বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


বিশ্বকে নাড়িয়ে দেওয়া সিরিয়ান পিতা-পুত্রের ছবি জিতল পিকচার অফ দ্যা ইয়ার পুরস্কার

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

জুলফিকার জাহিদ।।

এক পায়ের উপর দাঁড়িয়ে থাকা সিরিয়ান এক বাবা ও তার প্রতিবন্ধী শিশুর হৃদয় ছোঁয়া ছবি সিয়ানা ইন্টারন্যাশনাল ফটো প্রতিযোগিতা ২০২১ - এ পিকচার অফ দ্যা ইয়ার পুরস্কার জিতেছে।

ছবিটির শিরোনাম ছিল ‘ একটি ছবির গল্প ও  জীবনের কষ্ট’।

সিরিয়ার সীমান্তবর্তী রেহানিয়া এলাকা থেকে ছবিটি তুলেছিলেন  মুহাম্মদ আসলান নামে এক তুর্কি ফটোগ্রাফার। যেখানে একজন বাবা ও এমন এক সন্তানের আবেগপূর্ণ মুহূর্তের দৃশ্য ফুটিয়ে তোলা হয়েছে; যে সন্তানটির জন্ম থেকেই কোন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ নেই।

শিশুটি প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণ ছিল, তার মায়ের উপর সিরিয়ার সেনাবাহিনী বিষাক্ত রাসায়নিক অস্ত্রের হামলা।

২০১৭ সালে উত্তর পশ্চিম সিরিয়ার ইদলিব প্রদেশের খান শেখুন নামে শহরে সিরিয়ার সেনাবাহিনী যেই ভয়াবহ রাসায়নিক হামলা চালায় এতে শিশুটির মা অজ্ঞান হয়ে পড়েন। এরপর যখন শিশুটির মায়ের চিকিৎসা করানো হয় তখন এ বিষয়টির প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়নি যে তিনি গর্ভবতী ছিলেন।

বিষাক্ত রাসায়নিক  অস্ত্রের হামলা ও সঠিক চিকিৎসা না হওয়ায় তার গর্ভের সন্তান প্রতিবন্ধী হয়ে জন্মগ্রহণ করে। জন্ম থেকেই শিশুটির দুই হাত-পায়ের একটিও নেই।

প্রতিবন্ধী এই শিশুটির নাম মোস্তফা। তার বাবা মুনথার আল-নাজল আল হাদিস টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, ২০১৭ সালের এপ্রিলে সিরিয়ার ইদলিবের খান শিখুন শহরে যেই রাসায়নিক অস্ত্র হামলা চালিয়েছিল আসাদ বাহিনী তাতে তিনি মারাত্মক আহত হয়েছিলেন। এর ফলে তার ডান পা কেটে ফেলতে হয়েছে। তিনি পেট কোমর ছাড়াও শরীরের বিভিন্ন জায়গায়র মারাত্মকভাবে আহত হয়েছিলেন।

আল-হাদিস চ্যানেলের সাথে কথা বলার সময় আল-নাজল তার প্রতিবন্ধী শিশুর ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত ও নিশ্চিত করতে শিশুটি চিকিৎসা ও কৃত্রিম অঙ্গ স্থাপনের জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কাছে আবেদন করেছেন। তার সন্তান যেন খেলার সাথীদের সাথে স্কুলে যাওয়ার যোগ্য হয়ে উঠতে পারে এ প্রত্যাশাও করেছেন তিনি।

মোস্তফা ছাড়া তার অন্যান্য ভাই-বোনেরা স্বাভাবিক এবং সুস্থ বলে জানিয়েছেন তার বাবা।

তিনি আরো জানিয়েছেন, তিনি নিজেও দুর্ঘটনার আগে পড়াশোনা করছিলেন। স্নাতক শেষ করার পর তার সাথে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

এখন পর্যন্ত কোনো সাহায্য সংস্থা বা চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান মোস্তফার চিকিৎসার বিষয়ে কোন ধরনের যোগাযোগ করেননি বলে জানিয়েছেন মুনথার আল-নাজল।

তিনি আরো জানান, তার সন্তানের হাড় শক্তিশালী ও লম্বা করতে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন। এরপর তাকে হাঁটতে সক্ষম করতে স্মার্ট কৃত্রিম অঙ্গ প্রত্যঙ্গের প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কাছে তিনি সহায়তা চেয়েছেন এবং জানিয়েছেন তার একার পক্ষে সন্তানের চিকিৎসা করানো সম্ভব নয়।

সূত্র: আল আরাবিয়া।

এনটি


সম্পর্কিত খবর