আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: কাশ্মীরজুড়ে এখন ভীতসন্ত্রস্ত মানুষ। সন্ত্রাসীদের হামলায় চলতি মাসে কাশ্মীরে প্রাণ হারিয়েছেন মোট ১১জন বেসামরিক লোক।
অক্টোবরের গোড়া থেকেই কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলায় একের পর এক বেসামরিক মানুষ ও অভিবাসী শ্রমিক নিহত হওয়ার ঘটনায় আতংকিত সাধারণ মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে উপত্যকা ছেড়ে পালাতে মরিয়া অভিবাসী শ্রমিকরা।
রবিবারও কুলগাম জেলার ভানপোতে বিহারের দুজন নির্মাণ শ্রমিককে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় আরও একজন মজদুর আহত হয়েছেন। এই নিয়ে চলতি মাসে মোট ১১জন বেসামরিক মানুষ কাশ্মীরে প্রাণ হারিয়েছেন।
এর আগে, বিহারি ফুসকা বিক্রেতা অরবিন্দ শাহকে শ্রীনগরে কাছ থেকে গুলি করে মারা হয়। পুলওয়ামাতে গুলিতে মারা যান উত্তরপ্রদেশ থেকে কাশ্মীরে কাঠের মিস্ত্রির কাজ করতে আসা সাগির আহমেদ। বিহারের সাসারাম থেকে আসা রূপেশ কুমার শ্রীনগরে আখরোট বেচতেন। তিনি জানান, এই পরিবেশে তার আর কাশ্মীরে থাকার সাহস নেই। জানালেন, হাতের মালটুকু বেচেই গাঁয়ে ফিরে যাবেন তিনি।
গয়া জেলার মুরারি কিষাণও আগামী সপ্তাহেই শ্রীনগর ছাড়বেন। তিনি জানালেন, প্রশাসনের পক্ষে তো সবাইকে সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব নয়। কাশ্মীর ছেড়ে যেতেই হবে। কারণ রোজগারের চেয়ে জীবনের দাম অনেক বেশি!
রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ফারুক আবদুল্লা বলছেন, কাশ্মীরীদের বদনাম করতেই ষড়যন্ত্র করে এসব খুনখারাপি চালানো হচ্ছে। যদিও ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতৃত্ব দাবি করছে এসব হত্যাকাণ্ডের পেছনে পাকিস্তানের মদদ আছে।
ফারুক আবদুল্লার কথায়, নিরপরাধ মানুষদের এভাবে মারা খুবই অনুতাপের বিষয় এবং আমার ধারণা একটা গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই করা হচ্ছে। আমি নিশ্চিত যে কাশ্মীরীদের এসব হত্যাকাণ্ডে কোনও হাত নেই-বরং কাশ্মীরীদের বদনাম করতেই এগুলো করা হচ্ছে।
প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের সঙ্গে শান্তি আলোচনার ওপর জোর দিলেও কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি কিন্তু মনে করছে এসব হত্যাকাণ্ডের পেছনে সরাসরি পাকিস্তানি মদদ আছে।
জম্মু ও কাশ্মীরে বিজেপির সভাপতি রবীন্দ্র কুমার রায়না বলেন, কাশ্মীর উপত্যকায় নিজেদের মেহনত দিয়ে যারা দুপয়সা রোজগার করছিলেন, তাদের এরকম নৃশংসভাবে হত্যা করাটা একটা জঘন্যতম অপরাধ।
আমরা নিশ্চিত, পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদীরাই এই টার্গেটেড কিলিং করছে এবং পাকিস্তানের তরফে লাগাতার এই চেষ্টাই চালানো হচ্ছে যাতে কাশ্মীরে একটা ভয় ও আতঙ্কের পরিবেশ বিরাজ করে।
-এটি