আন্তর্জাতিক ডেস্ক: হাইতিতে সংঘটিত ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর ভারী বৃষ্টি ও ঝড়ের ফলে মৃতের সংখ্যা এক লাফে সাতশ’ ছাড়িয়েছে।
আজ রোববার (১৫ আগস্ট) দেশটিতে মৃতের সংখ্যা ৪০০ বেড়েছে। এর আগে সর্বশেষ ৩০৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছিল।
দেশটির কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ পত্রিকা ইন্ডিপেন্ডেন্ট অনলাইন জানিয়েছে, ভূমিকম্পের পর স্থানীয় সময় রোববার (১৫ আগস্ট) বিকাল পর্যন্ত অন্তত ৭২৪ জনের প্রাণহানির খবর মিলেছে। আহত হয়েছেন অন্তত ১ হাজার ৮০০ মানুষ।
শনিবার (১৪ আগস্ট) সকালে ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের এই দ্বীপ দেশটির পশ্চিমাঞ্চলে ৭ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। ভূমিকম্পের পর সুনামি সতর্কতা জারি করে কর্তৃপক্ষ। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কারণে এক মাসের জরুরি অবস্থা জারি করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী অ্যারিয়েল হেনরি।
টুইটারে প্রধানমন্ত্রী হেনরি বলেছেন, ‘ভয়াবহ এ ভূমিকম্পে বিভিন্ন প্রদেশে বেশ কয়েকজন প্রাণ হারিয়েছেন ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।’
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ইতোমধ্যেই রাজনৈতিক ও মানবিক সংকটে জর্জরিত ক্যারিবীয় অঞ্চলের দরিদ্র এ দেশটি ফের আরেকটি শোচনীয় ঘটনার মুখোমুখি হলো।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ (ইউএসজিএস) জানায়, হাইতির পেটিট ট্রু দে নিপ্পস শহর থেকে ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ৮ কিলোমিটার দূরে ছিল। এ ছাড়া রাজধানী পোর্ট অব প্রিন্স থেকে ১৫০ কিলোমিটার দূরে। অন্যদিকে ইউরোপীয়-ভূমধ্যসাগরীয় ভূমিকম্প কেন্দ্র (ইএমএসসি) থেকে জানানো হয়, এই অঞ্চলে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।
এই ভূমিকম্পে বহু হতাহত ও ব্যাপক বিপর্যয় ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ইউএসজিএস।
হাইতির জনসুরক্ষা অধিদপ্তরের প্রধান জেরি চান্ডার বলেন, আমি নিশ্চিত হয়েছি বহু মানুষ মারা গেছে।
এদিকে ভূকম্পন কেন্দ্রে এক বাসিন্দা ক্রিস্টেলা সেইন্ট হিলারি বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, বহু বাড়ি ঘর মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। মানুষের মৃত্যু হয়েছে। অনেক মানুষকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রায় সবাই ঘরবাড়ি ছেড়ে এখন রাস্তায় অবস্থান করছে।
এদিকে রাজধানী পোর্ট অব প্রিন্সের স্থানীয় এক সাংবাদিক এবং চিত্র পরিচালক জেরেমি ডুপিন আল জাজিরাকে জানিয়েছেন, রাজধানী থেকে ভূকম্পন কেন্দ্র চার ঘণ্টার দূরে হলেও কিছু জায়গায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। এ কারণে ভূকম্পন এলাকায় জরুরি সহায়তা পৌঁছাতে দেরি হয়ে যাবে। বর্তমানে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছে এলাকাগুলো।
তিনি আরও জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ফুটেজে পাওয়া যাচ্ছে মানুষ ধংসস্তুপের নিচে চাপা পড়ে আছে। তবে ঠিক কখন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা টিম পৌঁছাবে তা বলা সম্ভব হচ্ছে না। বর্তমানে খুবই খারাপ মুহূর্ত এখানে।
১১ বছর আগে ৭ মাত্রার এক ভূমিকম্পে হাইতিতে প্রায় ২ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এছাড়া প্রায় ৩ লাখ মানুষ ওই ভূমিকম্পে আহত হয়। ২০১০ সালের ওই ভূমিকম্পের ক্ষত এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি হাইতি। দেশটির অবকাঠামো ও অর্থনীতিও বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়ে।
-এটি