শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
অ্যাডভোকেট আলিফের কবর জিয়ারত ও পরিবারের পাশে হেফাজতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ  প্রাইমারি স্কুলে আলেম ধর্মীয় শিক্ষক বাধ্যতামূলক করতে হবে: মাওলানা ইসলামাবাদী বগুড়ায় ছাত্র আন্দোলনে আহত ও শহীদদের স্মরণে স্মরণসভা শেরপুরে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহিদদের স্মরণে স্মরণসভা শেরপুরে শেখ হাসিনাসহ ৫৯ জনের নামে মামলা কাল বাদ জুমা বায়তুল মোকাররমে হেফাজতে ইসলামের বিক্ষোভ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে যা বললেন জামায়াত আমীর হজ নিবন্ধনের সময় বাড়ল ১৫ দিন রাষ্ট্রদ্রোহী সংগঠন চলতে দেয়া হবে না: মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী ২২৫০০ কোটি নতুন টাকা ছাপিয়ে ৬ ব্যাংককে দিল বাংলাদেশ ব্যাংক

হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রে সবার আগ্রহের কারণ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: অনেকেরই হয়তো চোখ এড়ায়নি যে পৃথিবীর প্রধান সামরিক শক্তিগুলো ইদানিং ঘন ঘন ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, এমনকি উত্তর কোরিয়া এই সবগুলো দেশই গত এক মাসের মধ্যে তাদের 'হাইপারসনিক' অর্থাৎ শব্দের চেয়ে কয়েকগুণ দ্রুতগতিসম্পন্ন ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে।

কিন্তু কেন এটা ঘটছে, ব্যাপারটা কী?

বিশ্লেষকরা বলছেন, পৃথিবীর ক্ষমতাধর দেশগুলোর মধ্যে সামরিক শক্তিতে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের প্রতিযোগিতার একটা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ পর্ব চলছে এখন।

এ মুহূর্তে প্রতিযোগিতাটা হচ্ছে ক্ষেপণাস্ত্রের ক্ষেত্রে। এতদিন ধরে বিভিন্ন দেশের হাতে যেসব দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ছিল, সেগুলো অনেকটা সেকেলে হয়ে যাচ্ছে এবং তার শূন্যস্থান পূরণ করতেই এ প্রতিযোগিতা। কার আগে কে নতুন প্রজন্মের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করতে পারে।

তাছাড়া, পরাশক্তিগুলোর হাতে এখন যেসব প্রচলিত ক্ষেপণাস্ত্র আছে, এগুলো যেভাবে ঠেকাতে হবে তার কৌশল প্রতিপক্ষ দেশগুলো ইতোমধ্যেই বের করে ফেলেছে ।

তাই চেষ্টা চলছে এমন এক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির, যা প্রচলিত ক্ষেপণাস্ত্র-প্রতিরক্ষা ব্যূহকে ভেদ করতে পারবে।

ঠিক এ লক্ষ্য নিয়েই তৈরি হচ্ছে হাইপারসনিক মিসাইল। যা এত দ্রুতগতির যে তা উড়ে এসে আঘাত হানার আগে চিহ্নিত করা বা মাঝপথে তাকে ধ্বংস করে দেয়া খুব কঠিন।

কত দ্রুত ছুটতে পারে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র?

অনেকেই জানেন যে শব্দের গতি হচ্ছে প্রতি সেকেণ্ডে ১,১২৫ ফুটের মত। অনেক সামরিক জেট বিমান বা অধুনাবিলুপ্ত কনকর্ডের মত যাত্রীবাহী বিমানও এর চেয়ে বেশি দ্রুত অর্থাৎ 'সুপারসনিক' গতিতে উড়তে পারে।

কিন্তু একটা হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুটতে পারে শব্দের চেয়ে পাঁচ থেকে নয় গুণ বেশি গতিতে।

এটা থেকে খানিকটা ধারণা পাওয়া যায় যে এই মিসাইল কত দ্রুতগামী এবং কেন এর মোকাবিলা করা কঠিন।

তিনটি দেশের মিসাইল টেস্ট

অন্তত আটটি দেশ এখন হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে। হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের অধিকারী হবার জন্য কেমন প্রতিযোগিতা চলছে, তা বোঝা যায় সাম্প্রতিক কিছু খবর থেকে।

সম্প্রতি লন্ডন থেকে প্রকাশিত অর্থনীতি বিষয়ক প্রভাবশালী সংবাদপত্র ফিনান্সিয়াল টাইমসের এক রিপোর্ট বিশ্বে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। এতে বলা হয়, গত অগাস্ট মাসে চীন শব্দের চেয়ে পাঁচগুণ দ্রুতগতিসম্পন্ন এবং পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম একটি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে।

যুক্তরাষ্ট্র এতে উদ্বেগ প্রকাশ করে। যদিও চীন দাবি করছে যে ওটা ছিল পুনর্ব্যবহারযোগ্য একটি মহাকাশযান ক্ষেপণাস্ত্র নয়। চীনের কথায় অবশ্য ওয়াশিংটনের উদ্বেগ কাটেনি। চীন মিসাইল প্রযুক্তিতে আসলে কতটা উন্নতি করে ফেলেছে এবং এর পরিণাম কী হবে এ নিয়ে পেন্টাগনের প্রধানরা দুর্ভাবনায় পড়ে গেছেন।

এর মাত্র কিছুদিন আগে অক্টোবরের ৪ তারিখে বার্ত সংস্থা এপি খবর দেয় যে রাশিয়া তাদের একটি পারমাণবিক সাবমেরিন থেকে একটি হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের পরীক্ষা সফলভাবে সম্পন্ন করেছে। ব্যারেন্টস সীতে 'সেভারোদভিনস্ক' সাবমেরিন থেকে জিরকন নামের দুটি ক্ষেপণাস্ত্রের এই পরীক্ষা চালানো হয়।

শব্দের চেয়ে নয় গুণ দ্রুতগতিতে উড়ে গিয়ে ১,০০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে এই জিরকন। শুধু এই জিরকনই নয়, আরও কয়েক ধরনের হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করছে রাশিয়া।

এরই মাত্র কয়েকদিন আগে, সেপ্টেম্বর মাসের ২৭ তারিখ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রেথিওন নামে একটি হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করে। এটি ছিল শব্দের চেয়ে পাঁচ গুণ দ্রুতগতিসম্পন্ন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, ২০১৩ সালের পর এই স্তরের কোন সমরাস্ত্রের সফল পরীক্ষা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই প্রথম চালালো।

অন্যদিকে উত্তর কোরিয়া গত কিছু দিনে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে। কিছুদিন আগেই তারা একটি হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রও পরীক্ষা করেছে, যদিও দক্ষিণ কোরিয়ার সূত্রগুলো বলছে, ওই পরীক্ষা সফল হয়নি।

নেক্সট বিগ থিং

বেশিরভাগ ক্ষেপণাস্ত্রের মাথায় একটা বোমা বা বিস্ফোরক বসানো থাকে, যাকে বলা হয় ওয়ারহেড। হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের মাথায় ওয়ারহেড হিসেবে পারমাণবিক বোমা বসানোর সুযোগ রয়েছে, ফলে এটা হতে পারে আধুনিক যুগের যুদ্ধে এক মারাত্মক অস্ত্র।

সামরিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র হতে যাচ্ছে আন্তঃমহাদেশীয় যুদ্ধের এক মোড়বদলকারী সংযোজন বা 'নেক্সট বিগ থিং'।

নিউইয়র্ক টাইমসে এক বিশ্লেষণী প্রতিবেদনে উইলিয়াম ব্রড লিখছেন, এর কারণ হলো এই মিসাইলগুলো প্রতি সেকেণ্ডে পাঁচ মাইল পর্যন্ত গতিতে ছুটতে পারবে, উপগ্রহগুলো থেকে আসা সতর্ক সংকেতকে বোকা বানাতে পারবে, একে মাঝপথে বাধা দেয়ার মত প্রতিপক্ষের কোন যন্ত্র বা ক্ষেপণাস্ত্রকেও ফাঁকি দিতে পারবে। তাই আকস্মিক আক্রমণের জন্য এগুলো হবে খুবই উপযোগী।

রয়টার্সের বিশ্লেষক হিয়নহি শিন বলেন, বায়ুমণ্ডলের ওপরের স্তরে ঘন্টায় ৩,৮৫০ মাইল গতিতে ছুটতে পারে এই হাইপারসনিক মিসাইল।

একটি ইন্টারকন্টিনেন্টাল ব্যালিস্টিক মিসাইল বা আইসিবিএম এর চেয়েও দ্রুতগতিতে চলে। কিন্তু হাইপারসনিক মিসাইলের আকৃতি ভিন্ন ধরনের হওয়ায় এটিকে আঁকাবাঁকা পথে চালনা করা সম্ভব, যা আইসিবিএম পারে না, বলেও জানান তিনি।

এই মিসাইলগুলো ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের মত নির্দিষ্ট অধিবৃত্তাকার গতিপথে চলে না, তার পক্ষে প্রতিরক্ষা ব্যূহকে এড়িয়ে এঁকেবেঁকে চলা সম্ভব, আর এগুলোকে ট্র্যাকিং বা চিহ্নিত করাও কঠিন।

হিয়নহি শিন আরও বলেন, সাধারণ ক্ষেপণাস্ত্র এবং গ্লাইড ভেহিকল বা ইঞ্জিনবিহীন বিমানের সমন্বয় ঘটিয়ে এমনভাবে এই হাইপারসনিক মিসাইল তৈরি করা হয়েছে, যাতে এটা নিক্ষেপের পর মহাশূন্যে উঠে আংশিকভাবে পৃথিবীর কক্ষপথে পৌঁছে যেতে পারবে।

সাধারণ আইসিবিএম ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের পর মহাশূন্যে উঠতে পারে, কিন্তু কক্ষপথে পৌঁছাতে পারে না।

এর নাম হলো 'ফ্র্যাকশনাল অরবিটাল বোম্বার্ডমেন্ট সিস্টেম' বা ফবস। বলা হচ্ছে, এর বিরুদ্ধে শত্রুপক্ষের সাধারণ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থা কার্যকর হবে না, এবং মোকাবিলা করার জন্য হাতে সময়ও যথেষ্ট পাওয়া যাবে না।

ব্রিটিশ আমেরিকান সিকিউরিটি ইনফরমেশন কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক পল ইঙগ্রাম বিবিসিকে বলছেন, প্রচলিত ব্যালিস্টিক মিসাইলগুলো ছোঁড়া হয় রকেটের মতো। ফলে উৎক্ষেপণ করার পর এর ট্রাজেক্টরি বা গতিপথ কি হবে তা মোটামুটি অনুমান করা যায়। লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার আগেই প্রতিপক্ষ তখন তাদের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দিয়ে এটিকে ধ্বংসের চেষ্টা করতে পারে।

কিন্তু হাইপারসনিক মিসাইল প্রযুক্তি একেবারেই ভিন্ন। এটি উৎক্ষেপণের পর খুব দ্রুত ওপরে উঠে আবার নেমে এসে আনুভূমিকভাবে বায়ুমন্ডলের মধ্যেই চলতে থাকে, গতিপথও পরিবর্তন করতে পারে। তার মানে, এটি কোন দিকে যাবে তা আগে থেকে অনুমান করা সম্ভব নয়। তাই তা মাঝপথে ধ্বংস করা প্রায় অসম্ভব।

স্নায়ুযুদ্ধের যুগ থেকেই যুক্তরাজ্য ও রাশিয়া এই ফবস নিয়ে গবেষণা করছে, আর ১৯৭০ এর দশকে এ রকম একটি পদ্ধতি মোতায়েনও করেছিল রাশিয়া। তবে ১৯৮০র দশকে তা বন্ধ করে দেয়া হয়। তখন মনে করা হচ্ছিল, সাবমেরিন থেকে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র থেকে ফবস এর অনেকগুলো সুবিধাই পাওয়া যায়।

কারণ সাবমেরিন পানির নিচে থাকায় কোথা থেকে কখন ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষিপ্ত হবে, তা প্রতিপক্ষের জানা অসম্ভব।

কে এগিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া না চীন?

জুলাই মাসে রাশিয়া প্রথমবারের মত সাবমেরিন থেকে ছোঁড়া জিরকন ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করে। প্রেসিডেন্ট পুতিন তখন বলেছিলেন যে এটি একটি নতুন প্রজন্মের মিসাইল সিস্টেম।

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র সেপ্টেম্বর মাসে যে ক্ষেপণাস্ত্রটি পরীক্ষা করে, তা ছিল আরও একটু ভিন্ন ধরনের। এটি ছিল এয়ার ব্রিদিং হাইপারসনিক ওয়েপন, যা উৎক্ষেপণের পর একটা ইঞ্জিনচালিত ক্রুজ মিসাইলের মতই বায়ুমণ্ডলের মধ্যে দিয়ে উড়ে গিয়ে তার লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে।

অন্যদিকে গত শনিবার ফিনান্সিয়াল টাইমসের রিপোর্টে বলা হয়, চীন যা উৎক্ষেপণ করেছিল তা হচ্ছে একটি রকেট এবং তার সাথে সংযুক্ত হাইপারসনিক গ্লাইড ভেহিকল বা ইঞ্জিনবিহীন উড়ন্ত যান। এটি মহাশূন্যের ভেতর দিয়ে উড়ে পৃথিবী প্রদক্ষিণ করে এবং তার পর মাটিতে থাকা লক্ষ্যবস্তুর ২৪ মাইল দূরে এসে পড়ে।

চীন যেভাবে তার ক্রমবর্ধমান সামরিক ক্ষমতা প্রদর্শন করছে, তা বিশেষভাবে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠেছে।

গত মাসেই যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনী বিষয়কমন্ত্রী ফ্রাংক কেন্ডাল বলেছিলেন, চীন এক নতুন অস্ত্র তৈরি করছে, এবং মহাশূন্য থেকে সারা বিশ্বে আঘাত হানতে পারে এমন অস্ত্র তৈরির ক্ষেত্রে বিপুল অগ্রগতি অর্জন করেছে।

অনেক বিশেষজ্ঞের সংশয় প্রকাশ

কিছু বিশেষজ্ঞ অবশ্য মনে করেন যে চীনের এই ক্ষেপণাস্ত্রটি খুব বেশি হৈচৈ করার মত নয়।

যুক্তরাষ্ট্রের জেমস মার্টিন সেন্টারের ক্ষেপণাস্ত্র বিশেষজ্ঞ জেফরি লুইস বলেন, আমেরিকার ভেতরে আঘাত হানতে পারে এমন পারমাণবিক আইসিবিএম চীনের হাতে এখনই আছে। যদিও এই গ্লাইডার একটি চমৎকার সংযোজন, কিন্তু এটা একটা পুরোনো জিনিস যা ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যূহ ভেদ করার পন্থা হিসেবে নতুন করে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।

২০১৯ সালে রাশিয়া যখন আভনগার্ড নামে অত্যাধুনিক হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করেছিল, তখন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দাবি করেছিলেন যে পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম এই মিসাইলগুলো শব্দের চেয়ে বিশগুণ বেশি গতিতে ছুটতে পারবে এবং এটা রাশিয়াকে অন্যান্য দেশের চেয়ে সামনে এগিয়ে নিয়েছে।

কিন্তু তখনও অন্য অস্ত্র বিশেষজ্ঞরা এটির কার্যকারিতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন।

এক বিবৃতিতে পেন্টাগন বলেছিল, ''অ্যাভনগার্ড মিসাইল সিস্টেমের ক্ষমতা সম্পর্কে রাশিয়ার দাবি নিয়ে তারা কোন ব্যাখ্যা বিশ্লেষণে যাবে না।''

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে যেসব দাবি করেছিলেন, তা নিয়েও যুক্তরাষ্ট্রেরই কিছু বিশেষজ্ঞ সংশয় প্রকাশ করেছেন।

নিউইয়র্ক টাইমসের এক রিপোর্টে ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি বা এমআইটি এর পদার্থবিজ্ঞানী ডেভিড রাইট বলেছেন, এসব সুপার ওয়েপন আসলে মরীচিকা মাত্র।

"এ রকম অনেক দাবি করা হয়, যেগুলো সংখ্যায় পরিণত করলে দেখা যায় যে এর বেশিরভাগই অর্থহীন।"

এই বিশেষজ্ঞদের অনেকের মতে, ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে এসব দাবি আসলে এগুলো তৈরির জন্য যে বিপুল অর্থ ব্যয় হয়, তাকে যৌক্তিকতা দেবার জন্যই করা হয়।

ওয়াশিংটনে উদ্বেগ

তবে বিশেষজ্ঞরা যাই বলুন, চীনের সাম্প্রতিকতম হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা ওয়াশিংটনে বিস্ময় ও উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।

ফিনান্সিয়াল টাইমসের রিপোর্টে বলা হয়, এ পরীক্ষায় বোঝা যায় হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির ক্ষেত্রে মার্কিন কর্মকর্তারা যতটা ধারণা করতেন, তার চেয়ে অনেক বেশি এগিয়ে গেছে চীন।

মার্কিন কংগ্রেসের একজন সিনিয়র সদস্য বলেছেন, চীন হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা করে থাকলে তা আমেরিকার জন্য সতর্কসংকেত।

সশস্ত্র বাহিনী সম্পর্কিত কংগ্রেস কমিটির রিপাবলিকান সদস্য মাইক গ্যালাহার সতর্ক করে দিয়েছেন যে ওয়াশিংটন যদি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে তার বর্তমান দৃষ্টিভঙ্গীতেই আটকে থাকে, তাহলে চীনের সাথে এই নতুন স্নায়ু যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র এক দশকের মধ্যেই হেরে যাবে।

গত সোমবার নিরস্ত্রীকরণ সংক্রান্ত মার্কিন দূত রবার্ট উড বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র অত্যন্ত উদ্বিগ্ন এবং ওয়াশিংটন এই প্রযুক্তিকে সামরিক ক্ষেত্রে ব্যবহারের ব্যাপারে অনেক দিন সক্রিয় হয়নি।

তিনি বলেন, চীন এবং রাশিয়া অত্যন্ত সক্রিয়ভাবে হাইপারসনিক প্রযুক্তির সামরিক প্রয়োগ নিয়ে কাজ করছে এবং এর অর্থ হলো, যুক্তরাষ্ট্রকে কথায় নয় কাজে এর জবাব দিতে হবে।

জেনেভায় রিপোর্টারদের মি. উড আরও জানান, কীভাবে এ প্রযুক্তি থেকে আমরা আত্মরক্ষা করতে পারবো, এমনকি চীন বা রাশিয়াও জানে না।

ফলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা, আধুনিকতম ক্ষেপণাস্ত্রের ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের জন্য প্রখম সারির সামরিক শক্তিগুলোর মধ্যে একটা প্রতিযোগিতা এখন তীব্রতর হয়ে উঠছে।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ