আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের গুয়ানতানামো বে কারাগার থেকে ১৭ বছর পর মুক্তি পেলেন পাকিস্তানের এক ট্যাক্সি চালক। কোনো অপরাধ না করেও কারাবন্দি ছিলেন ওই ব্যক্তি। বিনা দোষে তাকে নির্মম নির্যাতনের শিকার হতে হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় সময় শুক্রবার( ২২ অক্টোবর) রিপ্রাইভ নামে একটি মানবাধিকার সংগঠন আহমেদ রাব্বানির মুক্তির বিষয়টি ঘোষণা করে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর এবং জননিরাপত্তা বিভাগসহ ছয়টি মার্কিন সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত কারাগারের পর্যালোচনা বোর্ড রাব্বানিকে সর্বসম্মতিক্রমে মুক্তির অনুমতি দিয়েছে।
৯/১১-র হামলার পর ২০০২ সালে পাকিস্তানের করাচিতে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক হন রাব্বানি। হাসান গুলকে ধরতে তৎপরতা শুরু হলে তার অ্যাপার্টমেন্টের বাইরে থেকে ভুলবশত আটক করা হয় আহমেদ রাব্বানিকে। পরে তাকে আমেরিকান সৈন্যদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পৃক্ত সন্দেহে একই দিনে রাব্বানির আরেক সহযোগীকে আটক করা হয় যে ওসামা বিন লাদেনের নিরাপত্তাজনিত কাজে সহযোগিতা করতো। যদিও রাব্বানি কোনো অপরাধের জন্য কখনও অভিযুক্ত হয়নি এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তারপরেও তাকে আটকের পর আফগানিস্তানে ৫৪৫ দিন আটকে রেখে চরম নির্যাতন করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে ২০১৪ সালে রাব্বানিকে নির্যাতনের প্রতিবেদন উঠে আসে। তাকে এমনভাবে নির্যাতন করা হয়েছিল যে তিনি একবার নিজের হাত কেটে আত্মহত্যার চেষ্টাও করেন।
রিপ্রাইভ-এর তথ্য অনুযায়ী, রাব্বানিকে জিজ্ঞাসাবাদকারীরা জানতেন যে তারা ভুল ব্যক্তিকে ধরেছেন, তারপরও যে কোনোভাবে তাকে নির্যাতন করা হতো। এক বছর পর তাকে গুয়ানতানামো বে কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। কোনো বিচারের মুখোমুখি করা হয়নি তাকে, নেই কোনো অভিযোগ। তবুও জীবন থেকে চলে গেছে ১৭টি বছর।
২০১৮ সালে লস অ্যাঞ্জেলস টাইমসে করা মন্তব্যে বন্দি থাকাকালে রাব্বানি শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়াসহ আরও বিভিন্ন ধরনের নির্মম নির্যাতনের কথা তুলে ধরেন। তার সেই বক্তব্য গোটা বিশ্বে আলোড়ন তোলে। তিনি লেখেন, গুয়ানতানামো বেতে সকাল বা সন্ধ্যা বলতে কিছু নেই, আছে শুধুই হতাশা।
সূত্র: আরটি নিউজ
এনটি