শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
অ্যাডভোকেট আলিফের কবর জিয়ারত ও পরিবারের পাশে হেফাজতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ  প্রাইমারি স্কুলে আলেম ধর্মীয় শিক্ষক বাধ্যতামূলক করতে হবে: মাওলানা ইসলামাবাদী বগুড়ায় ছাত্র আন্দোলনে আহত ও শহীদদের স্মরণে স্মরণসভা শেরপুরে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহিদদের স্মরণে স্মরণসভা শেরপুরে শেখ হাসিনাসহ ৫৯ জনের নামে মামলা কাল বাদ জুমা বায়তুল মোকাররমে হেফাজতে ইসলামের বিক্ষোভ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে যা বললেন জামায়াত আমীর হজ নিবন্ধনের সময় বাড়ল ১৫ দিন রাষ্ট্রদ্রোহী সংগঠন চলতে দেয়া হবে না: মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী ২২৫০০ কোটি নতুন টাকা ছাপিয়ে ৬ ব্যাংককে দিল বাংলাদেশ ব্যাংক

উগান্ডায় দিনদিন জনপ্রিয় হচ্ছে শরিয়া আইন

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পূর্ব আফ্রিকার দেশ উগান্ডায় প্রচলিত আইনের চেয়ে শরিয়া আইন ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। শরিয়া আইন ইসলাম ধর্মভিত্তিক আইনব্যবস্থা।

ইসলাম ধর্মের উৎসমূল কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে প্রণীত আইন। আরবি ভাষায় শরিয়া আইন বলতে, আল্লাহর নির্দেশিত অপরিবর্তনীয় ঐশী শাসনব্যবস্থা, যা মানুষের বুদ্ধিবৃত্তিক ব্যাখ্যাবিশ্লেষণের আলোকে গঠিত হয়।

পূর্ব আফ্রিকার দেশ উগান্ডায় ৪৬ মিলিয়ন জনসংখ্যা। এদের মধ্যে মাত্র ১৩ শতাংশ মুসলিম বসবাস করে। ১৯৯৫ সালে দেশটিতে নতুন সংবিধান গৃহীত হয়। সংবিধানে শরিয়া আইনের উদ্ধৃতি দেওয়া হলেও নির্দেশক নীতির অভাবের কারণে তা বাস্তবায়নে দীর্ঘ সময় প্রয়োজন।

সর্বশেষ ২০১৯ সালে উগান্ডা সরকার দেশটির সব জেলায় শরিয়া আদালত প্রতিষ্ঠা করে। এরপর থেকে ধীরে ধীরে তা মুসলিম জনগোষ্ঠীর মধ্যে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। গত তিন মাসে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বুগিরি জেলার শরিয়া আদালতে ১৪০টি মামলা নিষ্পত্তি হয়। প্রতিটি জেলায় একজন শরিয়া সেক্রেটারি আছেন এবং জাতীয় পর্যায়ে একজন পরিচালকের নেতৃত্বে একটি শরিয়া অধিদপ্তর রয়েছে।

উগান্ডা মুসলিম সুপ্রিম কাউন্সিলের মুখপাত্র আশরাফ মুভাওয়ালা তুরস্কভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আনাদোলু এজেন্সিকে বলেন, উগান্ডায় শরিয়া আদালত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। শরিয়া আদালতে প্রতিদিন খুবই ব্যস্ত সময় পার করছে। প্রতিদিন অসংখ্য লোক নতুন মামলা নিয়ে আসেন।

শরিয়া আদালতে আশ্রয়ের প্রধান কারণ হিসেবে মুভাওয়ালা বলেন, দেশের পুলিশ ও ম্যাজিট্রেট আদালতে প্রচুর দুর্নীতি হয়। ফলে দেশের মুসলিম জনগোষ্ঠী ও তাদের মধ্যে আস্থার সংকট হচ্ছে। মায়ুগ জেলার মসজিদের ইমাম শায়খ হাবিব লুগায়া বলেন, ‘দেশের সংবিধানে শরিয়া আইন রয়েছে। তবে তা শুধু দেওয়ানি মামলা নিয়ে কাজ করে, ফৌজদারি ক্ষেত্রে নয়।’

মুসলিম সুপ্রিম কাউন্সিলের সাবেক মুখপাত্র হাজি আবদুল নেরেকো মুতুম্বা এক প্রবন্ধে লিখেন, ‘শরিয়া আদালত একটি উপায় হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে, যেখানে মুসলিমরা তাদের বিরোধগুলো দ্রুত সমাধান করতে পারে। এর মাধ্যমে দ্রুততর সময়ে অল্প খরচে দুর্বল ব্যক্তিরা ন্যায়বিচার পেতে পারে।’

তিনি আরো জানান, উগান্ডার মুসলিমরা গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে শরিয়া আইন সমর্থন করেছে। কারণ ধর্মনিরপেক্ষ আইন তাদের সন্তুষ্ট করতে পারে না। তাই মুসলিমরা যেখানে বসবাস করে সেখানে শরিয়া আইন থাকাও জরুরি।

শরিয়া আদালতে আশ্রয় নিয়ে সুফল পাচ্ছে উগান্ডার অসংখ্য ভুক্তভোগী। তিন সন্তানের জননী সাফিনা নামুকোসেকে (৩০) তাঁর স্বামী ভরণপোষণের খরচ দেওয়া বন্ধ করে আরেক নারীকে বিয়ে করে। সাধারণ আদালতে স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করলেও তার বিরুদ্ধে কোনো ন্যায়বিচার পাচ্ছিলেন না। বরং স্থানীয় পুলিশকে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ করে তিনি স্বামীকে দোষারোপ করেন।

দীর্ঘদিন দৌড়ঝাপ করেও পুলিশের সহায়তা না পেয়ে ভুক্তভোগী নামুকোসেকে স্থানীয় শরিয়া আদালতের শরণাপন্ন হন। অতঃপর কিছু দিনের মধ্যে স্বামী-স্ত্রী সমঝোতা করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন। স্বামী প্রথম স্ত্রী ও সন্তানদের ভরণপোষণের খরচ দেওয়া শুরু করেন।
সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি, ইকনা

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ