আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: রাতে স্মার্টফোন চালানোর সময় অনেকেই ডার্ক মোড ফিচার ব্যবহার করেন। তারা মনে করেন ডার্ক মোড ব্যবহারে চোখের ক্ষতি কম হয়।
ডার্ক মোডের কারণে চোখে আলো কম পড়ে, ফলে আরাম লাগে। এমনকি ব্যাটারি সেভও হয়ে থাকে। অনেকেই স্মার্ট ফোনের সেটিং-এ বাই ডিফল্ট ডার্ক মোড ডিসপ্লে করে রাখেন। কিন্তু টানা ডার্ক মোডে স্মার্টফোন ব্যবহার করা চোখের পক্ষে আদৌ কতটা ভালো?
বিশেষজ্ঞদের মতে ডার্ক মোডের নীলাভ আলো চোখের পক্ষে যে সবসময় খারাপ তা কিন্তু নয়। অন্যান্য রঙের থেকে নীলাভ রং চোখের পক্ষে তুলনামূলক আরামদায়ক। বিশেষজ্ঞদের সমীক্ষা বলছে অনেকে ব্যবহারকারীই ডার্ক মোডে কাজ করে চোখে আরাম পান। ডার্ক মোডে লেখা বা ছবি স্পষ্ট দেখতে পান অনেকে।
ডার্ক মোডে কাজ করলে চোখের শুষ্ক হয়ে যাওয়ার প্রবণতাও অনেক সময় কমতে দেখা গেছে। আবার ডার্ক মোডে কাজ করলে স্মার্টফোনের ব্যাটারির আয়ু বাড়ে। অনেক্ষণ চার্জ থাকে। কিন্তু তা বলে ডার্ক মোড যে একেবারে স্বাস্থ্যকর তা হলফ করে কখনওই দাবি করেন না বিশেষজ্ঞরা। আসলে ডার্ক মোডের প্রচলন হয়ে ব্যবহারকারীকে সাময়িকভাবে প্রশান্তি দেওয়া এবং প্রযুক্তিগত কারণে।
ছানির সমস্যা: দীর্ঘদিন ধরে ডার্ক মোডে স্মার্টফোন ব্যবহার করলে তার আলো থেকে চোখের অভ্যন্তরীণ চাপ বাড়িয়ে গ্লুকোমা বা ছানি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। গ্লুকোমা সাধারণত বেশি বয়সেই হয়ে থাকে। কিন্তু অতিরিক্ত ডার্ক মোড ব্যবহারের ফলে অল্প বয়সেই ছানি হওয়ার সম্ভাবনা বাড়তে থাকে।
নিদ্রাহীনতা: অনবরত ডার্ক মোড ব্যবহার করলে কারও কারও ক্ষেত্রে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে। মস্তিষ্কের ভিতরের পিনিয়াল গ্রন্থি থেকে যে মেলাটোনিন নামের হরমোন নিঃসৃত হয় সেটি দিনের আলো, রাতের অন্ধকার অনুযায়ী মস্তিষ্ককে ঘুমের নির্দেশ পাঠায়। শরীররও সেইমতো কাজ শেষ করে ঘুমের প্রস্তুতি নেয়। কিন্তু অনেকের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, নিয়মিত ডার্ক মোড ব্যবহার করার পর চোখ ব্রেইনকে সিগন্যাল দেয় যে সে অন্ধকারেই আছে। তখন মেলাটোনিনের অসামঞ্জস্যতা দেখা দেয়। ফলে তাদের ক্ষেত্রে নিদ্রাহীনতা রোগ দেখা দেয়।
শরীরের অসুস্থ: ঘুমের সময়ের পরিবর্তন হলে শরীরে নানা অসুস্থতা দেখা দিতে পারে। শুরু হতে পারে মানসিক সমস্যা।
দেখার সমস্যা: ব্যক্তি বিশেষে চোখের অসুখ অনুযায়ী ডার্ক মোড ব্যবহার উচিত। যাদের চোখের সমস্যা রয়েছে এবং ডার্ক মোড ব্যবহারের ফলে তা বাড়ছে তাহলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।
ক্ষতিকর দিক: আসলে কোনও কিছুই অতিরিক্ত ভালো নয়। স্মার্টফোনের অত্যাধিক ব্যবহারের ফলে যেমন চোখের সমস্যা দেখা দিতে পারে তেমনই মানসিক চাপও বাড়তে পারে। সময়ের সঙ্গে এগিয়ে চলা ভালো। কিন্তু তার ফলে আধুনিকতার খারাপ দিকগুলিও জীবনে প্রবেশ করে। স্মার্টফোনের ব্যবহার যেমন সুবিধেজনক তেমনই অতিরিক্ত ব্যবহার ক্ষতির কারণ। তাই যা করবেন মাত্রা ছাড়িয়ে নয়। না আখেরে আপনারই ক্ষতি।
-এএ