আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ ইসকনকে উগ্র সংগঠন আখ্যা দিয়ে বাংলাদেশে হিন্দুত্ববাদী এ সংগঠনকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছে তিনটি ইসলামি রাজনৈতিক দল। বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ‘সমমনা ইসলামী দলসমূহ’র ব্যানারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানায় জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, নেজামে ইসলাম পার্টি। এ সময় আরো দুটি দাবি জানান ওই তিন ইসলামি দলের নেতারা।
এ ২ দাবি হলো- অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডসহ ইসকন সংগঠিত সব অপরাধের সুষ্ঠু বিচার করা। সাম্প্রদায়িক উসকানি বা দাঙ্গা পরিস্থিতি তৈরির অপচেষ্টা চালনাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা।
সংবাদ সম্মেলনে ‘সমমনা ইসলামী দলসমূহ’র পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সহসভাপতি মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী। তিনি বলেন, দেশের পরিবেশ-পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করতে, ছাত্র-জনতার বিপ্লবকে ব্যর্থ করতে বহুবিধ ষড়যন্ত্র চলছে। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন চক্র দেশের সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন করতে ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। দেশে সাম্প্রদায়িক সংঘাত ছড়িয়ে ইসকন নামে একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
ইসকনের বিভিন্ন কাজের নমুনা তুলে ধরে মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী বলেন, ইসকন বাংলাদেশে বিভিন্ন সাম্প্রদায়িক সংগঠন তৈরি করে উগ্র হিন্দুত্ববাদের বিস্তৃতি ঘটানোর চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। যেমন- জাতীয় হিন্দু মহাজোট, জাগো হিন্দু, বেসান্ত ইত্যাদি। বর্তমান অনলাইন জগতে যে ধর্ম অবমাননা তার ৯০ শতাংশ করে ইসকন। এনজিও হয়েও তারা রাজনীতি নিয়ে নাক গলায়। শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে চিন্ময় কৃষ্ণের বক্তব্য অনলাইনে পাওয়া যায়। তাদের হিংস্রতার নমুনা দেখা গেল অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলামকে হত্যার ঘটনায়।
তিনি আরও বলেন, ইসকনের বিরুদ্ধে বলা মানে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিরুদ্ধে বলা নয়। হিন্দু ভাই-বোনদের সতর্ক হতে হবে- যাতে ইসকনের পাতা ফাঁদে কেউ পা না দেয়।
এ সময় মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী আগামী শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) মসজিদে বয়ানে ইসকন সম্পর্কে বক্তব্য দিতে ও জনগণকে এ ব্যাপার সতর্ক করতে ইমামদের প্রতি আহ্বান জানান। পাশাপাশি সাম্প্রতিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে যাতে কেউ বিশৃঙ্খলা এবং দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি করতে না পারে, এ জন্য সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও ছিলেন- বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশ্রাফ, নেজামে ইসলামী পার্টির সিনিয়র নায়েবে আমির আবদুল মাজেদ, খেলাফত মজলিসের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসাইন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস প্রমুখ।