আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: একটি ভালো লিভারের দাম প্রায় দেড় লাখ ডলার (বাংলাদেশি টাকায় ১ কোটি ২৮ লাখের বেশি), আর ভাল মানের কিডনি অবশ্য তার কিছুটা কম।
অস্ট্রেলিয়ার একটি সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, আন্তর্জাতিক চোরাবাজারে বিক্রি হওয়া এসব অঙ্গপ্রত্যঙ্গের বড় অংশের মালিক চীনের জিনজিয়াং প্রদেশের ক্যাম্পে বন্দি উইঘুর মুসলিমরা।
গতকাল শনিবার (৩০ অক্টোবর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুস্তান টাইমসের একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
উইঘুর মুসলিমদের পাশাপাশি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী তিব্বতি এবং ফালুন গং গোষ্ঠীর বন্দিদের থেকেও জোর করে এমন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সংগ্রহ করা হচ্ছে বলে ওই প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, একদলীয় শাসনাধীন চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সরকার বেআইনিভাবে বছরে অন্তত ১০০ কোটি ডলারের অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ব্যবসা চালাচ্ছে।
চলতি বছরের শুরুতে কয়েকটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা চিন সরকারদের বিরুদ্ধে উইঘুর, তিব্বতি এবং ফালুন গং বন্দিদের অঙ্গ কেটে বিক্রির অভিযোগ তুলেছিল। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে।
চিনের বিভিন্ন বন্দি ক্যাম্পে আনুমানিক ২০ লাখ তুর্কিভাষী উইঘুর মুসলিমকে বন্দি করে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের। যৌনাঙ্গে ইলেকট্রিক শক, নিষিদ্ধ ওষুধ প্রয়োগ-সহ বন্দিদের উপর নানা অত্যাচার করা হয় বলে অভিযোগ। রয়েছে নারীদের বন্দিদের ধর্ষণের অভিযোগও।
এর আগে উইঘুর মুসলিমের সম্পদ নিলামে তুলে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। ওই সম্পদের আনুমানিক মূল্য অন্তত ৮৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বলে ধারণা করা হচ্ছে।
চীনা প্রশাসন ২০১৯ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত অন্তত ২১ উইঘুর মুসলিমের সম্পত্তি নিলামে বিক্রি করেছে বলে তারা জানতে পেরেছে। যার বাজারমূল্য প্রায় ৮৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। স্থানীয় আদালতের মাধ্যমে একটি ই-কমার্স সাইটে নিলাম ডেকে ওই সম্পদ বিক্রি করে দেওয়া।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সাল থেকেই অভিযোগ- উইঘুর ব্যবসায়ীদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করছে চীনা প্রশাসন। দেশটির প্রশাসনের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অভিযোগ- কথিত চরমপন্থা রুখতে প্রায় ৪০ লাখ উইঘুর মুসলিমদের ক্যাম্পে বন্দী করেছে বেইজিং। তবে বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে তারা। চীনা প্রশাসনের দাবি, বন্দী নয়, চরমপন্থারোধে তাদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে রাখা হয়েছে।
-এটি