আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: মার্কিন কংগ্রেসে গতকাল বুধবার প্রতিরক্ষা দপ্তর—পেন্টাগনের একটি প্রতিবেদন পেশ করা হয়। যা নিয়ে কংগ্রেসে শোরগোল পড়ে গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে—যুক্তরাষ্ট্রের ধারণার চেয়ে অনেক দ্রুত গতিতে চীন নিজেদের পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার বৃদ্ধি করেছে। পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা বেড়ে এক হাজারে দাঁড়াবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে এ খবর জানিয়েছে।
সম্প্রতি চীন একটি ক্ষেপণাস্ত্রের (মিসাইল) পরীক্ষা করেছে। গোটা পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করতে পারে এ মিসাইল। এরপরেই নিজেদের আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। সে ঘটনার পরপরই মার্কিন কংগ্রেসে পেশ করা হলো পেন্টাগনের প্রতিবেদন।
পেন্টাগনের দাবি, চীন নানা পাল্লার পরমাণু অস্ত্র তৈরি করছে। এবং ২০৩০ সালের মধ্যে এসব অস্ত্রের সংখ্যা এক হাজারে পৌঁছে যাবে বলে মনে করছে পেন্টাগন। এত বেশি পরমাণু অস্ত্র যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া ছাড়া আর কারও হাতে নেই। এ ছাড়া পরমাণু-চালিত ব্যালেস্টিক মিসাইলও চীন দ্রুত গতিতে তৈরি করছে বলে পেন্টাগনের অনুমান।
চীনের কাছে পানি, ভূমি ও আকাশ থেকে ছোড়ার মতো পারমাণবিক অস্ত্র থাকতে পারে বলে মনে করে পেন্টাগন। এখন পর্যন্ত এসব অস্ত্র কেবল যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার কাছেই রয়েছে। শুধু তাই নয়, ইন্টারকন্টিনেন্টাল বা এক মহাদেশ থেকে অন্য মহাদেশে ছোড়ার মতো পরমাণবিক অস্ত্রও এখন চীনের অস্ত্রভাণ্ডারে রয়েছে।
পেন্টাগন বলছে—মিসাইল ছোড়ার জন্য চীন অন্তত তিনটি নতুন ‘ফিল্ড’ তৈরি করছে। এসব ফিল্ডে মাটির গভীরে তৈরি স্থাপনা থেকে আন্তঃমহাদেশীয় পারমাণবিক অস্ত্র ছোড়া সম্ভব।
পেন্টাগনের বক্তব্য—কারও ওপর আক্রমণের জন্য চীন এভাবে পরমাণবিক শক্তি বৃদ্ধি করছে না। তারা শক্তির পরীক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়াকে টেক্কা দিতে চাইছে। এবং ক্ষমতার ভারসাম্যে নিজেদের অবস্থান জোরদার করাসহ প্রতিপক্ষের ওপর চাপ তৈরি করে রাখতে চাইছে। প্রয়োজনে তারাও যে সমান শক্তি নিয়ে আক্রমণ চালাতে পারে, সে বার্তা দিয়ে রাখছে চীন।
এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে চীন কয়েক বছর ধরেই শক্তিবৃদ্ধি করছে। পেন্টাগন বলছে—চীনের সামরিক বাহিনী জল, স্থল, আকাশ, মহাকাশ ও প্রযুক্তি—সব ক্ষেত্রেই শক্তি বাড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পরীক্ষা নিতে চাইছে।
চীনের সামরিক শক্তিবৃদ্ধি নিয়ে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছিল। বর্তমানে জো বাইডেন ক্ষমতায় আসার পরেও এ বিষয়ে সম্পর্কের উন্নতি হয়নি। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য অস্ট্রেলিয়ার সামরিক শক্তি উন্নত করার চেষ্টা করছে। অস্ট্রেলিয়াকে পরমাণবিক অস্ত্র উৎক্ষেপণযোগ্য সাবমেরিন দেওয়া হচ্ছে। যার অর্থ, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতা বাড়ানো। ভারত, জাপান ও অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে জোট গঠনেরও চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র।
-এটি