শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
জুমার খুতবার আগে ব্রেন স্ট্রোক, রাতে ইন্তেকাল তরুণ ইমামের জামিয়া গহরপুরের ফুজালা ও প্রাক্তনদের আয়োজনে ‘মাহফিলে নূর’ সম্প্রীতির বাংলাদেশে অসাম্প্রদায়িক সকল অপশক্তিকে রুখে দিতে হবে: ছাত্র জমিয়ত চিন্ময়ের মুক্তি চাওয়া বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারতের উলম্ব অভিযান: রিজভী মতিঝিল থানা হেফাজতে ইসলামের কমিটি গঠন এডভোকেট হত্যার বিচার ও ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে চাঁদপুর পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ‘সংবিধানে কুরআন-সুন্নাহর সাথে সাংঘর্ষিক কোন কিছু রাখা যাবে না’ চাঁদপুর জেলা সিরাত সম্মেলন আগামীকাল, থাকছেন হেফাজত আমীর চট্টগ্রামে ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে হেফাজতের বিক্ষোভ-সমাবেশে জনস্রোত মৌলভীবাজারে আইনজীবী হত্যা ও ইসকনকে নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল

যেভাবে মুসলিম হন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিক্সনের উপদেষ্টা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ড. রবার্ট ডিকসন ক্রেন ‘হার্ভার্ড সোসাইটি অব ইন্টারন্যাশনাল ল’-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সাবেক উপ-পরিচালক ও যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতিমান রাজনীতিবিদ।

তিনি ১৯৬৩ থেকে ১৯৬৮ পর্যন্ত তত্কালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিক্সনের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। রবার্ট ক্রেন ১৯৮০ সালে ইসলাম গ্রহণ করেন এবং ফারুক আবদুল হক নাম ধারণ করেন

রবার্ট ডিকসন ক্রেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তুলনামূলক আইনি ব্যবস্থায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের পর আন্তর্জাতিক ম্যাগাজিন ‘হার্ভার্ড জার্নাল ফর ইন্টারন্যাশনাল ল’ প্রতিষ্ঠা করেন। ‘হার্ভার্ড সোসাইটি ফর ইন্টারন্যাশনাল ল’-এর প্রথম সভাপতি তিনি। ওয়াশিংটনে অবস্থিত মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণ অ্যাডভাইজারি সেন্টারে তিনি প্রায় এক দশক ধরে কর্মরত ছিল।

১৯৬১ সালে আন্তর্জাতিক স্ট্র্যাটেজিক গবেষণাকেন্দ্র প্রতিষ্ঠায় অংশগ্রহণ করেন। ১৯৬৩-৬৮ পর্যন্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিক্সনের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেন। ১৯৬৯ সালে প্রেসিডেন্ট নিক্সন তাঁকে হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের উপ-পরিচালক নিযুক্ত করেন। প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান ১৯৮১ সালে তাঁকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত নিয়োগ করেন।

প্রেসিডেন্ট নিক্সনের নির্দেশে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ‘ইসলামী মৌলবাদ’ ও ইসলাম বিষয়ক একটি দীর্ঘ প্রতিবেদন তৈরি করে। কিন্তু প্রেসিডেন্টের সময়ের অভাবে তিনি রবার্ট ক্রেনকে এ প্রতিবেদন সংক্ষিপ্ত করার দায়িত্ব দেন। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন সংক্ষিপ্ত করতে গিয়ে তিনি অভিভূত হয়ে পড়েন। ইসলাম সম্পর্কে তাদের মূল্যায়ন তাঁকে মুগ্ধ করে। এভাবে ইসলামের প্রতি তাঁর প্রাথমিক আকর্ষণ ও মুগ্ধতার শুরু।

১৯৮০ সাল থেকে সরকারের নির্দেশে তিনি বিভিন্ন ইসলামী সেমিনার ও সিম্পোজিয়ামে অংশগ্রহণ করেন। এ ছাড়া বিভিন্ন মুসলিম স্কলার ও ধর্মপ্রচারকদের সঙ্গে মতবিনিময় শুরু করেন। তাঁদের মধ্যে সুদানের প্রখ্যাত মুসলিম পণ্ডিত ড. হাসান তুরাবি অন্যতম।

এক সেমিনারে শায়খ তুরাবি ইসলামের পরিচয়মূলক দীর্ঘ বক্তব্য দেন। এরপর শায়খকে তিনি নামাজে সিজদারত অবস্থায় দেখে প্রথমে ভাবলেন, এভাবে বিনয় ও অসহায়ত্ব প্রকাশ ব্যক্তি ও মানবতার জন্য চরম অবমানাকর। কিন্তু যখনই তিনি চিন্তা করলেন, শায়খ হাসান তুরাবি তো আল্লাহর জন্য ঝুঁকেছেন, আল্লাহর দরবারে সিজদা করছেন, তখন নিশ্চিত হলেন, এটাই সঠিক কাজ।

উপরন্তু দামেস্কের অধ্যাপক রোজিয়া গারৌদির সঙ্গে সাক্ষাতে ইসলাম নিয়ে আলোচনা করেন। রোজিয়ার চিন্তাধারায় প্রভাবিত হয়ে তিনি স্থির করেন ইসলামই সব সমস্যার সমাধান। ইসলামী শরিয়তের বিধি-বিধান, সামগ্রিক, সামষ্টিক ও ব্যষ্টিক সব ক্ষেত্রে ন্যায়বিচার ও ন্যায়নীতি বিদ্যমান। তিনি বলেন, আইনের ছাত্র হিসেবে আমি যেসব আইন অধ্যয়ন করেছি, তার সব কিছু আমি ইসলামে পেয়েছি।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন বছরের অধ্যয়ন সময়ে আইনের বইগুলোতে সামগ্রিক অর্থে ‘আদালত’ বা ন্যায়বিচার-ন্যায়নীতির খোঁজ পাইনি। অথচ ইসলামী বিচারব্যবস্থা এই শব্দের (আদালত বা ন্যায়বিচারের) ওপর আবর্তিত। ইসলামের সর্বক্ষেত্রে এর ব্যাপক চর্চা আমি দেখেছি। আর তাতে মুগ্ধ হয়ে আমি ইসলাম গ্রহণ করেছি।’

একজন আইনজীবী হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে মানবরচিত আইনের অসারতা দেখে তিনি এর কারণ ও উৎস খোঁজার চেষ্টা করেছেন। গবেষণায় দেখলেন, ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে তাঁর প্রত্যাশিত সব কিছুই ইসলামে বিদ্যমান। এভাবে ইসলামের প্রতি তিনি অনুপ্রাণিত হতে থাকেন। সব শেষে ১৯৮০ সালে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন এবং ‘ফারুক আবদুল হক’ নামধারণ করেন। সে দিন থেকে ড. ফারুক আবদুল হক আমেরিকায় ইসলামের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবতে শুরু করেন। ১৯৮৬ সালের ২৯ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত দক্ষিণ আমেরিকার ইত্তেহাদে ইসলামীর ২৪তম কনফারেন্সে তিনি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবনা পেশ করেন।

ইসলাম নিয়ে পক্ষপাত ও বিদ্বেষপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গির কারণে তিনি যেভাবে পশ্চিমাদের সমালোচনা করেন, ঠিক তেমনিভাবে প্রাচ্য বা প্রতীচ্যের যেসব মুসলমান ইসলামী বিধান বোঝে না বা বোঝেও বাস্তবায়ন করে না, তাদেরও কঠোর সমালোচনা করেন। তাঁর ভাষায়, পশ্চিমে বসবাসরত বহু মুসলমান ইসলামের নিয়ম-কানুন মেনে জীবনযাপন করে না। তাই অমুসলিমরা ইসলাম সম্পর্কে ভুল ধারণা পোষণ করে।

কুয়েতের ‘আল-মুজতামা’য় প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে ইলিয়াছ আরমান

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ