আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: সৌদি আরবে বিদেশি রাষ্ট্র নেতাদের স্বাগত জানানো থেকে শুরু করে আঞ্চলিক সম্মেলনের প্রধানের দায়িত্ব পালন, গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় সব দায়িত্ব পালন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। এর মধ্য দিয়ে তিনি বৃদ্ধ পিতার কাছ থেকে যেমন দায়িত্ব নিজের হাতে তুলে নিচ্ছেন তেমনি হয়ে উঠছেন সৌদি আরবের মুকুটহীন বাদশাহ।
এদিকে ৮৬ বছর বয়সী বাদশাহ সালমানকে এখন আর প্রকাশ্যে বেশি দেখা যায় না। তার বদলে প্রেসিডেন্সিয়াল বৈঠক ও বিদেশি দূতদের স্বাগত জানানোর কাজটি করছেন ৩৬ বছরের এমবিএস বলে পরিচিত যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান।
২০১৭ সালের জুনে যুবরাজ হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বিন সালমানকে সৌদি আরবের ডি ফ্যাক্টো নেতা বলেই বিবেচনা করা হয়। তবে ডিসেম্বরের শুরুতে যখন তিনি ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং মঙ্গলবার উপসাগরীয় সহযোগিতা কাউন্সিল (জিসিসি)-এর নেতৃত্ব দেন তখন তার ক্রমে বাড়তে প্রভাব স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
বাদশাহ সালমান সাধারণত বার্ষিক বৈঠকগুলোর নেতৃত্ব দেন। আর উষ্ণ আলিঙ্গন এবং হাত মেলানোর মাধ্যমে প্রতিনিধিদের স্বাগত জানান। তবে এখন তার তাকে প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে না।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক থিংক ট্যাংক কার্নেগি এনডোমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিস-এর কর্মকর্তা ইয়াসমিন ফারুক ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘যুবরাজ দেশের ডি ফ্যাক্টো নেতা হিসেবে বিদেশি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করছেন এবং সম্মেলনে ভাষণ দিচ্ছেন।
এগুলো কেবল তখনই ঘটে যখন সৌদি বাদশাহর স্বাস্থ্য ভালো থাকে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘নতুন যেটা সেটা হলো জাতীয় পর্যায় এবং সংবাদমাধ্যমও যুবরাজের আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা মেনে নিচ্ছে, এমনকি তখনও যখন বাদশাহ সালমান তার দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।’
করোনা মহামারি শুরুর পর থেকেই বাদশাহ সালমান লোহিত সাগরের তীরবর্তী নিওম শহরে বসবাস করছেন। সর্বশেষ ২০২০ সালের মার্চে তিনি বিদেশি কর্মকর্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
ওই সময় তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তৎকালীন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোমিনিক রাব। আর আগে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে সর্বশেষ বিদেশ সফরে তিনি ওমান যান। ওমানের সুলতান কাবুসের মৃত্যুর পর শোক জানাতে যান তিনি।
সৌদি আরবে মধ্যপন্থী ইসলাম প্রতিষ্ঠার পথিকৃত হতে চান যুবরাজ। তবে ২০১৮ সালে তুরস্কের ইস্তানবুল কনস্যুলেটে সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগির হত্যার পর আর আন্তর্জাতিক সুনাম হুমকির মুখে পড়ে।
বিশ্বের শীর্ষ তেল রফতানিকারক হিসেবে কর্তৃত্ব করে আসা দেশটি এখন পর্যটন ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য নিজেদের দুয়ার খুলে দিচ্ছে। আর এই কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি।
ভিন্নমত দমনের অভিযোগ থাকলেও সৌদি যুবরাজ নারীদের গাড়ি চালানোর অনুমতি দেওয়াসহ বেশ কিছু ইতিবাচক পরিবর্তনের নেতৃত্ব দিয়েছন। ইসরায়েলের প্রতি মনোভাবের ক্ষেত্রে বাবার চেয়ে খানিকটা উদার তিনি।
ওয়াশিংটনের আরব গালফ স্টেটস ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তা ক্রিস্টিয়ান দিওয়ান মনে করেন, বাদশাহ দীর্ঘজীবী হওয়ার সুবিধা পাচ্ছেন যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান।
-এটি