আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য সার্চ কমিটির পক্ষেই অবস্থান জানিয়ে এলেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) নেতারা।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন নিয়ে চলমান সংলাপের দ্বিতীয় দিন বুধবার বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সঙ্গে আলোচনা করে জাসদ।
বিকেল ৩টার পর শুরু হওয়া এ আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ক্ষমতাসীন ১৪ দলের শরিক এ দলটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু।
সংলাপে আলোচনার বিষয়ে হাসানুল হক ইনু সাংবাদিকদের বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠনের সম্পূর্ণ এখতিয়ার রাষ্ট্রপতির। তারপরও তিনি জাসদসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার যে সূত্রপাত করেছেন, এ জন্য তাকে আমরা সাধুবাদ জানিয়েছি। এই পদ্ধতিটা নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য অংশগ্রহণমূলক হবে এবং একটি গ্রহণযোগ্য ও দক্ষ নির্বাচন কমিশন উপহার দিতে রাষ্ট্রপতির সাহায্য হবে।’
ইনু আরও বলেন, ‘সংবিধানের নির্দেশনা অনুযায়ী ইসি গঠনে আইনি কাঠামো না থাকার কারণে একটি অনুসন্ধান কমিটির মধ্য দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করার উদ্যোগটি তুলনামূলকভাবে ভালো উদ্যোগ।’
এই অনুসন্ধান (সার্চ) কমিটি কেমন হওয়া উচিত, সে সম্পর্কেও নিজেদের ধারণা তুলে ধরেছেন জাসদ নেতারা। সার্চ কমিটির সদস্যরা সাংবিধানিক সংস্থা থেকে হওয়া বাঞ্ছনীয় বলে অভিমত দেন দলটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু।
তিনি বলেন, আপিল বিভাগের বিচারপতি, কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি) এবং পাবলিক সার্ভিস কমিশনের প্রধানসহ সার্চ কমিটি গঠন করতে রাষ্ট্রপতিকে অনুরোধ করেছেন তাঁরা। তবে সার্চ কমিটির সদস্য হিসেবে কোনো নাম প্রস্তাব সমীচীন মনে করে না জাসদ। একজন নারী এবং একজন অধ্যাপক পর্যায়ের দুজন সার্চ কমিটিতে রাখার প্রস্তাব করেছে জাসদ। তবে তারা নাম প্রস্তাব করেনি। হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘নাম প্রস্তাব করে আমরা এ ক্ষেত্রে ভারাক্রান্ত করতে চাই না।’
সার্চ কমিটির মাধ্যমে গঠিত দুটি নির্বাচন কমিশন নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। তাদের যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন আছে। একই প্রক্রিয়ায় নির্বাচন কমিশন কতটা গ্রহণযোগ্য হবে—এমন প্রশ্নের জবাবে জাসদ সভাপতি বলেন, ‘গত কয়েকটি নির্বাচন কমিশন অনুসন্ধান কমিটির মাধ্যমে হয়েছে। কখনো বিতর্ক দেখা দিয়েছে, কখনো বিতর্ক দেখা দেয়নি। সংলাপে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে যত দূর সম্ভব একটি দক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠন করতে রাষ্ট্রপতির উদ্যোগকে সহযোগিতা করা বাঞ্ছনীয় মনে করেছে জাসদ।’
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে পাঁচ বছর পর পর বিব্রতকর অবস্থার সৃষ্টি হয়। তার থেকে স্থায়ী সমস্যার সমাধান করতে রাষ্ট্রপতি যেন ভূমিকা গ্রহণ করেন। ভবিষ্যতে একটি আইনি কাঠামো তৈরি করার জন্য তিনি যেন সরকারকে উপযুক্ত পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা দেন।
আইন তো রাষ্ট্রপতি নন, সংসদ করবে, তাহলে তার কাছে কেন এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে হাসানুল হক ইনু বলেন, আইন সংসদই করবে। সরকারই করবে। রাষ্ট্রপতি সংবিধানের রক্ষক। সংবিধানের নির্দেশনা বাস্তবায়নে তিনি ভূমিকা রাখতে পারেন। এ জন্য সরকারকে পরামর্শ দিতে অনুরোধ করা হয়েছে। ১১৮ অনুচ্ছেদ বাস্তবায়নে যেন সরকার উদ্যোগ নেয়। এ জন্য সব মহলকে বিব্রত হওয়া থেকে রেহাই দেওয়ার জন্য মহামান্য রাষ্ট্রপতি ভবিষ্যতের জন্য একটি আইনি কাঠামো তৈরি করতে উদ্যোগ নেবেন।
সংলাপে জাসদের প্রতিনিধিদলে অন্যদের মধ্যে আরও ছিলেন শিরীন আখতার, রবিউল আলম, মীর হোসাইন আক্তার, মোশারফ হোসেন, শাহ জিকরুল আহমেদ ও রেজাউল করিম তানসেন।
এনটি