আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জারি করা নতুন লকডাউনের বিরুদ্ধে আজও নেদারল্যান্ডসে বিক্ষোভ চলছে।
আজ হেগে বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ওপর আতশবাজি নিক্ষেপ করে এবং সাইকেলে আগুন দেয়। অস্ট্রিয়া, ক্রোয়েশিয়া এবং ইতালিতেও হাজার হাজার বিক্ষোভকারী রাস্তায় নেমে এসেছে।
গত শুক্রবার রাতে হঠাৎ করেই বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে পড়ে নেদারল্যান্ডসের রটারডাম শহর। নাগরিকরা পুলিশের সঙ্গে সহিংস প্রতিবাদে নামেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ফাঁকা গুলির পাশাপাশি সরাসারি গুলিও ছুড়েছে পুলিশ। এতে পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়। একপর্যায়ে পুলিশের গাড়িতে এবং রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধরা।
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, সরকার ‘কোভিড পাস’ কার্ডের পরিকল্পনা নিয়েছে। এছাড়া আসন্ন নববর্ষ উপলক্ষে আতশবাজি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ। নেদারল্যান্ডসে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সম্প্রতি তিন সপ্তাহের জন্য লকডাউনও ঘোষণা করে সরকার।
করোনা ফের দাঁত-নখ বের করা শুরু করতেই আবারও কড়াকড়ি শুরু হয়েছে ইউরোপের একাধিক শহরে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ইউরোপের মধ্যে আবারও কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালক হ্যান্স ক্লুগ বলেছেন, ইউরোপে করোনা সংক্রমণ নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা খুব চিন্তিত। জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া না হলে আগামী মার্চ মাস নাগাদ ইউরোপে পাঁচ লাখ মানুষের মৃত্যুর রেকর্ড হতে পারে।
হ্যান্স ক্লুগ বলেন, ইতিমধ্যে ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ করোনা শনাক্তের উচ্চ হারের কথা বলেছে। এ ছাড়া জরুরি ব্যবস্থা হিসেবে সর্বাত্মক ও আংশিক লকডাউনের ঘোষণাও দিয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে সতর্কতার কথা বলা হয়েছে।
তিনি আরও বলেছেন, শীতের মৌসুমের পাশাপাশি অপর্যাপ্ত টিকাদান ও অধিক সংক্রামক করোনার ডেলটা ধরনের আঞ্চলিক আধিপত্যের কারণে করোনা ছড়িয়েছে বেশি। জরুরি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি, টিকা গ্রহণের হার বাড়ানো ও নতুন চিকিৎসা পদ্ধতি করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাহায্য করতে পারে।
ক্লুগ আরও বলেন, বাধ্যতামূলক টিকাদান ব্যবস্থাকে শেষ অবলম্বন হিসেবে দেখা উচিত, তবে বিষয়টি নিয়ে আইনি ও সামাজিক বিতর্ক করা সময়োপযোগী হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এদিকে করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় আগামী সোমবার থেকে ইউরোপের দেশ অস্ট্রিয়া পুরোপুরি লকডাউন শুরু করতে যাচ্ছে। এর আগে দেশটিতে যারা করোনার টিকা নেননি, তাদের জন্য লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছিল।
বিবিসির খবরে বলা হয়, অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর আলেকজান্ডার শ্যালেনবার্গ বলেছেন, দেশটিতে পূর্ণ লকডাউন ২০ দিন চালু থাকবে। আগামী বছরের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে টিকা নিতে আইনি বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হবে। স্লোভেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হেগার আগামীকাল থেকে টিকা না নেওয়া লোকজনের জন্য লকডাউনের ঘোষণা দিয়েছেন।
চেক প্রজাতন্ত্রও বিভিন্ন বিধিনিষেধ জারি করেছে। নেদারল্যান্ডস আংশিক লকডাউন শুরু করেছে। জার্মানিও টিকা না নেওয়া লোকজনের জন্য কঠোর বিধিনিষেধ জারি করতে সম্মত হয়েছে।
-এটি