শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫ ।। ২৮ চৈত্র ১৪৩১ ।। ১৩ শাওয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
নিজেকে ইমাম মাহদী দাবি করা মাদরাসা শিক্ষক কারাগারে হারামাইনে আজ জুমার নামাজে ইমামতি করবেন যাঁরা ‘মার্চ ফর গাজা’য় অংশগ্রহণকারীদের জন্য জরুরি ৫ নির্দেশনা তালিবুল ইলমের আবশ্যকীয় পাঁচটি কাজ পাকিস্তানের সব সমস্যার পেছনে ইহুদি ষড়যন্ত্র থাকে: মাওলানা ফজলুর রহমান বাড়িতে বাবার লাশ রেখে এসএসসি পরীক্ষা দিল নাহিদ মানবতার জন্য আপনিও আসুন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে: শায়খ আহমাদুল্লাহ ইসরায়েলকে প্রতিহত করতে আন্তর্জাতিক উদ্যোগ দরকার: বিএনপি মাদরাসাছাত্রদের কর্মসংস্থানের বিষয়ে কাজ করছে এনসিপি : নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী মুসলিম রাষ্ট্রের ওপর এখন সশস্ত্র ল’ড়াই ফরজ: মুফতি তাকি উসমানি

হাদিসের মসনদে আর বসবেন না সবার প্রিয় আল্লামা ‘বাবুনগরী হুজুর’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুফতি আলী আকবর ফারুকী।।

ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে যে, আমাদের মাঝে আর আল্লামা বাবুনগরী হুজুর নাই। হ্যাঁ, সত্যিই তিনি ক্ষণস্থায়ী জিন্দেগীর সাথে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করে রফীকে আলা মুনঈমে হাকিকি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার প্রিয় পাত্র হয়েছেন। আরশের মালিক আল্লাহ যেন আমাদের প্রিয় শায়খকে জান্নাতুল ফেরদৌসের সর্বোচ্চ মাকাম দান করেন।

আল্লাহ পাক অধমকে ১৪, ১৫ইং শিক্ষাবর্ষে হাটহাজারী মাদরাসায় দাওরায়ে হাদিস পড়ার সুযোগ দান করেছেন। হাটহাজারীতে যাওয়ার আগে হাটহাজারী মাদরাসা থেকে ফারেগ হয়েছেন এমন অসংখ্য ফারেগীনদের কাছে শুনেছি, হাটহাজারীর দারুল হাদিসে সবচেয়ে জামে’ মানে তাকরীর করেন বাবুনগরী হুজুর। কথাটি যে তারা সত্যিই বলেছেন, বিষয়টি উপলদ্ধি করতে পেরেছি হাটহাজারীতে যাওয়ার পর।

দাওরায়ে হাদিসের প্রায় তিন হাজার ছাত্র যখনই শুনতে পান, এখন বাবুনগরী হুজুরের দরস হবে, সবাই গিয়ে দরসে উপস্থিত। সঙ্গে সঙ্গে দরসেগাহ হয়ে যায় কানায় কানায় পরিপূর্ণ।

তিনি অত্যন্ত সাবলীলভাবে, স্পষ্টভাষায়, ছাত্রদের বুঝার উপযোগী করে তাকরীর করতেন। ইলমে হাদিসের উপর আল্লাহ তায়ালা তাকে অগাধ জ্ঞান দান করেছিলেন। বলা যায়, ইলমে হাদীসের উপর তিনি পান্ডিত্ব অর্জন করেছিলেন।

একবারের ঘটনা, আমি হুজুরের দরসে তিরমিজি শরীফের ইবারত পড়ছিলাম। দরসের মাঝে রাবীদের জীবনী বর্ণনা করতে গিয়ে ইলমে হাদিসের অনেক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করছিলেন। আমরা ছাত্ররা এগুলো নোট করছিলাম। হুজুরের দরসের তাকরীরগুলো প্রায় সবাই লিখত।

হুজুর এক ছাত্রের দিকে খেয়াল করলেন, যখনই হুজুর হাদিসের তাকরীরের মাঝে ফিকহী আলোচনা করতেন, তখন সে তাকরীর লেখত। আর যখনই হুজুর ইলমে হাদিসের উপর আলোচনা করতেন, তখন সে আর লেখতনা। হুজুর এ ছাত্রের গতিবিধি লক্ষ্য করে খুব রাগান্বিত হলেন। আর বললেন, এ মিয়া! ইলমে হাদিসের ব্যাপারে কোন গুরুত্ব নাই...!!

এরপর হুজুর বললেন, বর্তমান সময়ে উলুমে হাদিস চর্চা করা খুবই জরুরি। বিশেষত লা-মাজহাবী গায়রে মুকাল্লীদদের প্রতিরোধ করতে এ শাস্ত্রের উপর পান্ডিত্ব অর্জন করার কোন বিকল্প নাই...!!

হুজুরের দরসের অন্যতম বৈশিষ্ট ছিলো, তার তাকরীরগুলো সব ধরণের ছাত্ররাই সহজে বুঝত। হুজুরের দরসের তাকরীরগুলো মুখস্থ করলে অনেক কিতাবের পড়া মুখস্থ হয়ে যেত। চাতখ পাখির মত সবাই হুজুরের তাকরীর মনোযোগসহ শ্রবণ করত।

বাহির থেকে কোন আলেম-উলামা কিংবা সাধারণ মানুষ হাটহাজারীতে আসলে তারাও বাবুনগরী হুজুরের দরসে বসার সৌভাগ্য লাভের চেষ্টা করতো। আমি ধন্য এমন একজন যুগশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস, মুহাক্কিক আলেমের দরসে বসতে পেরে।

লেখক: মুদাররিস, জামিআ রহমানিয়া মাদরাসা রাজশাহী


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ