দু’বোনের মধ্যে প্রথমজনকে রাখবে না দ্বিতীয়জনকে?

উত্তর ছয়
প্রথমজন শুরু থেকেই বিবাহে রয়েছে। প্রথমজন স্বামীর স্ত্রী হিসেবে বাকি থাকবে দ্বিতীয়জনকে তৎক্ষনাৎ আলাদা করে দিতে হবে। প্রথমজন মারা গেলে অথবা তালাক দেয়ার পর ইদ্দত শেষ হলে দ্বিতীয়জনকে বিয়ে করতে পারবে।

এ ধরণের বিয়ে হয়ে গেলে করণীয় কী?

উত্তর সাত
এ ধরণের বিয়ে হয়ে গেলে তওবা ছাড়া কিছুই করণীয় নেই। সত্য হৃদয়ে কায়মনোবাক্যে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে। স্থানীয় লোকদের জন্য উচিৎ হলো, তাদের মধ্যে বিচ্ছিন্ন (তাফরিক) করে দিবে। আর তারা যদি এ অপকর্ম থেকে বিরত না থাকে তাহলে তাদের সাথে চলা ফেরা উঠাবসাসহ সব ধরণের সম্পর্ক ছিন্ন করবে। কেননা আল্লাহ তাআলা বলেছেন,

আর যদি শয়তান তোমাকে ভুলিয়ে দেয়, তবে স্মরণের পর যালিম সম্প্রদায়ের সাথে বসো না। (সুরা আনআম; ৬৮) অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন,

আর যারা যুলম করেছে তোমরা তাদের প্রতি ঝুঁকে পড়ো না; অন্যথায় আগুন তোমাদেরকে স্পর্শ করবে এবং আল্লাহ ছাড়া তোমাদের কোন অভিভাবক থাকবে না। অতঃপর তোমরা সাহায্যপ্রাপ্ত হবে না। (সুরা হুদ: ১১৩)

আল্লাহর পাকড়াও খুব কঠিন
দু’বোনকে একত্রে বিয়ে করার এসব গর্হিত কাজ সুস্থ সমাজে অসুস্থতার জন্ম দেয়। একটি সুস্থ সমাজের জন্য যা কোন ভাবেই কাম্য হতে পারে না। ক্যান্সার যেমন পুরো শরীরকে ধীরে ধীরে শেষ করে দেয় এসব অপরাধের সাবাভিকতাও পুরো সমাজ ব্যবস্থাকে শেষ করে দেয়।

আমাদের ব্যক্তিগত জীবনে ইসলামের ফরজ বিধান পর্দার ব্যাপারে শৈথিল্য প্রদর্শন ও অনিহার কারণে এসব বিকৃতমনা লোকদের সংখ্যাও বাড়ছে। অপরাধ সংঘটিত হওয়ার সুযোগ যেন তৈরি না হয় এজন্য ইসলাম পর্দার মত সুরক্ষিত বাউন্ডারির ব্যবস্থা করে দিয়েছে।

গায়রে মাহরাম সকলের সাথে পর্দা করা ফরজ ঘোষণা করেছে। চাই সে শ্যালিকা হোক বা অন্য কেউ। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যেন মাহরামহীন কোন মহিলার কাছে নির্জনে গমন না করে।’ (সহিহ বুখারি)

মনে রাখতে হবে, দুনিয়ার সামান্য এ ভোগের চেয়ে আখেরাতের হিসাব খুব কঠিন। হারামকারি অবস্থায় মৃত্যু চলে আসলে কী অবস্থা হবে তাও চিন্তা করতে হবে! আল্লাহর পাকড়াও খুবই কঠিন। আল্লাহ তাআলা বলেছেন

‘নিশ্চয় কান, চোখ ও অন্তকরণ এদের প্রতিটির ব্যাপারে সে জিজ্ঞাসিত হবে।’ (সুরা ইসরা: ৩৬) এসব নিকৃষ্ট পাপাচার থেকে আল্লাহ তাআলা আমাদের এ সমাজকে হেফাজত করুন।

লেখক:গবেষক, অনুবাদক, শিক্ষক।

-কেএল


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ