শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
অ্যাডভোকেট আলিফের কবর জিয়ারত ও পরিবারের পাশে হেফাজতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ  প্রাইমারি স্কুলে আলেম ধর্মীয় শিক্ষক বাধ্যতামূলক করতে হবে: মাওলানা ইসলামাবাদী বগুড়ায় ছাত্র আন্দোলনে আহত ও শহীদদের স্মরণে স্মরণসভা শেরপুরে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহিদদের স্মরণে স্মরণসভা শেরপুরে শেখ হাসিনাসহ ৫৯ জনের নামে মামলা কাল বাদ জুমা বায়তুল মোকাররমে হেফাজতে ইসলামের বিক্ষোভ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে যা বললেন জামায়াত আমীর হজ নিবন্ধনের সময় বাড়ল ১৫ দিন রাষ্ট্রদ্রোহী সংগঠন চলতে দেয়া হবে না: মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী ২২৫০০ কোটি নতুন টাকা ছাপিয়ে ৬ ব্যাংককে দিল বাংলাদেশ ব্যাংক

রায়বেন্ড ইজতেমার শেষ পর্ব থেকে জামাত বের হয়েছে ২৩৩৫

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আবদুল্লাহ তামিম।। বিশ্ববাসীর হেদায়াত কামনা করে আজ রোববার মাওলানা ইবরাহিম দেওলার দোয়ায় শেষ হলো রায়বেন্ড ইজতেমার ২য় পর্ব। এর আগে গত রোববারও মাওলানা ইবরাহিম দেওলার দোয়ায় শেষ হয়েছে প্রথম পর্ব।

আজ রোববার সকাল ১১ টার থেকে শুরু হওয়া দোয়ার মাধ্যমে শেষ হয়েছে দ্বিতীয় পর্বের রায়বেন্ড ইজতেমা। শেষ পর্ব থেকে জামাত বের হয়েছে ২৩৩৫। ইজতেমা শেষে আগামী ইজতেমার তারিখসহ বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয় আলমি শুরার সদস্যরা।

আগামী বছর ২০২২ সালের ইজতেমা শুরু হবে ৪ নভেম্বর। প্রথম পর্ব শেষ হবে ৭ নভেম্বর। দ্বিতীয় পর্ব শুরু হবে ১১ নভেম্বর শেষ হবে ১৪ নভেম্বর। বাংলাদেশের ইজতেমা শুরু হবে জানুয়ারির নির্ধারিত তারিখে। রায়বেন্ডে পুরাতন সাথীদের জোড় অনুষ্ঠিত হবে ১ মার্চ থেকে ৬ মার্চ পর্যন্ত। করাচির ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে ২৭ থেকে ৩০ জানুয়ারি।

এবারের ইজতেমা থেকে বিদেশি সালের জামাত বের হয়েছে ১৬০ টি। সাত মাসের জামাত বের হয়েছে ৪৩টি। চিল্লার জামাত ৯৯টি। ভিন্ন ভিন্ন দিনের জামাত ১৮৭৯ টি। অন্যান্য জামাত ১৫৪টি।

সকাল ১১ টার থেকে শুরু হয় মাওলানা ইবরাহিম দেওলার বিশেষ বয়ান। বয়ান শেষে আখেরী মুনাজাত করেন। মুনাজাতের আগে হেদায়াতি বয়ানে তিনি বলেন, কিয়ামতের ময়দান উপস্থিত হয়ে গেলে তখন আর কোনো কাজ আমল কাজে আসবে না। সময় কে আমাদের কাজে লাগাতে হবে। মোবাইলে সময় বেশি দিবেন না। যতক্ষণ প্রয়োজন কথা সেরে মোবাইল রেখে দিবেন। কিয়ামতের আগে কুরআন পড়া ওঠে যাবে। আজ আমরা মোবইলে যে সময় ব্যয় করি কুরআনে সে সময় ব্যয় করি না। আজ সারা বিশ্ব নবির সাথে ও নবি ওয়ালা কাজের সঙ্গে দুষমনি করে। তাওয়াত তাবলিগের প্রতি মানুষ শত্রুতা পোষণ করে। তাই আমাদের দোয়া করতে হবে বেশি বেশি। আল্লাহর কাজ করতে হবে আর আল্লাহর কাছে চাইতে হবে।

তিনি আরো বলেন, আল্লাহ সবচেয়ে বড় আল্লাহ যত বড় আল্লাহর দরবারও তত বড়। তিনি ডাকতে থাকেন তোমরা আমার কাছে চাও। আল্লাহ আমাদের কে দোয়ার বিধান দিয়েছেন। আমাদের যে কোনো প্রয়োজনে আল্লাহর কাছে দোয়া করতে বলেছেন। এ জন্য আল্লাহর কাছে বিশ্বাস ও আশা নিয়ে দোয়া করতে হবে।

গত ১১ তারিখ বৃহস্পতিবার শুরু হয়ে আজ রোববার আখেরী মুনাজাতের মাধ্যমে শেষ হয়েছে পাকিস্তানের রায়বেন্ড ইজতেমার
২য় পর্ব। আলমি শুরার সব তাবলিগের মুরব্বিদের উপস্থিতিতে এ ইজতেমা শুরু হয়।

১ম পর্বের আখেরী মুনাজাতের পূর্বে মাওলানা ইবরাহিম দেওলা বয়ানে বলেন, দাওয়াত দিতে হবে বিশ্বাসের সাথে, নমনিয়তার সাথে। নবিওয়ালা কাজের জন্য নবিওয়ালা গুণ প্রয়োজন। ইলম ও জিকিরের সাথে দাওয়াত দিতে হবে। ইলম ও জিকির যদি দাওয়াতের মধ্যে না থাকে তাহলে সে দাওয়াতে প্রাণ থাকবে না। ইবাদতের মাধ্যমে দাওয়াত দিতে হবে। শুধু মানুষকে দাওয়াত দিলেই হবে না। দাওয়াত দেয়ার আগে নিজে সবচেয়ে বেশি আমল করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, ব্যবসা রাসুল সা এর সুন্নাত। এ ব্যবসার মাঝেও তুমি সুন্নাহ মুতাবেক আমল করে দাওয়াত দিতে পারো। ঠিক তেমনই আদাব মুয়াআমালাত মুয়াশারাত এর মধ্যে সুন্নাত মত আমল করে দাওয়াত দিতে হবে। শুধু মুখে নয় বেশির থেকে বেশি আমল করে দাওয়াত দিতে হবে। তোমার মুখে দাওয়াত দিয়ে যতটা না লাভবান হবে তার চেয়ে বেশি তোমার আমলের মাধ্যমে বেশি দাওয়াত হবে।

এর আগে এ ইজতেমায় যোগ দিতে হাজার হাজার মুসল্লি অংশ নিয়েছেন বিশ্বের প্রায় ৫০টি দেশ থেকে। তাবলিগ জামাত কয়েক বছর আগে বিভিন্ন শহরের অংশগ্রহণকারীদের দুটি দলে বিভক্ত করে দুই ধাপে ইজতিমা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।

কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে গত দুই বছরে বিভিন্ন দেশের মুসলমানরা ইজতিমায় অংশ নিতে পারেনি। তবে ইন্দোনেশিয়া, ফ্রান্স, স্পেন, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, আফগানিস্তান, ভারতসহ অন্যান্য দেশ থেকে এ বছর ইজতিমায় অংশ নিয়েছেন।

এদিকে সরকারের পক্ষ থেকেও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। যদিও তাবলিগের জামাতের স্বেচ্ছাসেবকদের দ্বারা পরিচালিত হবে নিরাপত্তার বিষয়টি। তবে জামাতের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিপুল সংখ্যক নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। রায়উইন্ড মারকাজের চারপাশে ওয়াকথ্রু গেট, সার্চলাইট, সিসিটিভি ক্যামেরা এবং পুলিশ পোস্ট স্থাপন করা হয়েছে। মূল ইজতেমায় প্রবেশের আগে বিভিন্ন পয়েন্টে স্টপ অ্যান্ড সার্চ পয়েন্টও স্থাপন করা হয়েছে।

নগর ট্রাফিক পুলিশ ইজতেমা চলাকালীন যানজটের বোঝা মোকাবেলায় একটি ব্যাপক পরিকল্পনা তৈরি করেছে। ট্রাফিক পুলিশ পার্কিং এলাকাও স্থাপন করেছে, যেগুলো শহরের পৌর প্রশাসন দ্বারা পরিচালিত হবে। রবিবার ট্রাফিক পুলিশ লাহোর থেকে রায়উইন্ড পর্যন্ত যান চলাচলে বাধা দেবে। ডিআইজি অপারেশন লাহোর ক্যাপ্টেন (অব.) সোহেল চৌধুরী বলেন, ইজতেমায় ২০০০ হাজারেরও বেশি পুলিশ উচ্চ সতর্কতায় থাকবে।

এ ঐতিহ্যবাহী ইজতেমায় অংশ নিয়েছেন ভারত, বাংলাদেশ, ফ্রান্স, আরব দেশ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, আফ্রিকার তাবলিগী জামাতের মুরব্বিগণ। এ পর্যন্ত যারা সভাস্থলে পৌঁছেছেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ভারত থেকে মাওলানা ইব্রাহিম দেওলা, মাওলানা আহমদ লাট, মাওলানা ইসমাইল গোধরা, হাজী ফারুক ব্যাঙ্গালোর, মাওলানা আব্দুল রহমান মুম্বাই, সানাউল্লাহ সাহেব, মাওলানা জহিরুল হাসান কান্ধলভী, মাওলানা উসমান কাকুসী, হযরত সানোবর দিল্লী। বাংলাদেশ থেকে আগমন করেছেন, মাওলানা ক্বারী জুবায়ের, মাওলানা রবিউল হক, মাওলানা আব্দুল মতিন, মাওলানা আব্দুল বার, এছাড়াও অন্যান্য দেশ থেকে শেখ গাসান মদিনা সৌদি আরব, শেখ ইউনিস ফ্রান্স, শেখ নোমান আবু আল লায়ল,
শেখ ওমর আল-খতিব প্রমুখ।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ