আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: ইউরোপের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় দেশ গ্রিসে দাবানল নেভাতে গিয়ে দুর্ঘটনায় বিধ্বস্ত হয়েছে দেশটির ফায়ার সার্ভিসের একটি পেজেটেল উড়োজাহাজ। বিমানটি ধ্বংস হলেও এতে কোনো ধরনের হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে জানা গেছে।
রবিবার (৮ আগস্ট) দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় এভিয়া দ্বীপের উত্তরাংশের বিস্তৃত পাইন বনে দাবানল দেখা দিয়েছে উল্লেখ করে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা। তারা জানিয়েছেন, জোর বাতাসের প্রভাবে তা ছড়িয়ে পড়ে। এরপর ক্রমশ তা লোকালয়ের দিকে এগিয়ে আসতে শুরু করে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অগ্নিনির্বাপক গ্যাস বোঝাই উড়োজাহাজটি ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছিল। তখনই আগুন নেভাতে গিয়ে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। যদিও সেই উড়োজাহাজের পাইলট ও সহ পাইলট বর্তমানে অক্ষত আছেন।
ভয়াবহ সেই দুর্ঘটনার পরপরই ফায়ার সার্ভিসের অন্যান্য কর্মীরা তাদের নিরাপদ স্থানে স্থানান্তর করতে সক্ষম হয়েছেন বলে এএফপিকে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
গ্রিসের বেসামরিক সুরক্ষা বিষয়ক উপমন্ত্রী নিকোস হার্দালিয়াস এএফপিকে বলেন, জোর বাতাসের কারণে দাবানল বনাঞ্চল থেকে সমুদ্রতীরবর্তী গ্রামসমূহের দিকে এগিয়ে আসছে। যদিও গ্রামগুলোর বাসিন্দাদের এরই মধ্যে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
হার্দালিয়াস বলেছিলেন, এভিয়ার উত্তর ও দক্ষিণে দুটি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন রয়েছে। কর্মীরা বিরামহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। দ্বীপটির বাসিন্দাদের আপাতত কোনো প্রাণহানির শঙ্কা নেই।
তার মতে, আমরা একটি কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি এবং কবে নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে তা কেউই জানে না। যদিও দাবানলকে এখন পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি।
বিশ্লেষকদের মতে, স্মরণকালের ভয়াবহতম তাপদাহে বিপর্যস্ত ভূমধ্যসাগরীয় দেশ গ্রিস ও তুরস্কে সম্প্রতি দাবানল দেখা দিয়েছে। প্রাকৃতিক এই দুর্যোগের প্রভাবে গত দু’সপ্তাহ ধরে দেশ দুটির বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চলছে।
এরই মধ্যে গ্রিসে দুইজন এবং তুরস্কে আটজনের প্রাণহানি ঘটেছে। এছাড়া গেল ১৪ দিনে দেশ দুটির কয়েকশ মানুষ আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
উল্লেখ্য, চলতি সপ্তাহের শুরুতে তুরস্কে বৃষ্টি হওয়ায় সেখানকার পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। যদিও এখনো তাপদাহ ও দাবানলে পুড়ছে গ্রিস।
আন্তর্জাতিক জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, দ্রুতগতিতে আবহাওয়ার পরিবর্তন ও তার প্রভাবে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে সম্প্রতি যেসব প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা যাচ্ছে। তুরস্ক ও গ্রিসের সাম্প্রতিক তাপদাহ-দাবানল মূলত তারই একটি অংশ।
সূত্র: এএফপি
এনটি